তাহিয়্যাতুল অজু নফল নাকি ওয়াজিব?

2 hours ago 2

প্রশ্ন: তাহিয়্যাতুল অজু নফল নাকি ওয়াজিব? তাহিয়্যাতুল অজু আদায় না করলে কি গুনাহ হবে?

উত্তর: তাহিয়্যাতুল অজু অর্থাৎ অজু করার পর দুই রাকাত নামাজ আদায় করা ওয়াজিব নয়, সুন্নতে মুআক্কাদাও নয়, বরং নফল। তাহিয়্যাতুল অজু আদায় করলে সওয়াব হবে, আদায় না করলে গুনাহ হবে না। নামাজের নিষিদ্ধ ও মাকরুহ সময় ছাড়া যে কোনো সময় অজু করার পর তাহিয়্যাতুল অজু আদায় করা যায়।

তাহিয়্যাতুল অজু অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ নফল নামাজ। বেশ কিছু হাদিসে এই নফল নামাজের ফজিলত বর্ণিত হয়েছে। এখানে আমরা কয়েকটি হাদিস উল্লেখ করছি:

উকবা ইবনে আমের (রা.) থেকে বর্ণিত আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ইরশাদ করেন, যে মুসলমান সুন্দরভাবে অজু করে তারপর দাঁড়িয়ে মনোযোগের সঙ্গে দুই রাকাত নামাজ আদায় করে, তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব হয়ে যায়। (সহিহ মুসলিম: ২৩৪)

ওসমান ইবনে আফফানের (রা.) আজাদকৃত গোলাম হুমরান থেকে বর্ণিত একদিন ওসমান (রা.) অজুর পানি চাইলেন। এরপর তিনি অজু করতে শুরু করলেন। তিনি তিনবার হাতের কব্জি পর্যন্ত ধুলেন, কুলি করলেন এবং নাক ঝাড়লেন। তিনবার তার মুখমন্ডল ধুলেন। ডান হাত কনুই পর্যন্ত তিনবার ধুলেন। বাম হাত একইভাবে ধুলেন। মাথা মাসাহ করলেন। তার ডান ও বাম পা টাখনু পর্যন্ত ধুলেন। তারপর তিনি বললেন, আমি রাসুলুল্লাহকে (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমার এ অজুর মত অজু করতে দেখেছি। অজু শেষে রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, যে ব্যাক্তি আমার এ অজুর মত অজু করবে এবং দাঁড়িয়ে একাগ্রতার সঙ্গে দুই রাকাত নামাজ আদায় করবে, নামাজে অন্তরে নিজের সঙ্গে অন্য কোনো কথা বলবে না, ওই ব্যাক্তির পুর্বের সব গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে। (সহিহ বুখারি: ১৬০, সহিহ মুসলিম: ২২৬)

আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) একদিন ফজরের সময় বেলালকে বললেন, হে বেলাল! ইসলাম গ্রহণ করার পর তুমি এমন কী আমল করেছ যে কারণে তুমি অনেক সাওয়াব লাভ করার আশা করতে পার। আমি (স্বপ্নে) জান্নাতে আমার সামনে তোমার জুতার শব্দ শুনতে পেয়েছি। বেলাল (রা.) বললেন, আমি তো অনেক আশা করার মতো কোনো আমল করিনি। তবে রাতে বা দিনে যখনই আমি অজু করি, সে অজু দিয়ে যতটুকু পারি নামাজ আদায় করি। (সহিহ বুখারি: ১১৪৯, সহিহ মুসলিম: ২৪৫৮)

তাহিয়্যাতুল অজু আদায়ের নিয়ম

তাহিয়্যাতুল অজু আদায়ের পদ্ধতি অন্যান্য নফল নামাজের মতোই। অজু করে দুই রাকাত নফল নামাজ আদায়ের নিয়ত করে নামাজ শুরু করবেন। নিয়ত আরবিতে করার প্রয়োজন নেই, কোনো দোয়া পড়ারও প্রয়োজন নেই। সুন্নত অনুসরণ করে উত্তমরূপে অজু করার পর নামাজের জন্য দাঁড়িয়ে মনে মনে বলবেন, ‘দুই রাকাত তাহিয়্যাতুল অজু আদায় করছি’। তারপর তাকবিরে তাহরিমা ‘আল্লাহু আকবার’ বলে মাধ্যমে নামাজ শুরু করবেন।

অন্যান্য নফল নামাজের মতো সুরা ফাতেহা পড়বেন, সুরা মেলাবেন, রুকু ও সিজদা আদায় করবেন, তারপর দাঁড়িয়ে আবার সুরা ফাতেহা পড়বেন, সুরা মেলাবেন, রুকু ও সিজদা করবেন, তারপর শেষ বৈঠক করে সালামের মাধ্যমে নামাজ শেষ করবেন।

ওএফএফ

Read Entire Article