তাবলিগের সখ্য থেকে অপহরণ করে কোটি টাকা আদায়, গ্রেফতার দুই
তাবলিগ জামাতের মাধ্যমে সখ্য গড়ে সুযোগ বুঝে অপহরণ, মারধর, চাঁদাবাজি ও ব্ল্যাকমেইল- এভাবেই ভয়ঙ্কর একটি সংঘবদ্ধ অপরাধীচক্র টাকা হাতিয়ে আসছিল। অবশেষে রাজধানীর হাইকোর্ট এলাকা থেকে চক্রটির দুই সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। গ্রেফতাররা হলেন— মো. হাসানুজ্জামান (৩৫) ও মো. আলমগীর শিকারী (৪৬)। তারা সিআইডি পরিচয়ে জাল গ্রেফতারি পরোয়ানা ও অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে খুলনার এক ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে ১৭ ঘণ্টা জিম্মি রেখে আদায় করে নেন এক কোটি ১০ লাখ টাকা। রোববার (২৩ নভেম্বর) রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান। তিনি বলেন, চক্রের সদস্যরা তাবলিগ জামাত বা ধর্মীয় প্রোগ্রামে গিয়ে সাধারণ মানুষের আস্থা অর্জন করতো। এরপর অভাবের গল্প বলে প্রথমে অল্প অল্প করে টাকা নিতো এবং সুযোগ বুঝে তাদের অপহরণের টার্গেটে পরিণত করতো। ভুক্তভোগী জামাল (ছদ্মনাম) কাকরাইলের তাবলিগ জামাতের মারকাজ মসজিদে নিয়মিত যাওয়া-আসার সুবাদে পরিচিত হন চক্রের আরেক সদস্য সামসুল হক খানের সঙ্গে। সামসুল প্রায়ই আর্থিক সংকটের কথা বলে জামালের কাছ থেকে টাকা চাইতো। ১৪ অক্টোবর জামাল খুলনায় ব্যব
তাবলিগ জামাতের মাধ্যমে সখ্য গড়ে সুযোগ বুঝে অপহরণ, মারধর, চাঁদাবাজি ও ব্ল্যাকমেইল- এভাবেই ভয়ঙ্কর একটি সংঘবদ্ধ অপরাধীচক্র টাকা হাতিয়ে আসছিল। অবশেষে রাজধানীর হাইকোর্ট এলাকা থেকে চক্রটির দুই সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
গ্রেফতাররা হলেন— মো. হাসানুজ্জামান (৩৫) ও মো. আলমগীর শিকারী (৪৬)। তারা সিআইডি পরিচয়ে জাল গ্রেফতারি পরোয়ানা ও অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে খুলনার এক ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে ১৭ ঘণ্টা জিম্মি রেখে আদায় করে নেন এক কোটি ১০ লাখ টাকা।
রোববার (২৩ নভেম্বর) রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান। তিনি বলেন, চক্রের সদস্যরা তাবলিগ জামাত বা ধর্মীয় প্রোগ্রামে গিয়ে সাধারণ মানুষের আস্থা অর্জন করতো। এরপর অভাবের গল্প বলে প্রথমে অল্প অল্প করে টাকা নিতো এবং সুযোগ বুঝে তাদের অপহরণের টার্গেটে পরিণত করতো।
ভুক্তভোগী জামাল (ছদ্মনাম) কাকরাইলের তাবলিগ জামাতের মারকাজ মসজিদে নিয়মিত যাওয়া-আসার সুবাদে পরিচিত হন চক্রের আরেক সদস্য সামসুল হক খানের সঙ্গে। সামসুল প্রায়ই আর্থিক সংকটের কথা বলে জামালের কাছ থেকে টাকা চাইতো।
১৪ অক্টোবর জামাল খুলনায় ব্যবসার কাজে থাকাকালে সামসুল অসুস্থতার কথা বলে ফোনে টাকা চান। পরে যাত্রাবাড়ী এলাকায় দেখা করলে জামাল তাকে দুই হাজার টাকা দেন। এরপর রাত ১১টার দিকে রেস্টুরেন্ট থেকে বের হওয়ার পরই সামসুলসহ অজ্ঞাতপরিচয় সাতজন নিজেদের সিআইডি পরিচয় দিয়ে জাল গ্রেফতারি পরোয়ানা দেখান এবং পিস্তল ঠেকিয়ে জামাল ও তার ব্যবসায়িক পার্টনার রেজাউল করিমকে একটি গাড়িতে তুলে নেয়। তাদের ঢাকার হাসনাবাদ এলাকার একটি ভবনের ছয়তলায় নিয়ে পাঁচ কোটি টাকা দাবি করা হয়। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে জামালকে মারধর করা হয়। ভয় পেয়ে তিনি নগদ ও ব্যাংক লেনদেনের মাধ্যমে এক কোটি ১০ লাখ টাকা দেন। রেজাউল করিমের কাছ থেকেও ২৭ হাজার টাকা নেয় চক্রটি।
বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন আরও জানান, এরপর জামালকে বিবস্ত্র করে ২৫-৩০ বছর বয়সী এক নারীর পাশে বসিয়ে ভিডিও–ছবি ধারণ করা হয় এবং ১৮টি নন-জুডিসিয়াল স্ট্যাম্পে জোর করে স্বাক্ষর নেয় চক্রটি। ১৪ অক্টোবর রাত ১১টা থেকে ১৫ অক্টোবর বিকেল ৪টা পর্যন্ত জিম্মি থাকার পর তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। পরে পুনরায় ভিডিও প্রকাশের ভয় দেখিয়ে আরও ২০ লাখ টাকা দাবি করে অপহরণকারীরা।
ভুক্তভোগী যাত্রাবাড়ী থানায় মামলা করার পর তদন্তভার পায় সিআইডি। এরপরই অভিযান চালিয়ে হাসানুজ্জামান এবং আলমগীর শিকারীকে গ্রেফতার করা হয়।
সিআইডির এই কর্মকর্তা বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতাররা অপহরণ ও চাঁদাবাজিতে সম্পৃক্ত থাকার কথা স্বীকার করেছে। চক্রের অন্যান্য সদস্যদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
টিটি/বিএ
What's Your Reaction?