তৃতীয়বার কন্যাসন্তান হওয়ায় মায়ের কাণ্ড
সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলায় তৃতীয়বার কন্যাসন্তান জন্ম হওয়ায় মাত্র পাঁচ দিনের এক নবজাতককে পানিতে ফেলে হত্যার অভিযোগ উঠেছে মায়ের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় নবজাতকের মা শারমিন আক্তারকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
সোমবার (২১ অক্টোবর) রাতে উপজেলার কাজিরহাট হাইস্কুল বলফিল্ড সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
গ্রেপ্তার শারমিন আক্তার কলারোয়া উপজেলার হেলাতলা ইউনিয়নের রঘুনাথপুর টাওয়ার মোড় এলাকার আব্দুল জব্বারের মেয়ে। তার স্বামী ইব্রাহিম খলিল সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার নওয়াবেকী এলাকার বাসিন্দা। তারা শ্বশুরবাড়ি রঘুনাথপুর এলাকায় বসবাস করতেন।
কলারোয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘সোমবার বিকেলে নবজাতককে নিয়ে বাড়ি থেকে বের হন শারমিন আক্তার। কিছুক্ষণ পর তিনি ফিরে এসে জানান, সন্তানটি নিখোঁজ।’
তার স্বামী ইব্রাহিম খলিল থানায় নিখোঁজের অভিযোগ (জিডি) করতে এলে পুলিশের সন্দেহ হয়। পরে রাত সাড়ে ১২টার দিকে পুলিশের তদন্ত টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে সত্য উদঘাটন করে।
জিজ্ঞাসাবাদে শারমিন স্বীকার করেন, তৃতীয়বার কন্যাসন্তান জন্ম নেওয়ায় পারিবারিক চাপ ও মানসিক ক্ষোভে নবজাতককে পাশের সরকারি খালের কচুরিপানার নিচে ফেলে দেন।
পুলিশ নবজাতকের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে।
নবজাতকের দাদি খাদিজা খাতুন বাদী হয়ে কলারোয়া থানায় হত্যা মামলা করেছেন। প্রাথমিক তদন্তে নবজাতকের বাবা ইব্রাহিম খলিলের সম্পৃক্ততা না পাওয়ায় তার কাছে মরদেহ দাফনের জন্য হস্তান্তর করা হয়েছে।
হেলাতলা ইউনিয়নের রঘুনাথপুর গ্রামের গ্রামপুলিশ জামাত আলী বলেন, ‘তাদের আগের দুই মেয়ে আছে। এবারও মেয়ে সন্তান হওয়ায় শারমিন ক্ষোভে শিশুটিকে খালে ফেলে দেন। তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী সেখান থেকেই শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।’
ওসি শেখ সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘এটি একটি নির্মম ও অমানবিক ঘটনা। নিজের সন্তানকে হত্যা করার মতো অপরাধ কোনোভাবেই ক্ষমার যোগ্য নয়। অভিযুক্ত মাকে গ্রেপ্তার করে থানায় নেওয়া হয়েছে।’
স্থানীয়দের দাবি, সমাজে এখনো পুত্রসন্তানকেন্দ্রিক মানসিকতা ও কুসংস্কার মানুষের মধ্যে গভীরভাবে প্রোথিত। তারা এ নৃশংস ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

2 weeks ago
13









English (US) ·