মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের গ্রিনল্যান্ড কেনার প্রস্তাব কোনো রসিকতা নয়। এটিকে জাতীয় স্বার্থের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ একটি গুরুতর পদক্ষেপ বলে মন্তব্য করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। তিনি এক সাক্ষাৎকারে গ্রিনল্যান্ড মার্কিন অধিভুক্ত করার ইচ্ছাটি গুরুতর বলে জোর দেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেন, এটি কোনো রসিকতা নয়... এটি জমি অধিগ্রহণের বিষয়েও নয়। এটি আমাদের জাতীয় স্বার্থে এবং এর সমাধান করা দরকার। বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) সাংবাদিক মেগিন কেলির সিরিয়াসএক্সএম শোতে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রুবিও এসব বলেন।
তিনি বলেন, ট্রাম্প গ্রিনল্যান্ড অধিগ্রহণের চেষ্টা চালাতে চান, যা বর্তমানে ডেনমার্কের একটি স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল। প্রেসিডেন্ট তার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন, অর্থাৎ এটি কিনে নিতে চান তিনি।
শীর্ষ মার্কিন কূটনীতিক এ ধরনের প্রস্তাব প্রকাশ্যে আলোচনার সংবেদনশীলতা স্বীকার করে বলেছেন, আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক চ্যানেলের মাধ্যমে আলোচনা আরও ভালোভাবে পরিচালনা করা যেতে পারে। তিনি বলেন, এই ধরনের কিছু কীভাবে করা হয়... সম্ভবত উপযুক্ত ফোরামে তা আরও ভালোভাবে করা হয়। এটি প্রকাশ্যে করলে অন্য পক্ষ অভ্যন্তরীণভাবে কঠিন পরিস্থিতিতে পড়ে।
গ্রিনল্যান্ড ১৯৫৩ সাল পর্যন্ত ডেনিশ উপনিবেশ ছিল। বর্তমানে এটি ডেনমার্কের একটি স্ব-শাসিত অঞ্চল। কৌশলগত অবস্থান এবং বিশাল খনিজ সম্পদের কারণে এটির প্রতি লোভাতুর হন ট্রাম্প।
তবে গ্রিনল্যান্ড বিক্রির জন্য নয় বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী মিউট এগেদে। জানুয়ারির প্রথম দিকে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বা ডেনমার্কের অধীনে যেতে চায় না গ্রিনল্যান্ড। এটি আমাদের, গ্রিনল্যান্ডিক জনগণের জন্য।
যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মন্তব্যের পর এই প্রতিক্রিয়া জানান তিনি। ট্রাম্প গত ডিসেম্বর থেকে বারবার গ্রিনল্যান্ডের ‘মালিকানা ও নিয়ন্ত্রণ’ পাওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করে আসছেন, যা বিশ্বব্যাপী বিতর্ক সৃষ্টি করে।
প্রধানমন্ত্রী এগেদে আরও বলেন, আমাদের স্বাধীনতা ও নিজস্ব পরিচয়ে গর্ব। আমরা ড্যানিশ বা আমেরিকান হতে চাই না, গ্রিনল্যান্ডিক হতে চাই। তিনি আরও বলেন, ডেনমার্কের সঙ্গে সম্পর্ক অটুট থাকবে এবং কোনো ধরনের বিচ্ছিন্নতার পরিকল্পনা নেই।
এদিকে বিতর্কের জেরে ডেনমার্ক গ্রিনল্যান্ডের সুরক্ষা জোরদারের জন্য সামরিক সক্ষমতা বাড়ানোর পরিকল্পনা নিয়েছে। দ্বীপটির প্রতিরক্ষা ব্যয় বাড়ানোর পাশাপাশি, দুটি নতুন টহল জাহাজ ও কুকুরের স্লেজগাড়ি ব্যবহার করে সীমান্ত সুরক্ষিত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
গ্রিনল্যান্ডে মার্কিন সামরিক ঘাঁটি রয়েছে। এটি উত্তর মেরুর গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত অবস্থানে অবস্থিত। যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তার জন্য এ দ্বীপ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে, ট্রাম্পের বারবার দাবি সত্ত্বেও গ্রিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী স্পষ্ট জানিয়েছেন, তাদের স্বাধিকার এবং স্বাধীনতা রক্ষায় তারা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।