ট্রাম্পের সঙ্গে সমঝোতায় ইরানের প্রস্তুতি, সতর্কবার্তাও স্পষ্ট

2 months ago 68

পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় আপসের সম্ভাবনার ইঙ্গিত দিয়েছে ইরান। তবে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ ইস্যুতে কোনো ছাড় দেবে না বলেই সাফ জানিয়ে দিয়েছে তেহরান। 

সোমবার (২৬ মে) সিএনএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এসমাইল বাঘায়ি এ অবস্থান তুলে ধরেন।

বাঘায়ি বলেন, যদি যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশ্য হয়- ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি অস্ত্রায়নে পরিণত না হয়- তাহলে আমরা সহজেই একটি সমঝোতায় পৌঁছতে পারি। তবে তিনি এও স্পষ্ট করেন, শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক শক্তির অধিকার থেকে ইরান একচুলও সরে আসবে না।

সিএনএনের প্রশ্নের উত্তরে বাঘায়ি জানান, আপসের বহু পথ রয়েছে, তবে বিস্তারিত কিছু বলেননি। তিনি বলেন, যদি লক্ষ্য হয় ইরানিদের শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক শক্তির অধিকার কেড়ে নেওয়া, তাহলে সেটি হবে চরম সমস্যাজনক। এমন হলে পুরো আলোচনা প্রক্রিয়াই হুমকির মুখে পড়বে।

শুক্রবার রোমে যুক্তরাষ্ট্র-ইরান পঞ্চম দফা আলোচনার পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রোববার বলেন, আলোচনায় অগ্রগতি হয়েছে বলে তিনি আশাবাদী। আমরা গতকাল ও আজ ইরানের সঙ্গে খুব ভালো আলোচনা করেছি। দেখি কী হয়। তবে আমি মনে করি, ইরান ইস্যুতে ভালো কিছু হতে পারে, বলেন ট্রাম্প।

ইরানের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি এ দফার আলোচনাকে ‘সবচেয়ে পেশাদার একটি রাউন্ড’ বলে অভিহিত করেন, তবে সতর্ক করে বলেন- মূল বিষয়গুলো এত জটিল যে, মাত্র দুই-তিনটি বৈঠকে সেগুলো সমাধান সম্ভব নয়।

এদিকে, ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ বন্ধের বিষয়ে ট্রাম্প প্রশাসন দৃঢ় অবস্থানে থাকলেও বাঘায়ি জানান, আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদের আচরণে কিছুটা নমনীয়তা দেখা যাচ্ছে। তিনি বলেন, যেহেতু আমরা এখনো আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি, এটা বোঝা যায় যুক্তরাষ্ট্রও বুঝতে পেরেছে, শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক শক্তির অধিকার ইরান কখনো ছাড়বে না।

জাতিসংঘের পারমাণবিক পর্যবেক্ষণ সংস্থা আইএইএর প্রধান রাফায়েল গ্রোসি গত মার্চে জানান, তিন মাসের ব্যবধানে ইরানের সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের মজুত ৫০ শতাংশ বেড়েছে। তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ইরানই একমাত্র অ-পরমাণু অস্ত্রধারী দেশ, যারা এ স্তরে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করছে।

তবে আশার আলো এখনো রয়েছে। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনি আলোচনার সম্ভাবনা খারিজ করে দিলেও পরোক্ষভাবে যুক্তরাষ্ট্রকে কটাক্ষ করেন। তিনি বলেন, বোকামি কথা না বলাই ভালো। যদিও মুখপাত্র বাঘায়ি আশাবাদী, ইরান-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ‘উইন-উইন’ সমঝোতা সম্ভব।

তিনি বলেন, “যদি সত্যিকারের ইচ্ছা থাকে, তাহলে পথও থাকবে। শুধু একটি নয়, অনেক পথ রয়েছে।”

সিএনএনের বরাতে জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্র নতুন কিছু গোয়েন্দা তথ্য পেয়েছে, যা বলছে- ইসরায়েল ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে, এমনকি যখন ট্রাম্প প্রশাসন কূটনৈতিক সমঝোতার পথ অনুসরণ করছে তখনো।

এ বিষয়ে বাঘায়ির হুঁশিয়ারি, ইরানিরা কোনো ধরনের চাপ মেনে নেবে না। যদি আমাদের হুমকি দেওয়া হয়, তাহলে পুরো জাতি এক কণ্ঠে জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষায় প্রতিরোধ গড়ে তুলবে।

Read Entire Article