কুড়িগ্রামের চর রাজিবপুর থানায় এক ব্যক্তিকে রাস্তা থেকে টেনেহিঁচড়ে থানায় নিয়ে গিয়ে হেনস্তার অভিযোগ উঠেছে এক এসআইয়ের বিরুদ্ধে। হেনস্তার শিকার ব্যক্তির নাম রেজাউল করিম। তিনি রাজিবপুর থানা এলাকার কোদালকাটি ইউনিয়নের চাইর উদ্দিন মেম্বার পাড়া গ্রামের বাসিন্দা।
বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে উপজেলার থানা মোড় থেকে কোমরের বেল্ট ধরে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যান এসআই আসাদুজ্জামান ও এক পুলিশ সদস্য। পরে থানাহাজতে আটকে রেখে হেনস্তা করা হয় বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী।
তবে এসআই আসাদুজ্জামান টেনে থানায় নেওয়ার কথা স্বীকার করলেও হেনস্তা করা হয়নি বলে দাবি করেছেন। একই জমির কোট পিটিশন মামলায় তদন্তের জন্য একাধিকবার ডেকেও থানায় না পেয়ে তাকে থানায় নিয়ে আসার কথা বলেন তিনি।
ভুক্তভোগী জানান, তাদের জমি দখল করেছে রেফাজউদ্দিনেরা। এ সংক্রান্ত অভিযোগ করতে থানায় যাওয়ার আগে থানা মোড় থেকে তাকে টেনেহিঁচড়ে থানায় নিয়ে যায় এসআই আসাদুজ্জামান।
অভিযোগকারী রেজাউল করিম বলেন, রেফাজউদ্দিনের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে আমার জমি নিয়ে বিরোধ চলছে। দুদিন আগে এসিল্যান্ড ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে থানায় অভিযোগ দেওয়ার পরামর্শ দেন। সকালে অভিযোগ দিতে থানার দিকে গেলে এসআই আসাদুজ্জামান আমাকে টেনেহিঁচড়ে থানায় নিয়ে মারধর করে জেলের ভেতরে আটকে রাখে। এ সময় আমাকে হত্যা মামলার আসামি করার হুমকি দেন তিনি।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী মাসুদ রানা বলেন, দারোগা আসাদুজ্জামানসহ আরেকজন রেজাউল ভাইকে জোর করে ধরে থানায় নিয়ে যায়। বেশি বাড়াবাড়ি করলে হত্যা মামলার আসামি বানিয়ে দেবে বলে হুমকি দেয়।
এ প্রসঙ্গে এসআই আসাদুজ্জামান বলেন, রেজাউলের বাবা আওয়ামী লীগ করে। তারা রেফাজউদ্দিনের জমি দখলে নিয়েছিল। ওই জমি আবার এরা দখল করেছিল। ওই জমি নিয়ে কোর্টে একটা পিটিশন মামলা আছে। আমি সেটার তদন্ত করতে এর আগে রেজাউলকে থানায় ডাকলেও সে আসেনি। তাকে থানার ভেতর ডাকা হলে আসতে না চাইলে জোর করে নিয়ে আসা হয়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে থানায় নেওয়া হয়েছে। হেনস্তা করা হয়নি।
চর রাজিবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তসলিম উদ্দিন বলেন, জামায়াতের মামলার আসামি ওর বাবা। ওই এসআই রাতে গিয়ে তার বাবাকে পাননি। এ কারণে তাকে দেখে থানায় নিয়ে এসে জানতে চেয়েছে তার বাবা কোথায়। পরে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
তবে রেজাউল করিমের বাবা তাহের আলী জানান, তার নামে কোনো মামলা নেই। পুলিশ মিথ্যা বলছে। তিনি এলাকাতে স্বাভাবিক চলাফেরা করছেন। তার ছেলে জমির বিষয়ে অভিযোগ করতে গেলে পুলিশ তাকে হেনস্তা করে।
উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা আবুল বাশার মোহাম্মদ আব্দুল লতিফ জানান, অফিস ভাঙচুরের বিষয়ে থানায় একটি মামলা করা হয়েছে। তবে কোদালকাটির আওয়ামী লীগ নেতা রেজাউল করিমকে তিনি চেনেন না। মামলার আসামি কিনা তাও জানেন না তিনি।