তামাক বর্জনে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে

3 months ago 25

তামাক চাষ নীল চাষের মতো হয়ে যাচ্ছে। কোম্পানিগুলো কুষ্টিয়া, রংপুর, বান্দরবানসহ বিভিন্ন জেলায় তামাক চাষ করতে চাষিদের প্রলুব্ধ করছে। শুধু কর বাড়ালেই তামাক নিয়ন্ত্রণ হবে না। তামাক চাষিদের প্রণোদনার আওতায় নিয়ে আসতে হবে। তাছাড়া তামাক কোম্পানিতে সরকারের মালিকানা কমাতে হবে। বিগত দিনে যেসব আমলা তামাক কোম্পানির স্বার্থে কাজ করেছে, তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।

শুক্রবার (৩০ মে) রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে ‘বিশ্ব তামাক মুক্ত দিবস-২০২৫’ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন বক্তারা। সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে মানস-মাদকদ্রব্য ও নেশা নিরোধ সংস্থা। বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য হলো ‘তামাক কোম্পানির কূটকৌশল উন্মোচন করি, তামাক ও নিকোটিন মুক্ত বাংলাদেশ গড়ি।’

সংবাদ সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক চেয়ারম্যান মো. আব্দুল মজিদ। সংবাদ সম্মেলনে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মানসের প্রতিষ্ঠাতা বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ড. অরূপরতন চৌধুরী।

অধ্যাপক ড. অরূপরতন চৌধুরী বলেন, মুনাফালোভী ধূর্ত তামাক কোম্পানিগুলো নানাবিধ অকৌশলে স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর পণ্যের ব্যবসা সম্প্রসারণে মরিয়া হয়ে উঠেছে। এমনকী তামাক কোম্পানিগুলো রাষ্ট্রীয় আইন, বিধিমালা, নিয়ম-কানুনের তোয়াক্কা করছে না। তাদের প্রধান টার্গেট আমাদের সন্তান! শিশু-কিশোর ও তরুণদের অর্থাৎ আগামী প্রজন্মকে তারা নেশার ফাঁদে ফেলে মুনাফার পাহাড় গড়ার নেশায় আগ্রাসী রূপ ধারণ করেছে এবং সেটা ঠিক এমন সময়ে, যখন বাংলাদেশ 'ইয়ুথ ডিভিডেন্ড' এর সুফল পেতে চলেছে। তামাক কোম্পানি সেটা তাদের অশুভ লক্ষ্য বাস্তবায়নে উদগ্রীব হয়ে আছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে বর্তমানে ৩৫ দশমিক ৩ শতাংশ (৩ কোটি ৭৮ লাখ) প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ ধূমপান, তামাক সেবন করে। শিশু-কিশোরদের মধ্যেও এ অভ্যাস রয়েছে, যা অত্যন্ত মারাত্মক ও অশনিসংকেত। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা পরিচালিত ‘গ্লোবাল স্কুল বেজড স্টুডেন্ট হেলথ সার্ভে- ২০১৪’ গবেষণায় দেখা যায়, বাংলাদেশে ১৩-১৫ বছর বয়সী শিশু-কিশোরদের মধ্যে তামাক ব্যবহার করে ৯ দশমিক ২ শতাংশ। বিশ্বে এ সংখ্যা ৩ কোটি ৮০ লাখ (বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, ২০২১)। শিশু-কিশোর ও তরুণদের মধ্যে ধূমপানের হার বাড়ছে আশঙ্কাজনক হারে। স্কুলকলেজের শিশু, কিশোরদের ইউনিফর্ম পরিহিত অবস্থায় প্রকাশ্যে সিগারেট ও ফ্যাশন হিসেবে ই-সিগারেট সেবন করতে দেখা যায়।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে আব্দুল মজিদ বলেন, তামাক বর্জনে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। তামাক চাষ নীল চাষের মত হয়ে যাচ্ছে। সেখানে কৃষককে প্রণোদনার আওতায় নিয়ে আসতে হবে। তাছাড়া তামাক কোম্পানিতে সরকারের মালিকানা কমাতে হবে। সর্বোপরি আমাদের কর্মক্ষম তরুণ সমাজকে তামাকের ছোবল থেকে রক্ষা করতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।

আরএএস/এমএএইচ/এএসএম

Read Entire Article