তিন দিনের মধ্যে সাদাপাথর ফেরত না দিলে ব্যবস্থা

3 hours ago 4
সিলেটের কোম্পানীগঞ্জের সাদাপাথর এলাকা থেকে চুরি ও লুটে নেওয়া সব পাথর তিন দিনের মধ্যে ফেরত দেওয়ার সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে জেলা প্রশাসন। যদি কেউ পাথর ফেরত না দেয় তবে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শনিবার (২৩ আগস্ট) দুপুরে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় এ ঘোষণা দেন সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক পদ্মসন সিংহ। এ সময় তিনি বলেন, ‘সাদাপাথরের সৌন্দর্য আগের জায়গায় ফিরিয়ে আনতে আমরা আপনাদের সহযোগিতা চাই। জেলা প্রশাসকের নির্দেশ অনুযায়ী আগামী তিন দিনের মধ্যে প্রতি ওয়ার্ডের লোকজন যাতে পাথর ফেরত দেয়, তা নিশ্চিত করতে হবে। যদি কেউ পাথর ফেরত না দেয় তবে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শনিবার বিকেল থেকে মাইকিংয়ের মাধ্যমে বিষয়টি জানিয়ে দেওয়া হয়। তিন দিন পর কারও কাছে সাদাপাথর পাওয়া গেলে তাকে আইনের আওতায় আনা হবে।’ কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রবিন মিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কোম্পানীগঞ্জ-গোয়াইনঘাট সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল নোমান, উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আব্দুল মতিন, কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) সুজন চন্দ্র, কোম্পানীগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল জলিল, সিলেট জেলা বিএনপির উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট কামাল হোসেন, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা ফয়জুর রহমান, ইছাকলস ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাজ্জাদ হোসেন সাজু, চুনাপাথর আমদানিকারক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম, ক্রাশার মিল মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুল জলিল, পাথর ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আবুল হোসেন ও খেলাফত মজলিসের সাধারণ সম্পাদক হাফিজ মাসুম আহমদ। সভাটি সঞ্চালনা করেন উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা শিবলী আতিকা তিন্নি। মতবিনিময় সভায় বক্তারা বলেন, কোম্পানীগঞ্জ যেহেতু পাথর অধ্যুষিত এলাকা, তাই এখানে পর্যটন ও সংরক্ষিত এলাকা নির্ধারণ করে প্রচলিত পদ্ধতিতে কোয়ারি থেকে পাথর উত্তোলনের জন্য লিজ দেওয়া উচিত। অন্যথায় অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন পুরোপুরি বন্ধ করা কঠিন হবে। ব্যবসায়ীরা বৈধভাবে যারা পাথর আমদানি বা ক্রাশিং করছেন তাদের হয়রানি বন্ধ করার দাবি জানান এবং ক্রাশিং মিলের বৈদ্যুতিক সংযোগ ফিরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানান। এদিকে সাদাপাথর লুটের ঘটনায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) দায়িত্বে কোনো অবহেলা ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখতে বিজিবির সদর দপ্তর থেকে একটি উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। শনিবার দুপুরে লালাখাল এলাকা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ তথ্য জানান বিজিবি-১৯ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. জুবায়ের আনোয়ার। তিনি বলেন, ‘সাদাপাথর লুটপাটের সঙ্গে জড়িত মহল বিজিবি সম্পর্কে নানা ধরনের অপতথ্য প্রচার করছে; কিন্তু সীমান্ত এলাকায় বিজিবি সার্বক্ষণিক টহল চালিয়ে যাচ্ছে। এ কারণেই বিজিবি ক্যাম্পের আওতাধীন সীমান্তের ৩০০ গজের মধ্যে দুর্বৃত্তরা পাথর লুট করতে পারেনি।’ তিনি আরও জানান, সাম্প্রতিক ঘটনাগুলোর পর বিজিবি ওই এলাকাগুলোয় জনবল ও গোয়েন্দা নজরদারি বাড়িয়েছে। গত দুই মাসে পাথর চুরিতে ব্যবহৃত ছয় শতাধিক বারকি নৌকা জব্দ করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে সাদাপাথর লুটপাটের বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগও পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সমন্বয় ও সংস্কার সচিবকে আহ্বায়ক করে গঠিত এই কমিটি সরেজমিন তদন্ত শেষে ১০ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেবে।
Read Entire Article