তোর এত বড় সাহস, থানায় এসে আমার নামে নালিশ করিস

ঝালকাঠির নলছিটি থানার অভ্যন্তরে এক সাংবাদিককে মারধর ও লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে এক পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে।

বৃহস্পতিবার (২০ জুন) রাতে নলছিটি থানায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য রেজানুন্নবী রাজুকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

শুক্রবার (২১ জুন) দুপুরে তাকে বরখাস্তের বিষয়টি পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আফরুজুল হক টুটুল নিশ্চিত করেন।

ভুক্তভোগী আরিফুর রহমান দৈনিক আমার সংবাদ পত্রিকার নলছিটির উপজেলা প্রতিনিধি। তিনি এ ঘটনায় প্রতিকার চেয়ে জেলা পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন।

লিখিত অভিযোগে সূত্রে জানা গেছে, পারবারিক কলহের জের ধরে সাংবাদিক আরিফুর রহমানের চাচাতো ভাই শুক্কুর সরদারের বিরুদ্ধে জরুরি সেবা ৯৯৯ ফোন দিয়ে অভিযোগ করেন তার স্ত্রী। খবর পেয়ে নলছিটি থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) ও কনস্টেবল রেজানুন্নবী রাজু ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে শুক্কুর সরদার ও তার স্ত্রীকে থানায় নিয়ে যান। বিষয়টি জানতে পেরে সাংবাদিক আরিফুর রহমান থানায় গিয়ে তার চাচাতো ভাইকে ঘাড় ধাক্কা দেওয়ার ঘটনাটি ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) অবহিত করেন। পরে দুই পক্ষের আত্মায়-স্বজন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের মাধ্যমে সালিশ-মীমাংসার সিদ্ধান্ত হয়।

ওসির কক্ষ থেকে বের হওয়ার পর ডিউটি অফিসারের রুমের সামনের বারান্দায় কনস্টেবল রেজানুন্নবী রাজু সাংবাদিক আরিফুর রহমানকে চড়-থাপ্পড় ও কিল-ঘুসি মারতে শুরু করেন। এসময় বলতে থাকেন, ‘তোর এত বড় সাহস, থানায় এসে আমার নামে ওসির কাছে নালিশ করিস? তোর মতো সাংবাদিকের হাত-পা ভেঙে দিলেও কিছু হবে না।’

এরপর কনস্টেবল রেজানুন্নবী রাজু সাংবাদিক আরিফুর রহমানের গলা চেপে ধরেন। একপর্যায়ে তিনি দৌড়ে ওসির রুমে যাওয়ার চেষ্টা করলে কনস্টেবল রেজানুন্নবী রাজু তাকে গলা ধাক্কা দিয়ে থানা থেকে বের হয়ে যেতে বলেন। খবর পেয়ে স্থানীয় সাংবাদিকরা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন।

এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য রেজানুন্নবী রাজুর ফোনে বারবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আফরুজুল হক টুটুল বলেন, এ ঘটনায় অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য রেজানুন্নবী রাজুকে বৃহস্পতিবার রাতেই জেলা পুলিশ লাইনে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, সংবাদকর্মী আরিফুর রহমানের লিখিত অভিযোগ তদন্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আতিকুর রহমান/এসআর/জিকেএস