দলিত নারীদের উন্নয়ন ও ক্ষমতায়নে ৪ দাবি

2 hours ago 5

দলিত নারীর উন্নয়ন ও ক্ষমতায়নে চার দফা দাবি জানিয়েছে দলিত নারী ফোরাম ও নাগরিক উদ্যোগ। রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ধানমন্ডির উইমেন ভলেন্টিয়ার এসোসিয়েশন মিলনায়তনে সংগঠনগুলোর যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিত সম্মিলনীতে বক্তারা এ দাবি জানান।

সম্মিলনীতে মুক্তিযুদ্ধ ও ২০২৪ সালের জুলাই অভ্যুত্থানের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। এ সময় বক্তারা উপমহাদেশের দলিত অধিকার আন্দোলনের অগ্রদূত বি.আর. আম্বেদকর, যোগেন্দ্রনাথ মন্ডল এবং বাংলাদেশের দলিত আন্দোলনের নেতা বিজি মূর্তিকে স্মরণ করেন।

বক্তারা বলেন, শ্রেণী, বর্ণ ও লিঙ্গের কারণে ত্রিমাত্রিক বৈষম্যের শিকার দলিত নারীরা সমাজের সবচেয়ে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী। তাদের সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন ছাড়া এসডিজির লক্ষ্য অর্জন সম্ভব নয়।

বৈষম্যের চিত্র

সম্মিলনীতে বলা হয়, দক্ষিণ এশিয়ায় বসবাসরত ২১ কোটি দলিতের মধ্যে নারীরাই সবচেয়ে বেশি বৈষম্য ও মানবেতর জীবনযাপনের শিকার। দলিত মেয়েদের মধ্যে শিক্ষার সুযোগ সীমিত, বাল্যবিবাহের হার ৭৬ শতাংশ, এবং অনেকে স্কুলে গিয়ে শিক্ষক ও সহপাঠীর কাছ থেকেও বৈষম্যের মুখোমুখি হয়। মাতৃভাষায় শিক্ষার সুযোগ না থাকাও তাদের পিছিয়ে পড়ার একটি বড় কারণ।

দলিত নারীদের উন্নয়ন ও ক্ষমতায়নে ৪ দাবি

চার দফা দাবি-

বক্তারা দলিত নারীর উন্নয়ন ও ক্ষমতায়নে চারটি মূল বিষয়ে গুরুত্ব আরোপ করেন। সেগুলো হলো-

১. ভূমি ও সম্পদের ওপর নারীর মালিকানা প্রতিষ্ঠা।
২. কর্মক্ষেত্রে সম্মানজনক পরিবেশ ও ন্যায্য মজুরি নিশ্চিতকরণ।
৩. ন্যায়বিচার ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা।
৪. সব স্তরে সিদ্ধান্ত গ্রহণে নারীর নেতৃত্ব ও অংশগ্রহণ।

আরও পড়ুন:
সাবেক ভূমিমন্ত্রীর অবৈধ সম্পদ অর্জনের ২৩ বস্তা আলামত উদ্ধার
এবার জানুয়ারিতেই নতুন বই পাবে শিক্ষার্থীরা: অর্থ উপদেষ্টা

নীতিগত সংস্কারের আহ্বান

সম্মিলনীতে দলিত নারী ও কিশোরীদের উন্নয়নের জন্য বেশ কিছু সুপারিশ করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে-

- সংবিধানে নারী-পুরুষ সমতার বিষয়টি সুস্পষ্টভাবে অন্তর্ভুক্ত করা

- হিন্দু বিবাহ রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক করা ও বৈষম্যমূলক উত্তরাধিকার আইন বাতিল

- “জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতিমালা–২০১১” পর্যালোচনা করে দলিত ও প্রান্তিক নারীদের বিশেষ চাহিদা অন্তর্ভুক্ত করা

- জাতপাতভিত্তিক বৈষম্য নিরসনে সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা

- কর্মজীবী দলিত নারীদের মাতৃত্বকালীন সকল সুবিধা নিশ্চিত করা।

রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের দাবি

সম্মিলনীতে বক্তারা জোর দিয়ে বলেন, দলিত নারীদের রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করার জন্য জাতীয় সংসদ ও স্থানীয় সরকারে সংরক্ষণ নীতি প্রবর্তন করতে হবে।

তারা মনে করেন, নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে দলিত নারীদের অংশগ্রহণ ছাড়া নারী নির্যাতন ও বৈষম্য কমানো সম্ভব নয়।

এসডিজির লক্ষ্য পূরণে সমাজের সর্বক্ষেত্রে দলিত নারীর নেতৃত্ব ও অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার আহ্বান জানানো হয় সম্মিলনীতে।

এসইউজে/এনএইচআর/এএসএম

Read Entire Article