মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগরে ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ৬৫ লাখ টাকা ডাকাতির ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ৫ সদস্যসহ ৭ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে ঢাকার ডিবি পুলিশের দুজন ও র্যাবের তিনজন সদস্য রয়েছেন।
শনিবার (৮ নভেম্বর) দুপুর ও দিনগত রাতে মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর ও ঢাকার সাভার থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
মুন্সিগঞ্জ পুলিশ সুপার মুহাম্মদ সামসুল আলম সরকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, গ্রেফতারদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মধ্যবাড্ডা থেকে ডাকাতি হওয়া টাকার মধ্যে ৩৫ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। জব্দ করা হয়েছে ঘটনায় ব্যবহৃত মাইক্রোবাস। র্যাব ও ডিবি সদস্যদের বাইরে গ্রেফতার অপর দুইজন হলেন মাইক্রোবাসচালক ও টাকা গচ্ছিত রাখা বাড়ির মালিক।
তিনি আরও জানান, গ্রেফতারদের মধ্যে ৪ জন পুলিশ হেফাজতে ও র্যাব সদস্য দুজন সেনাসদস্য হওয়ায় তারা সেনাবাহিনীর হেফাজতে রয়েছেন। তবে প্রাথমিকভাবে তাদের নাম পরিচয় জানাননি তিনি।
এর আগে শুক্রবার (৭ নভেম্বর) সকালে মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার রাঢ়ীখাল ইউনিয়নের তিন দোকান এলাকায় এ ডাকাতির ঘটনা ঘটে। পরদিন শনিবার শ্রীনগর থানায় মামলা হয়। ভুক্তভোগী সিঙ্গাপুর প্রবাসী আকাশ অসীম (৪৮) এ মামলা করেন। তিনি ঢাকার দোহার উপজেলার পালামগঞ্জ এলাকার মৃত অনিল চন্দ্র দাসের ছেলে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী আকাশ অসীম ও তার বড় ভাই বিমল চন্দ্র দাস হরি (৫৬) স্থানীয়ভাবে ভাঙারি সোনা ক্রয়-বিক্রয়ের ব্যবসা করে আসছিলেন। গত বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) তারা মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর বাজারের ‘শ্রীনগর স্বর্ণালয়’ নামের দোকানদার রাজীব দাসের কাছে ২১ ক্যারেটের ৩৯ ভরি সোনা বিক্রি করেন। পরদিন শুক্রবার ভোরে ওই বিক্রির ৬৫ লাখ টাকা নগদ গ্রহণের পর সিএনজিচালিত অটোরিকশায় দোহার উপজেলার জয়পাড়া এলাকার উদ্দেশ্যে রওনা হন। পথে সকাল ৭টার দিকে মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার রাঢ়ীখাল ইউনিয়নের তিন দোকান বাজার এলাকায় পৌঁছলে নম্বরবিহীন একটি সাদা মাইক্রোবাস তাদের অটোরিকশার গতিরোধ করে। গাড়ি থেকে নেমে ৮-৯ জন নিজেদের ডিবি পুলিশ পরিচয় দেন ও বলেন, তাদের নামে মামলা রয়েছে।
এজাহারে বলা হয়, হামলাকারীদের একজনের গায়ে ‘ডিবি’ লেখা জ্যাকেট ছিল ও কোমরে অস্ত্র ঝুলছিল। তারা আইডি কার্ড দেখতে চাইলে ওই ব্যক্তি ও তার সহযোগীরা দুই ভাইকে এলোপাতাড়ি মারধর করে। একপর্যায়ে তাদের কাছ থেকে সোনা বিক্রির ৬৫ লাখ টাকার ব্যাগটি ছিনিয়ে নেয় ও দুজনের হাতকড়া পরিয়ে হাইয়েস মাইক্রোবাসে তুলে নেয়।
অভিযোগে আরও বলা হয়, হামলাকারীরা আকাশ অসীমের কাছ থেকে একটি ৩০ হাজার টাকা মূল্যের মোবাইল ও তার ভাইয়ের কাছ থেকে একটি ২০ হাজার টাকা মূল্যের মোবাইল ছিনিয়ে নেয়। এরপর আকাশ অসীমকে পদ্মা সেতুর উত্তর প্রান্তের পুরাতন ফেরিঘাটে ফেলে দেয় ও তার ভাইকে নিয়ে মাওয়ার দিকে চলে যায়। প্রায় ১০-১৫ মিনিট পর বিমল চন্দ্র দাসকেও পদ্মা সেতু টোলপ্লাজার কাছে ফেলে যায় তারা।
অভিযুক্তদের বয়স আনুমানিক ২৫-৪৫ বছরের মধ্যে সবাই স্থানীয় উপভাষায় কথা বলছিল বলে জানান ভুক্তভোগী।
এমএন/জেআইএম

6 hours ago
4









English (US) ·