বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের কার্যনির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান ও সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টসর মো. রুহুল কুদ্দুস কাজল বলেছেন, আমাদের দু-একজনের কারণে পুরো আইনজীবী সমাজ যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেদিকে খেয়াল করতে হবে।
শনিবার (২৩ আগস্ট) বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের এক বর্ধিত সভায় তিনি এসব কথা বলেন। পটুয়াখালী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারককে ট্রাইব্যুনালের সরকারি কৌঁসুলির (পিপি) ঘুষ দেওয়ার অভিযোগ এবং গুলশানের নিকেতনে এক আইনজীবীর বিরুদ্ধে দুই শিশু গৃহকর্মীকে নির্যাতনের বিষয়ে এ সভার আয়োজন করা হয়।
ব্যারিস্টসর রুহুল কুদ্দুস কাজল বলেন, পটুয়াখালীর একজন জজ অভিযোগ করেছেন- সেখানে কর্মরত একজন পিপি তার বাসায় ঘুষ দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। বার কাউন্সিলের বর্তমান সিস্টেমে কোনো আইনজীবীর বিরুদ্ধে কেউ অভিযোগ করলেই শুধু সেটিই বার কাউন্সিল বিবেচনায় নিতে পারে। প্রত্যাশা করি, কোনো আইনজীবী এ ধরনের কোনো রকম অনৈতিক কাজের মধ্যে নিজেকে জড়িত করতে পারেন না।
তিনি আরও বলেন, একজন আইনজীবীর বাসায় দুজন শিশু গৃহকর্মীকে মারাত্মভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। আইনজীবীর বিরুদ্ধে শিশু নির্যাতনের জন্য মামলা হয়েছে। ভিডিও ও সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশের পর থেকে সাধারণ মানুষ কিন্তু ওই আইনজীবীর কারণে আইনজীবী সমাজ সম্পর্কে একটা নেতিবাচক চিত্র আমাদের সামনে তুলে ধরছে।
সভায় পটুয়াখালী জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি মো. হুমায়ুন কবির বলেন, এ রকম কোনো ঘটনা যেন না ঘটে, আমাদের সে ব্যাপারে সচেষ্ট থাকতে হবে। আমাদের একজন আইনজীবী, উনি একটা বিশেষ দলের… নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পিপি নিয়োগপ্রাপ্ত হন। নিয়োগপ্রাপ্ত হওয়ার পর বিভিন্ন সময়ে কোর্টে অনৈতিক আচরণ করতে থাকেন।
- আরও পড়ুন
- বিচারককে ঘুস দিতে চাওয়া সেই পিপির সনদ স্থগিত
- শিশু গৃহকর্মী নির্যাতন: আইনজীবী শোয়েবের বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ
হুমায়ুন কবির বলেন, তিনি নিজে ও সমিতির সাধারণ সম্পাদক বিভিন্ন সময় তাকে (ওই পিপিকে) নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেও পারেননি। আইন পেশার সম্মান রক্ষার্থে এই চেষ্টা অবিরত চালিয়ে গেছেন। কিন্তু তিনি অনৈতিকতার সঙ্গে দুটি খাম জজ সাহেবকে প্রেরণ করন। একটিতে কেসের নথি, অপরটিতে টাকা।
পটুয়াখালী আইনজীবী সমিতির সভাপতি বলেন, জজ সাহেব তাৎক্ষণিক জেলা বারের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও জেলার পিপি যিনি আছেন, তাকে ডেকে অবস্থাটি দেখান। বাসার ভিডিও ফুটেজেও লক্ষ্য করা গেছে, কাকে পাঠিয়েছে এবং কীভাবে গেছে—সবকিছুই ভিডিও ফুটেজে আছে। এটা আইন পেশার জন্য অত্যন্ত লজ্জাজনক বলে মনে করি। তার সদস্যপদ সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে এবং সাত দিনের শোকজ (কারণ দর্শানোর) নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
সভায় বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যান অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, ভাইস চেয়ারম্যান জয়নুল আবেদীন, ফিন্যান্স কমিটির চেয়ারম্যান এ এস এম বদরুল আনোয়ারসহ বিভিন্ন জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতিরা বক্তব্য দেন।
এ সময় বার কাউন্সিলের লিগ্যাল এডুকেশন কমিটির চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মামুন, হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড লিগ্যাল এইড কমিটির চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকনসহ বিভিন্ন কমিটির চেয়ারম্যান ও সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এফএইচ/বিএ