আসন্ন ঈদুল আজহায় দিনাজপুরের খামারিরা কোরবানির পশু প্রস্তুত রেখেছেন। তবে এবার জেলায় চাহিদার চেয়ে কোরবানির পশু বেশি।
জেলার ১৩টি উপজেলায় ৬৮টি পশুর হাটে এবছর ৪ লাখ ৫৯ হাজার ৯১টি পশু বেচাকেনার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
দিনাজপুর জেলায় কোরবানির পশুর চাহিদা রয়েছে দুই লাখ ৬৯ হাজার ৮৬৫টি। বিপরীতে প্রস্তুত চার লাখ ৫৯ হাজার ৯১টি পশু। যা চাহিদার তুলনা এক লাখ ৩৬ হাজার ১২৬টি বেশি। সব মিলিয়ে প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকার গরু বেচাকেনার হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তবে পশু লালন-পালনে খরচ বৃদ্ধি পাওয়ায় কোরবানির হাটে দামের উত্তাপ অনুভূত হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন খামারি ও ক্রেতারা।
জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর জানিয়েছে, ১ লাখ ৬৪ হাজার ৭৯টি গরু, ৫৭৭টি মহিষ, ২ লাখ ২০ হাজার ৭৮৬টি ছাগল এবং ২০ হাজার ৫৪৯টি ভেড়া রয়েছে জেলায়। ৬২ হাজার ১০৮ খামারিসহ বিভিন্ন বাড়িতে এই গরুগুলো লালন-পালন করা হচ্ছে।
তবে, পশু পরিচর্যার খরচ বৃদ্ধি পাওয়ায় কপালে চিন্তার ভাঁজ খামারিদের। তারা বলছেন, সদর উপজেলার খামারি মিলন জানান, গো-খাদ্য, ওষুধ এবং শ্রমিকদের মজুরি গত বছরের তুলনায় প্রায় ৩০ শতাংশ বেড়েছে। এতে গত বছর যে গরুটি তৈরি করতে ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়েছিল, এ বছর সেই একই গরুর জন্য ৬৫-৭০ হাজার টাকা খরচ হচ্ছে।
ভারত থেকে গরু আমদানি বন্ধ থাকায় দেশীয় খামারিরাই এখন কোরবানির বাজারের মূল যোগানদাতা। এতে একদিকে যেমন স্থানীয় উৎপাদকরা লাভবান হচ্ছেন, তেমনি উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারের জন্য কোরবানির পশু কেনা কঠিন হয়ে পড়তে পারে।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আব্দুর রহিম জানান, কোরবানির পশুর হাটগুলোতে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে মহাসড়কের পাশে হাট বসানো নিষিদ্ধ করা হয়েছে। জেলায় ৬৮টি স্থায়ী ও অস্থায়ী পশুর হাট নির্ধারণ করা হয়েছে। একই সঙ্গে প্রতিটি উপজেলায় এ বিষয়ে প্রশাসনিক নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। হাটবাজারগুলোতে পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ৩৮টি মেডিকেল টিম কাজ করবে।
এবার জেলার চাহিদা মিটিয়ে রাজধানীসহ অন্যান্য জেলায় পাঠানো হবে ১ লাখ ৩৬ হাজার ১২৬টি পশু। জেলায় ৫০ হাজার থেকে শুরু করে ১২ লাখ টাকা পর্যন্ত গরু রয়েছে। গড়ে এবার প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকার পশু বিক্রির প্রত্যাশা জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের।
এমদাদুল হক মিলন/জেডএইচ/জেআইএম