অনেকেই মনে করেন তারুণ্য ধরে রাখতে হলে চাই অ্যান্টি-এজিং সাপ্লিমেন্ট, দামি স্কিন ট্রিটমেন্ট বা নানা রকম জুস আর ক্রিম। কিন্তু সত্যি বলতে, এগুলোর অনেকটাই শুধুই চটকদার বিজ্ঞাপন।
আসল সৌন্দর্য আর তারুণ্য আসে আমাদের দৈনন্দিন অভ্যাস থেকে, যা একদম বিনামূল্যে সম্ভব। যুক্তরাষ্ট্রের নামকরা হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ও ফাংশনাল মেডিসিন চিকিৎসক ডা. সঞ্জয় ভোজরাজ ঠিক এ কথাটিই আমাদের মনে করিয়ে দিয়েছেন।
বয়স বাড়া স্বাভাবিক, তবে অসুস্থতা নয়
ডা. ভোজরাজ বলেন, বয়স তো বাড়বেই; কিন্তু তার মানে এই না যে আপনি অসুস্থ হবেন বা দুর্বল হয়ে পড়বেন।
তার মতে, স্বাস্থ্যকর জীবনধারা মেনে চললে যে কেউ দীর্ঘদিন কর্মক্ষম ও আনন্দময় জীবন কাটাতে পারেন।
তিনি নিজের ২০ বছরের অভিজ্ঞতায় দেখেছেন, বেশিরভাগ দীর্ঘমেয়াদি অসুস্থতার পেছনে দায়ী আমাদের জীবনযাপন—জিন নয়। অর্থাৎ, কী খাচ্ছেন, কতটা নড়াচড়া করছেন, কেমন ঘুমাচ্ছেন, আর মানসিক চাপ কতটা সামলাতে পারছেন—এই সবকিছুই ঠিক করে দিচ্ছে আপনি কেমন থাকবেন।
সবচেয়ে ভালো অ্যান্টি-এজিং উপায়: ব্যায়াম
ডা. ভোজরাজ জানাচ্ছেন, তারুণ্য ধরে রাখার সবচেয়ে কার্যকর ওষুধ হলো নিয়মিত শরীরচর্চা। একটি গবেষণায় দেখা গেছে, যাদের জিনে দীর্ঘজীবনের সম্ভাবনা কম, তারাও যদি নিয়মিত ব্যায়াম করেন এবং কম বসে থাকেন, তাহলে তারা সুস্থ ও দীর্ঘ জীবন পেতে পারেন। আবার যাদের জিন ভালো, তারাও যদি অলস থাকেন, তবে সেই জিনের সুবিধা কাজে লাগানো সম্ভব হয় না।
শুধু হাঁটলে চলবে না। হাঁটা ভালো, কিন্তু তা যথেষ্ট নয়। এমন ব্যায়াম করতে হবে যা আপনার পেশি, ফুসফুস এবং শরীরের কোষগুলোর ওপর প্রভাব ফেলে।
ডা. ভোজরাজ বলেন, স্ট্রেংথ ট্রেনিং আর অ্যারোবিক ব্যায়াম—এই দুইয়ের কম্বিনেশন হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, এমনকি স্মৃতিভ্রংশের ঝুঁকি পর্যন্ত ৫০ শতাংশ কমিয়ে দিতে পারে। এমন ক্ষমতা কোনও ওষুধেরই নেই।
আমাদের শরীরের ‘শক্তির ইঞ্জিন’ বলা হয় মাইটোকন্ড্রিয়াকে। এটি বাঁচে অক্সিজেন, সূর্যের আলো আর নড়াচড়ার ওপর। অর্থাৎ, যত বেশি সক্রিয় থাকবেন, তত ভালোভাবে চলবে আপনার শরীরের ইঞ্জিন।
তারুণ্য ধরে রাখার সহজ ফর্মুলা
- ব্যায়াম করুন নিয়মিত
- পর্যাপ্ত ঘুমান
- প্রকৃতির সংস্পর্শে থাকুন
- মানসিক চাপ কমানোর চেষ্টা করুন
এই অভ্যাসগুলোই হলো প্রকৃত অ্যান্টি-এজিং থেরাপি। ওষুধ বা সাপ্লিমেন্ট নয়—স্বাস্থ্যকর জীবনধারাই পারে বার্ধক্যকে ধীর করতে, এবং আপনাকে আরও দীর্ঘদিন তরুণ রাখে—মনে ও শরীরে।
বয়সকে ভয় নয়—আপনার জীবনধারাই আপনার তারুণ্যের আসল চাবিকাঠি।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া