ঢাকায় তারুণ্যের সমাবেশ ঘিরে বিশাল শোডাউনের পরিকল্পনা বিএনপির

2 months ago 29
ঢাকায় ‘তারুণ্যের সমাবেশ’ ঘিরে বিশাল শোডাউনের পরিকল্পনা করছে বিএনপির তিন অঙ্গ-সহযোগী সংগঠন জাতীয়তাবাদী যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল। তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার এই সমাবেশে ঢাকা, সিলেট, ফরিদপুর ও ময়মনসিংহ থেকে ১৫ লাখ তরুণের জমায়েতের আশা করছে সংগঠন তিনটি। বুধবার (২৮ মে) বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠেয় সমাবেশে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য দিবেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সেখানে চলমান ‘ঘোলাটে’ রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে তিনি নির্দেশনামূলক বক্তব্য দিবেন এবং জাতীয় নির্বাচন নিয়ে দলীয় অবস্থান আবারও পুনর্ব্যক্ত করবেন। বিএনপি চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন চায়। এই সময়ের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব বলে মনে করে দলটি। গত রোববার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে এই দাবির বিষয়টি পুনরায় জানিয়ে এসেছেন তারা। এদিকে তারুণ্যের এই সমাবেশ সামনে রেখে সোমবার (২৬ মে) দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যৌথভাবে সংবাদ সম্মেলন করেছে যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল। সেখানে স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানী বলেন, আমরা চট্টগ্রামে তারুণ্যের মিলনমেলা দেখেছি। খুলনা ও বগুড়ায় আমাদের লক্ষ্য শতভাগ অর্জিত হয়েছে। তাদের আশা, ঢাকার সমাবেশে সব রেকর্ড ভেঙে ১৫ লাখ তরুণ-তরুণী যোগ দেবেন। তরুণদের কাছে টানতে মে মাসজুড়ে কর্মসূচি ঘোষণা করে বিএনপির এই তিন সংগঠন। কর্মসূচি অনুযায়ী, চারটি বড় বিভাগ ও শহরে দুই দিন করে মোট আট দিন সেমিনার ও সমাবেশ করছেন তারা। এর আগে চট্টগ্রাম, খুলনা আর বগুড়ায় সেমিনার ও সমাবেশ হয়েছে। সর্বশেষ আয়োজন বসছে রাজধানী ঢাকায়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জানানো হয়, তরুণদের নিয়ে ধারাবাহিক সেমিনার ও সমাবেশ কেবল একটি রাজনৈতিক কর্মসূচি নয়, এটি একটি বৃহৎ নীতিগত প্রয়াস। এর মাধ্যমে ভবিষ্যতের রাষ্ট্রচিন্তায় তরুণদের সম্পৃক্ত করা হচ্ছে। ঢাকায় এই সমাবেশের আগে মঙ্গলবার (২৭ মে) বিকেলে খামারবাড়িতে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (কেআইবি) মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হবে ‘তারুণ্যের রাজনৈতিক ভাবনা ও অর্থনৈতিক মুক্তি’ শীর্ষক সেমিনার। আয়োজকদের আশা, এই আয়োজন তরুণদের চিন্তা ও প্রস্তাবের ভিত্তিতে ভবিষ্যতের বাংলাদেশ নির্মাণের একটি নীতিনির্ধারণী মঞ্চে পরিণত হবে। এখানে রাজনৈতিক অধিকার, অর্থনৈতিক সম্ভাবনা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, প্রযুক্তি, জলবায়ু ও মানবাধিকারসহ নানামাত্রিক বিষয়ে তরুণদের অভিমতকে গুরুত্ব দিয়ে আলোচনা হবে। সেমিনারে প্রধান অতিথি থাকবেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান। তারুণ্যের সমাবেশ প্রসঙ্গে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার এই সমাবেশ হবে এই প্রক্রিয়ার এক বৃহৎ গণতান্ত্রিক প্রতিফলন। এই সমাবেশে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান তরুণদের উদ্দেশে দলের রাষ্ট্রচিন্তা, রাজনৈতিক রূপরেখা ও ভবিষ্যৎ কৌশল উপস্থাপন করবেন। সমাবেশে আরও উপস্থিত থাকবেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ড. আব্দুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এবং সালাহউদ্দিন আহমেদ। আয়োজকরা জানান, এই সমাবেশ কেবল একটি রাজনৈতিক জমায়েত নয়- এটি হবে তরুণদের স্বপ্ন, প্রত্যাশা ও চিন্তার এক মিলনমেলা। দল-মত, শ্রেণি-পেশা ও মতাদর্শের ভিন্নতা অতিক্রম করে তরুণরা একত্রিত হবেন একটি অভিন্ন স্বপ্নে একটি ন্যায্য, আধুনিক ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গঠনের লক্ষ্যে। লিখিত বক্তব্যে যুবদলের সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না বলেন, দুই দিনের কর্মসূচির কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে দেশের তরুণ প্রজন্ম। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ মোড়েই তরুণরা ছিলেন অগ্রসারির শক্তি। ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম, স্বৈরাচারবিরোধী গণআন্দোলন কিংবা ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা প্রতিটি লড়াইয়ের কেন্দ্রে ছিলেন তারুণ্যের সাহস, আত্মত্যাগ ও নেতৃত্ব। সেই গৌরবোজ্জ্বল ধারাবাহিকতায় রক্তক্ষয়ী জুলাই গণঅভ্যুত্থানেও তরুণরাই ছিলেন অগ্রণী ভূমিকায়। ইতিহাস আমাদের দেখিয়েছে, যখনই দেশ সংকটে পড়েছে, তরুণরাই এগিয়ে এসে জাতিকে পথ দেখিয়েছে। বিএনপি এই ঐতিহাসিক সত্যকে সম্মান করে এবং বিশ্বাস করে, তরুণ প্রজন্মই এই দেশের ভবিষ্যৎ নীতিনির্ধারক ও গণতান্ত্রিক কাণ্ডারি। যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন বলেন, বিগত সরকারের সময়ে দলীয় পরিচয়ে চাকরি দেওয়া হয়েছে। তরুণদের দাবি, রাষ্ট্র যাতে তাদের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করে। সে সক্ষমতা বিএনপির রয়েছে। বিএনপি আগামীতে ক্ষমতায় এলে প্রথম ১৮ মাসের মধ্যে এক কোটি তরুণের কর্মসংস্থান করা হবে। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসান, ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব, সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির প্রমুখ।
Read Entire Article