তীর্থের কাকের মতো গরম কাপড়ের অপেক্ষায় বেদে পল্লির বাসিন্দারা

‘আল্লাহ ছাড়া আমাদের আর কেউ নেইরে বাপু, দু’পয়সা দিয়ে কেউ সহযোগিতা করে না। তীব্র শীতে ছোট একটি ডিঙ্গি নৌকায় দুই সন্তান ও স্বামীকে নিয়ে আমার জীবন। কেউ একটু গরম কাপড় নিয়ে আসবে, এই অপেক্ষায় সারাদিন তীর্থের কাকের মতো তাকিয়ে থাকি।’- কথাগুলো বলছিলেন মুন্সিগঞ্জের মিরকাদিমের ভাসমান বেদে পল্লির বাসিন্দা লাইজু বেগম। লাইজুর মতোই মানবেতর জীবন কাটছে ওই বেদে পল্লির অন্তত শতাধিক পরিবারের। হতদরিদ্র এসব মানুষের দুরবস্থার কথা বিবেচনা করে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। সরেজমিনে বেদে পল্লি ঘুরে দেখা গেছে, পৌষের কনকনে শীতে মানবেতর জীবনযাপন করছেন ডিঙ্গি নৌকায় ভাসমান মানুষ। মাত্র ৭ ফুট ছোট্ট একটি ডিঙ্গি নৌকায় পরিবারের চার থেকে পাঁচজন সদস্য নিয়ে বসবাস করছেন অনেকে। ভাসমান এসব মানুষের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, তীব্র শীতে কর্মহীন হয়ে পড়ায় অর্ধাহারে অনাহারে দিন কাটছে অনেক পরিবারের। ঘন কুয়াশার কারণে ব্যাহত হচ্ছে তাদের দৈনন্দিন ছুটে চলা। কর্মহীন হয়ে পড়েছেন অনেকে। বিশেষ করে নদীতে মাছ ধরে যারা জীবিকা নির্বাহ করেন সেসব মানুষ পড়েছেন সবচেয়ে বেশি বিপাকে। সোমবার সকাল থেকে ঘন কুয়া

তীর্থের কাকের মতো গরম কাপড়ের অপেক্ষায় বেদে পল্লির বাসিন্দারা

‘আল্লাহ ছাড়া আমাদের আর কেউ নেইরে বাপু, দু’পয়সা দিয়ে কেউ সহযোগিতা করে না। তীব্র শীতে ছোট একটি ডিঙ্গি নৌকায় দুই সন্তান ও স্বামীকে নিয়ে আমার জীবন। কেউ একটু গরম কাপড় নিয়ে আসবে, এই অপেক্ষায় সারাদিন তীর্থের কাকের মতো তাকিয়ে থাকি।’- কথাগুলো বলছিলেন মুন্সিগঞ্জের মিরকাদিমের ভাসমান বেদে পল্লির বাসিন্দা লাইজু বেগম।

লাইজুর মতোই মানবেতর জীবন কাটছে ওই বেদে পল্লির অন্তত শতাধিক পরিবারের। হতদরিদ্র এসব মানুষের দুরবস্থার কথা বিবেচনা করে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।

সরেজমিনে বেদে পল্লি ঘুরে দেখা গেছে, পৌষের কনকনে শীতে মানবেতর জীবনযাপন করছেন ডিঙ্গি নৌকায় ভাসমান মানুষ। মাত্র ৭ ফুট ছোট্ট একটি ডিঙ্গি নৌকায় পরিবারের চার থেকে পাঁচজন সদস্য নিয়ে বসবাস করছেন অনেকে।

তীর্থের কাকের মতো গরম কাপড়ের অপেক্ষায় বেদে পল্লির বাসিন্দারা

ভাসমান এসব মানুষের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, তীব্র শীতে কর্মহীন হয়ে পড়ায় অর্ধাহারে অনাহারে দিন কাটছে অনেক পরিবারের। ঘন কুয়াশার কারণে ব্যাহত হচ্ছে তাদের দৈনন্দিন ছুটে চলা। কর্মহীন হয়ে পড়েছেন অনেকে। বিশেষ করে নদীতে মাছ ধরে যারা জীবিকা নির্বাহ করেন সেসব মানুষ পড়েছেন সবচেয়ে বেশি বিপাকে।

সোমবার সকাল থেকে ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়ছে এ জনপদ। ঘন কুয়াশা আর হিম বাতাস থাকায় খুব প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাড়ি থেকে বের হচ্ছে না। গত কয়েক দিনে এই জেলায় ১২ থেকে ২৩ ডিগ্রির ঘরে তাপমাত্রা ওঠানামা করছে। এর মধ্যে কাকডাকা ভোরে চারদিকে কুয়াশাচ্ছন্ন সকালে ছোট সন্তানদের নিয়ে ডিঙ্গি নৌকায় বসে আছেন নারীরা। জীবিকার তাগিদে কনকনে শীতে কেউ বেরিয়ে যাচ্ছেন কাজে। গরম কাপড়ের অভাবে কাঁপুনি দিচ্ছে অনেকের গায়ে।

বেদে পল্লির বাসিন্দা বিউটি বেগম বলেন, আমরা দিন এনে দিনে খেয়ে বেঁচে থাকা মানুষ। অসহায়ত্ব ও অভাব আমাদের রোজকার সঙ্গী। আমরা দেশের নাগরিক ও ভোটার হওয়া সত্ত্বেও সমাজের অনেক সুবিধা থেকে বঞ্চিত। টাকার অভাবে তীব্র শীতে কষ্ট পাচ্ছি। গরম কাপড়ের অভাবে সর্দি, কাশি, জ্বরসহ শীতকালীন নানান রোগে আক্রান্ত হচ্ছি আমিসহ পরিবারের সদস্যরা। এমন পরিস্থিতিতে সরকারি সহযোগিতা কামনা করছি।

তীর্থের কাকের মতো গরম কাপড়ের অপেক্ষায় বেদে পল্লির বাসিন্দারা

বেদে পল্লির আরও দুই বাসিন্দা শাকিল মোহাম্মদ ও রফিক বলেন, গত সপ্তাহে কিছুদিন শীত কম ছিল। কিন্তু কয়েকদিন ধরে প্রচণ্ড ঠান্ডা পড়ছে, সঙ্গে শীতল বাতাস বইছে। তারপরও ঋণের চাপ ও স্ত্রী-সন্তানদের কথা বিবেচনা করে পেটের তাগিদে কাজে বের হতে হচ্ছে। কিন্তু কাজ না থাকায় কর্মহীন হয়ে পড়েছি। আমাদের মতো অসহায় মানুষদের দ্রুত কম্বল ও শীতের গরম কাপড় দিয়ে সহযোগিতা করা না হলে দুর্বিষহ ভোগান্তিতে পড়বো।

মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাসুদুর রহমান বলেন, শনিবার মধ্যরাতে মিরকাদিম বেদে পল্লির প্রায় শতাধিক মানুষকে কম্বল দেওয়া হয়েছে। তবে বেদে পল্লির শিশু ও নারীদের জন্য সাময়িকভাবে তাৎক্ষণিক গরম কাপড় দেওয়ার মতো উদ্যোগ নেওয়া সম্ভব হয়নি। যত দ্রুত সম্ভব বিষয়টি নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এফএ/এমএস

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow