যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের পর রাশিয়া ট্রাম্পের সংযত আচরণের প্রশংসা করেছে।
রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা বলেছেন, জেলেনস্কির ঔদ্ধত্য সত্ত্বেও ট্রাম্প তাকে শারীরিকভাবে আঘাত না করে সংযমের পরিচয় দিয়েছেন, যা বিস্ময়কর।
শনিবার (১ মার্চ) রুশ সংবাদমাধ্যম মস্কো টাইমসের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
জাখারোভার প্রতিক্রিয়া
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টেলিগ্রামে দেওয়া এক পোস্টে জাখারোভা বলেন, জেলেনস্কি বৈঠকে যে ধরনের ঔদ্ধত্য দেখিয়েছেন, তাতে তার গায়ে হাত তোলা থেকে বিরত থেকে ট্রাম্প আসলে অসাধারণ সংযমের পরিচয় দিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, আমি মনে করি, জেলেনস্কি এ পর্যন্ত যত মিথ্যা বলেছেন, তার মধ্যে সবচেয়ে বড় মিথ্যাটি হলো ২০২২ সালে যুদ্ধ শুরুর সময় কিয়েভ একা ছিল এবং কেউ তার পাশে ছিল না।
মেদভেদেভের কঠোর প্রতিক্রিয়া
রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট এবং রুশ নিরাপত্তা পরিষদের উপপ্রধান দিমিত্রি মেদভেদেভ এ বিষয়ে আরও কঠোর প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।
টেলিগ্রামে দেওয়া এক পোস্টে তিনি বলেন, এই প্রথম ট্রাম্প ওই ‘কোকেন ক্লাউন’ (জেলেনস্কি)-এর মুখের ওপর সত্যটা বলেছেন। ট্রাম্প স্পষ্ট করে দিয়েছেন, কিয়েভ তৃতীয় এখন বিশ্বযুদ্ধ নিয়ে খেলছে।
জেলেনস্কিকে কটাক্ষ করে মেদভেদেভ আরও বলেন, এই অকৃতজ্ঞ শূকরটি তার খামারের মালিকদের (পশ্চিমা মিত্রদের) হাতে থাপ্পড় খেয়েছে। তবে এটাই যথেষ্ট নয়। আমাদের অবশ্যই এই ‘নাৎসি মেশিনকে’ সহায়তা প্রদান বন্ধ করতে হবে।
ট্রাম্প-জেলেনস্কি বৈঠকে কী হয়েছিল?
শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে এক বৈঠকে ট্রাম্প ও জেলেনস্কির মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়। আলোচনার মূল বিষয় ছিল ইউক্রেনের খনিজ সম্পদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণসংক্রান্ত একটি চুক্তি, যা শেষ পর্যন্ত স্বাক্ষরিত হয়নি।
বৈঠকের পর নির্ধারিত যৌথ সংবাদ সম্মেলন বাতিল করা হয় এবং হোয়াইট হাউস থেকে জেলেনস্কিকে দ্রুত প্রস্থান করতে বলা হয়।
রাশিয়া-যুক্তরাষ্ট্র বৈঠকের প্রেক্ষাপট
প্রসঙ্গত, দিমিত্রি মেদভেদেভ সম্প্রতি সৌদি আরবে অনুষ্ঠিত রাশিয়া-যুক্তরাষ্ট্র বৈঠকে অংশ নিয়েছিলেন। ২০২২ সালে ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের পর এটিই ছিল দুই দেশের মধ্যে প্রথম আনুষ্ঠানিক আলোচনা।
বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্প ও জেলেনস্কির মধ্যকার এই বিরোধের ফলে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের সম্পর্ক নতুন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে, যা রাশিয়ার জন্য কৌশলগত সুবিধা বয়ে আনবে।