সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে অধিকাংশ সবজির দাম কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত কমেছে। এতে সবজির দামে স্বস্তি না ফিরলেও নতুন করে অস্বস্তিও নেই। অন্যদিকে, সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে ফার্মের মুরগির ডিমের দাম ডজনে ১০ টাকা বেড়ে খুচরা দোকানে বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়।
তবে সয়াবিন তেলের দাম লিটারপ্রতি ৬ টাকা বাড়ানোর ঘোষণা দিলেও ভোক্তাপর্যায়ে ব্যবসায়ীরা এখনো দাম বাড়াতে পারেননি। কারণ, সরকার তেলের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব অনুমোদন করেনি।
শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) রাজধানীর সেগুনবাগিচা, শান্তিনগর, রামপুরা ও মালিবাগসহ বিভিন্ন এলকার বাজার ঘুরে এমন তথ্য পাওয়া যায়।
বিক্রেতারা বলছেন, সবজির দাম আগামী ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যে আরও কমবে। কারণ বাজারে শীতের আগাম সবজি আসতে শুরু করেছে। বিশেষ করে শিম ও ফুলকপির মতো শীতকালীন সবজিগুলো বাজারে সরবরাহ বাড়লেই দাম কমে আসবে।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, আলু ও পেঁপের দাম এখন বেশ কম। রামপুরা বাজারের সামনে একটি ভ্যানে ৬ কেজি আলু বিক্রি হচ্ছিল ১০০ টাকায়। বাজারের ভেতরে আলু কিনতে কেজিপ্রতি ২০ থেকে ২৫ টাকার বেশি গুনতে হচ্ছে না। একইভাবে ২০-৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে পেঁপে।
পটলের দাম আগের মতোই প্রতি কেজি ৭০-৮০ টাকায় রয়েছে। কিছুটা কমেছে বেগুনের দাম। বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৮০-১০০ টাকায়। যা গত সপ্তাহেও ছিল ১২০-১৬০ টাকা। মুলা, শশা, কচুর মুখিসহ বেশ কিছু সবজি বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকা কেজি দরে।
কমেছে কাঁচা মরিচের দামও। প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ ১২০-১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহ পর্যন্ত ১৬০ টাকার নিচে কাঁচা মরিচ বিক্রি হয়নি।
আরও পড়ুন
লিটারে ৬ টাকা বাড়লো সয়াবিন তেলের দাম
বাজারে শীতকালীন আগাম সবজি শিম এখনো সাধারণ ক্রেতার নাগালের বাইরে। বিক্রি হচ্ছে ২০০-২৬০ টাকা কেজি। ঢ্যাঁড়স, ঝিঙে, কইডা, কাকরোলসহ বেশ কিছু সবজি বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকা কেজি দরে। বাজারে নতুন আসা বরবটি এখনো ১০০ টাকা কেজি।
সবজি বিক্রেতা জুবায়ের আলী বলেন, সবজির দাম চলতি সপ্তাহে নতুন করে বাড়েনি। কেজিপ্রতি ১০-২০ টাকা কমেছে। নতুন করে কোনো সমস্যা না হলে সবজির দাম আর বাড়বে না। বরং ধীরে ধীরে শীতের সবজি এলে দাম কমবে।
রাজধানীর বাজারে চলতি সপ্তাহে ক্রেতার বড় শঙ্কা ছিল ভোজ্যতেলের দাম নিয়ে। মিলমালিকরা ভোজ্যতেলের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দিলেও শেষ পর্যন্ত তা কার্যকর করতে পারেননি তারা। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বাধায় বাজারে ভোজ্যতেলের দাম আগের মতোই রয়েছে। মিলমালিকরা প্রতি লিটার সয়াবিন তেল ৬ টাকা এবং পাম তেল ১৩ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব করেছিল।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, সয়াবানি তেলের দুই লিটারের বোতল বিক্রি হচ্ছে ৩৭৫-৩৭৮ টাকা। এ দাম আগেও ছিল। এছাড়া পাঁচ লিটারের বোতল বিক্রি হচ্ছে ৯২০-৯২২ টাকা।
বাজারে খোলা সয়াবিন তেলের দামও আগের মতোই রয়েছে। প্রতি লিটার ১৮৫-১৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খোলা পাম তেল বিক্রি হচ্ছে ১৭০ টাকা লিটার।
সেগুনবাগিচা বাজারের মুদি ব্যবসায়ী মো. সিফাত বলেন, ভোজ্যতেলের দাম বাড়বে এমন খবর শুনেছি। ডিলার প্রতিনিধিরাও জানিয়েছেন দাম বাড়বে। তবে এখনো বাড়েনি। সকালে ভোক্তা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা এসে খোঁজ নিয়ে গেছেন। তারা দাম এবং সরবরাহের অবস্থা জেনে গেছেন।
ভোজ্যতেল ছাড়াও চিনি, ডাল, আদা রসুনসহ অন্যান্য পণ্যের দামও স্থির রয়েছে। যদিও ডালের দাম গত দুই সপ্তাহে বেড়েছে। বাজারে চিনি বিক্রি হচ্ছে ১০৫-১১০ টাকা কেজি। ছোট দানার মসুর ডাল ১৫০-১৬০ টাকা, মাঝারি দানার ১৩০-১৪৫ টাকা আর বড় দানার ডাল বিক্রি হচ্ছে ১১৫-১২৫ টাকা কেজি দরে। পেঁয়াজের দাম স্থির আছে ৭০-৮০ টাকা কেজিতে।
বাজারে প্রতি ডজন ফার্মের মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৪০-১৫০ টাকা। সপ্তাহ দুয়েক আগে ১৪০ টাকা ডজনের মধ্যেই ছিল। তবে বড় বাজারে ডিম এখনো আগের দামে মিলছে।
এছাড়া ফার্মের মুরগির মধ্যে সোনালি জাতের মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৯০-৩১০ টাকা কেজি। গত সপ্তাহে এই মুরগির দাম ছিল ৩২০ টাকা কেজির উপরে। ব্রয়লার বিক্রি হচ্ছে ১৭০-১৮০ টাকা কেজি।
এনএইচ/এমকেআর/জিকেএস