ট্রাম্প কি আসলেই ৭ যুদ্ধ থামিয়েছেন, নাকি শুধুই গলাবাজি?

5 hours ago 4

ট্রাম্প কি আসলেই ৭ যুদ্ধ থামিয়েছেন, নাকি শুধুই গলাবাজি করছেন? এই প্রশ্ন এখন অনেকের মনে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট সম্প্রতি দাবি করেছেন, তিনি এ পর্যন্ত অন্তত সাতটি যুদ্ধ বন্ধ করেছেন এবং এজন্য তার সাতটি নোবেল শান্তি পুরস্কার পাওয়া উচিত।

হোয়াইট হাউজ জানিয়েছে, ট্রাম্প যেসব সংঘাতের কথা বলছেন তা হলো— ইরান-ইসরায়েল, রুয়ান্ডা-কঙ্গো, আর্মেনিয়া-আজারবাইজান, থাইল্যান্ড-কাম্বোডিয়া, ভারত-পাকিস্তান, মিশর-ইথিওপিয়া এবং সার্বিয়া-কসোভো।

চলুন জেনে নেওয়া যাক এসব দেশের মধ্যে কি আসলেই যুদ্ধ বন্ধ হয়েছে, আর হলেও তাতে ট্রাম্পের অবদান কী ছিল-

ইরান-ইসরায়েল

গত জুনে ইসরায়েল যখন ইরানের বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা চালায়, তখন ১২ দিনের সংঘাতে শতাধিক মানুষ নিহত হন। যুক্তরাষ্ট্র ও কাতারের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি হয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ট্রাম্প এক্ষেত্রে কিছুটা ভূমিকা রাখলেও দুই দেশের দ্বন্দ্ব এখনো অমীমাংসিত।

রুয়ান্ডা-কঙ্গো

গত জুনে ওয়াশিংটনে বৈঠকের পর দুই দেশ শান্তিচুক্তিতে সই করে। কিন্তু মানবাধিকার সংস্থাগুলোর অভিযোগ, পরের মাসেই কঙ্গোতে ১৪০ জন বেসামরিক নাগরিককে হত্যা করেছে বিদ্রোহীরা। ফলে সহিংসতা পুরোপুরি থামেনি।

আর্মেনিয়া-আজারবাইজান

কারাবাখ অঞ্চল নিয়ে দীর্ঘদিনের দ্বন্দ্ব কমাতে ট্রাম্প প্রশাসন আলোচনায় ভূমিকা রাখে। গত আগস্টে চুক্তি হলেও সেটি এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে অনুমোদিত হয়নি। আর্মেনিয়ার সংবিধান পরিবর্তন নিয়ে জটিলতা রয়ে গেছে।

থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া

জুলাইয়ের শেষের দিকে সীমান্ত সংঘর্ষে কয়েক ডজন মানুষ নিহত হওয়ার পর দুই দেশ যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়। ট্রাম্প দাবি করেন, তিনি বাণিজ্যচাপ প্রয়োগ করে উভয় পক্ষকে রাজি করান। তবে থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়ার সীমান্ত বিরোধ এখনো মেটেনি।

ভারত-পাকিস্তান

গত মে মাসে কয়েক দিন পাল্টাপাল্টি ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলার পর ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধবিরতি হয়। পাকিস্তান ট্রাম্পকে কৃতিত্ব দিলেও ভারত বলেছে, তাদের চাপেই এ সমঝোতা হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, দ্বন্দ্ব এখনো অমীমাংসিত।

মিশর-ইথিওপিয়া

নীল নদের পানিবণ্টন নিয়ে দুই দেশের বিরোধে ট্রাম্প দাবি করেছেন, তিনি শান্তি এনেছেন। কিন্তু কোনো আনুষ্ঠানিক চুক্তি হয়নি। ইথিওপিয়া সেপ্টেম্বরেই বাঁধ উদ্বোধনের পরিকল্পনা করছে, আর মিশর বলছে এতে তাদের পানিপ্রবাহ কমবে এবং এটি থামাতে প্রয়োজনে তারা যুদ্ধে যাবে।

সার্বিয়া-কসোভো

২০২০ সালে দেশ দুটির মধ্যে অর্থনৈতিক সম্পর্ক স্বাভাবিক করার চুক্তি করিয়েছিলেন ট্রাম্প। তবে সেই উদ্যোগ থমকে গেছে। ইউরোপীয় নেতাদের আলোচনায়ও এখনো বড় কোনো অগ্রগতি হয়নি।

অর্থাৎ, এসব ঘটনায় কিছু ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র সীমিত ভূমিকা রাখলেও বেশিরভাগ সংঘাত এখনো চলমান। তাই ট্রাম্প যেভাবে দাবি করছেন যে তিনি সাতটি যুদ্ধ বন্ধ করেছেন, তা বাস্তবতার সঙ্গে মেলে না।

সূত্র: সিবিএস নিউজ
কেএএ/

Read Entire Article