দিনাজপুরে শেখ হাসিনাসহ ৫১৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা

9 hours ago 4

ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১১৮ জনের নাম উল্লেখ করে দিনাজপুরে আদালতে নাশকতার মামলা করা হয়েছে। মো. হায়াত আলী (৩১) নামে এক জুলাই যোদ্ধা এই মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ৪০০ জনকে আসামি করা হয়।

সোমবার (২০ অক্টোবর) দুপুরে দিনাজপুরের অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এই মামলা করেন তিনি। পরে আদালতের বিচারক মো. সামিউল ইসলাম বাদীর অভিযোগের বিষয় সিআইডিকে তদন্ত করে ২৩ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করার আদেশ দিয়েছেন।

মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) দিনাজপুর কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক মোঃ আমিনুল ইসলাম এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

জানা গেছে, মামলার বাদী মো. হায়াত আলী (৩১) দিনাজপুর সদর উপজেলার উত্তর শিবপুর গ্রামের মো. সানাউল্লাহ ছেলে।

মামলায় অন্যতম আসামিদের মধ্যে রয়েছেন- সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, দিনাজপুর-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক হুইপ ইকবালুর রহিম, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এমদাদ সরকার, সাধারণ সম্পাদক মো. মমিনুল ইসলাম, শহর আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ শাহ আলম, জেলা যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক মো. আনোয়ার হোসেন, শশরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. মোকছেদ আলী রানা, শহর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নওশাদ ইকবাল কলিংস, শহর আওয়ামী লীগ সহ-সভাপতি জিয়াউর রহমান নওশাদ, দিনাজপুর পৌর সভার সাবেক প্যানেল মেয়র তৈয়ব আলী দুলাল ও পরিবহন শ্রমিক নেতা শেখ বাদশাসহ ১১৮ জন আসামির নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও ৪০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

মামলায় গত বছর ১৮ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে দিনাজপুর শহরে আহত জুলাই যোদ্ধাদের সাক্ষী হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।

মামলার বাদী মো. হায়াত আলী অভিযোগ করেন, তিনি একাধিক জুলাই যোদ্ধা গত বছর ৪ আগস্ট দুপুর দুইটা থেকে ৩টা পর্যন্ত দিনাজপুর শহরে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল (সদর হাসাপাতাল) মোড় থেকে তৎকালীন হুইপ ইকবালুর রহিমের বাড়ি এবং আদালত এলাকা পর্যন্ত আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন। অংশ নেয়া আন্দোলনকারীদের ওপর আসামিরা দেশি অস্ত্র ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়ে পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত করে। আসামিদের হামলা, ইট-পাটকেল নিক্ষেপ ও গুলিবর্ষণের ফলে বাদীসহ বিপুল সংখ্যক ছাত্র-জনতা গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন।

তিনি আরও অভিযোগ করেন, আহতরা গুরুতর অবস্থায় সে সময় সদর হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য গিয়েছিলেন। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আহতদের চিকিৎসা দিতে অবহেলা করেন। এতে উপায় না পেয়ে হয়ে অনেক জন গুরুত্বর আহত অবস্থায় হাসপাতালের বাইরে চিকিৎসা নিতে বাধ্য হয়। এর মধ্যে গুরুত্বর আহত সদর উপজেলার রানীগঞ্জ এহিয়া হোসেন কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র রবিউল ইসলাম রাহুল চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।

এছাড়া হায়াত আলী নিজেও গুরুত্বর আহত হয়ে হাসপাতালে বাইরে চিকিৎসা নেন। দীর্ঘ সময় সে তার বাড়িতে থেকে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হন। তাকে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার জুলাই যোদ্ধা হিসেবে তালিকাভুক্ত করে স্বীকৃতি দিয়েছেন। এই ঘটনায় তিনি নিজে বাদী হয়ে প্রথমে সদর কোতয়ালী থানায় মামলা দাখিল করেন।

তবে থানা কর্তৃপক্ষ গত তিন মাস অতিবাহিত হলেও মামলাটি রেকর্ড না করায় বাধ্য হয়ে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে দাবি করেন হায়াত আলী।

দিনাজপুর কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক মো. আমিনুল ইসলাম জানান, মামলাটি তদন্তের জন্য বিচারক সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ দেন। আগামী ২৩ ডিসেম্বরের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করার আদেশ দিয়েছেন।

এমদাদুল হক মিলন/এনএইচআর/এমএস

Read Entire Article