দুঃসাহসী সেই চিকিৎসকের ভাগ্যে কী ঘটেছে?
ইসরায়েলের কারাগারে ফিলিস্তিনি বন্দি হুসাম আবু সাফিয়া। তিনি সেই চিকিৎসক যিনি ধ্বংসযজ্ঞের মাঝেও নিজে হেঁটে শত্রু ট্যাংকের কাছে গিয়েছিলেন। ওই দিন গাজার হাসপাতাল থেকে নিরীহ রোগীদের অন্যত্র সরাতে জীবন বাজি রাখেন হুসাম।
প্রায় ১০ মাস ধরে কোনো অভিযোগ ছাড়াই ইসরায়েলি কারাগারে আটক আছেন তিনি। যুদ্ধবিরতির পর বহু নিরীহ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দিলেও ডাক্তার হুসাম আবু সাফিয়াকে মুক্তি দেয়নি দখলদার বাহিনী। তার ভাগ্যে কী ঘটবে বা বর্তমানে তিনি কেমন আছেন তাও অজানা। এমন অনিশ্চয়তায় তাকে দেওয়ার আন্তর্জাতিক দাবি ক্রমশ বাড়ছে।
আলজাজিরার বুধবারের প্রতিবেদনে বলা হয়, আবু সাফিয়া একজন শিশু বিশেষজ্ঞ। ১৯৭৩ সালের ২১ নভেম্বর উত্তর গাজা উপত্যকার জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। ১৯৪৮ সালে তার পরিবার আশকেলন জেলার হামামা ফিলিস্তিনি শহর থেকে বাস্তুচ্যুত হয়।
তিনি জাবালিয়া, বেইত লাহিয়া এবং বেইত হানুনের আশেপাশের জেলাগুলাতে ইসরায়েলি সেনাদের ৮৫ দিনের অবরোধের মধ্য দিয়েও উত্তর গাজার কামাল আদওয়ান হাসপাতাল পরিচালনা করেন। অবরোধের সময় ইসরায়েল ফিলিস্তিনিদের খাদ্য ও পানির সরবরাহ বন্ধ করে দেয় এবং বিমান হামলা ও গোলাবর্ষণ করে শত শত বেসামরিক নাগরিককে হত্যা করে।
একই অভিযানের সময় হাসপাতালের গেটে ড্রোন হামলায় আবু সাফিয়ার ছেলে ইব্রাহিমকে হত্যা করে ইসরায়েলি বাহিনী।
ওই বছরের ২৭ ডিসেম্বর যখন সেনারা হাসপাতালে অভিযান চালায় তখন ছবি-ভিডিওতে দেখা যায়, আবু সাফিয়া তার সাদা ডাক্তারের কোট পরে ভবন থেকে বেরিয়ে এসে রোগীদের সরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে আলোচনা করতে ইসরায়েলি সাঁজোয়া যানের দিকে যাচ্ছেন।
তিনি বিনীতভাবে ইসরায়েলি সেনাদের বুঝানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু দখলদারদের মন গলেনি। হাসপাতালে হামলা করা হয়। বহু নিরীহ মানুষের মৃত্যু ঘটে। আবু সাফিয়া এবং রোগী-কর্মীসহ আরও কয়েক ডজনকে আটক করা হয়। সোমবার হামাস কর্তৃক আটক ২০ জন জিম্মির বিনিময়ে মুক্তি পাওয়া শত শত ফিলিস্তিনি বন্দী ও বন্দীদের মধ্যে তিনি ছিলেন না। এতে তার ভাগ্য নিয়ে উদ্বেগ চরমে পৌঁছেছে।