ডিবি পরিচয়ে ইউপি চেয়ারম্যানকে অপহরণ, মুক্তিপণ দাবি কোটি টাকা

2 days ago 7

ঢাকা জেলার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ইকুরিয়া থেকে যাত্রীবাহী বাস থামিয়ে পটুয়াখালীর মৌকরন ইউপি চেয়ারম্যান কাজী রাইসুল ইসলাম ওরফে সেলিমকে (৪৫) অপহরণের ঘটনায় পাঁচ অপহরণকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ সময় অপহৃত ইউপি চেয়ারম্যানকে উদ্ধার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।

গ্রেফতাররা হলেন- মোহাম্মদ ফরহাদ (৩৪), তৌফিক রাহাত (২০), রিপন মাহমুদ নয়ন (২৭), মো. আমির হোসেন (৬৫) ও মোহাম্মদ দিদার (২৫)।

বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) দুপুরে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার দোলেস্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকায় অভিযান চালিয়ে আহত অবস্থায় ইউপি চেয়ারম্যান কাজী রাইসুল ইসলাম ওরফে সেলিমকে উদ্ধার করা হয়। পাশাপাশি দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে আসামিদের গ্রেফতার করা হয়।

ডিবি জানায়, অপহরণকারীরা ইউপি চেয়ারম্যান কাজী রাইসুল ইসলাম ওরফে সেলিমকে অপহরণ করে কোটি টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। এক লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায় করে অপহরণকারীরা।

এদিন সন্ধ্যায় ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিবি মিরপুরের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. মিজানুর রহমান।

ডিবি পরিচয়ে ইউপি চেয়ারম্যানকে অপহরণ, মুক্তিপণ দাবি কোটি টাকা

তিনি বলেন, কাজী রাইসুল ইসলাম ওরফে সেলিম গত ৩১ ডিসেম্বর রাত সাড়ে ১১টার দিকে পটুয়াখালী থেকে গ্রিন লাইন পরিবহনের একটি বাসে করে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেয়। ১ জানুয়ারি সকাল ৬টার দিকে সে তার স্ত্রীকে ফোন করে জানায়, তিনি যে বাসে এসেছেন বাসটি দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ইকুরিয়া বিআরটিএর সামনে এলে অজ্ঞাতনামা ১৫/২০ জন লোক বাসে উঠে। এরপর তারা বাসচালক, হেলপার ও অন্যান্য যাত্রীদের ভয়ভীতি দেখিয়ে সেলিমকে জোর করে বাস থেকে নামিয়ে একটি প্রাইভেটকারে করে অজ্ঞাতনামা স্থানে নিয়ে আটকে রাখে।

অপহরণকারীদের একজন তার স্ত্রীকে ফোন দিয়ে এক কোটি টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। মুক্তিপণ না দিলে তার স্বামীকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। এরপর থেকে অপহৃত ইউপি চেয়ারম্যানের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

গোয়েন্দা মিরপুর বিভাগের মিজানুর রহমান আরও বলেন, এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর স্ত্রী অপহরণের বিষয়টি ডিবি পুলিশকে জানালে তথ্যপ্রযুক্তি ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অপহরণকারীদের শনাক্ত করে ডিবি। এরপর বৃহস্পতিবার দুপুরে অভিযান চালিয়ে অপহৃত কাজী রাইসুল ইসলাম ওরফে সেলিমকে উদ্ধার করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার ফরহাদ গোয়েন্দা পুলিশকে জানায়, গত ৩১ ডিসেম্বর রাত দেড়টার দিকে অপহরণকারী চক্রের সদস্য পান্নু ফোন দিয়ে তাকে ইকুরিয়া আসতে বলে। পান্নুর ফোন পেয়ে ফরহাদসহ তৌফিক রাহাত ও রিপন মাহমুদ নয়ন ইকুরিয়া যায়। তারা এসে দেখে একজন লোককে গ্রিন লাইন বাস থেকে পান্নুসহ ১৫/২০ জন টেনেহিঁচড়ে নামাচ্ছে। পান্নুর কথামতো ফরহাদসহ আরও ১৫/২০ জন ইউপি চেয়ারম্যান সেলিমকে একটি প্রাইভেটকারে উঠায়। প্রাইভেটকারে করে হাসনাবাদে যাওয়ার সময় পথিমধ্যে ফরহাদকে নামিয়ে দেয়।

গ্রেফতার আমির হোসেন জানায়, পান্নু শেখের কথামতো তার ভবনের দ্বিতীয়তলার একটি কক্ষে ইউপি চেয়ারম্যানকে আটকে রাখা হয়। অপহৃত কাজী রাইসুল ইসলাম ওরফে সেলিমের পরিবার থেকে এক কোটি টাকা মুক্তিপণ দাবি করে অপহরণকারীরা। পরবর্তীতে তারা বিভিন্ন বিকাশ নম্বরের মাধ্যমে এক লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায় করে।

গোয়েন্দা-মিরপুর বিভাগের ডিসি জানান, অপহরণের পর কাজী রাইসুল ইসলাম সেলিমকে অপহরণকারীরা দুই রাত আটকে রেখে তাকে অমানুষিক শারীরিক নির্যাতন করে।

টিটি/এমআরএম/জেআইএম

Read Entire Article