দুই হাতে ভর করে হাবিবের ৪৬ বছর পার

1 week ago 8

ছয় বছর বয়সে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে চলাফেরা করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেন ৪৬ বছরের হাবিব। চিকিৎসা করাতে গিয়ে হারিয়েছেন পরিবারের সহায় সম্বল। এতেও কোনো লাভ হয়নি। অনেকটা বাধ্য হয়েই দুই হাতে ভর করে চলতে হচ্ছে তাকে।

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার বাতিসা ইউনিয়নের দৈয়ারা গ্রামের বাসিন্দা হাবিব বর্তমানে ভিক্ষাবৃত্তি করে চালাচ্ছেন সংসার।

বুধবার (১৩ নভেম্বর) সকালে চৌদ্দগ্রাম বাজারে আছু সাহ ফকির রোডের মুখে ভিক্ষাবৃত্তি করতে দেখা গেছে হাবিবকে।

হাবিব বলেন, ৪৬ বছর ধরে দুই হাতে ভর করে চলছি। এই বয়সে আর এভাবে চলাফেরা করতে পারি না। অনেকের কাছে একটি হুইল চেয়ার খুঁজেও পায়নি। বিভিন্ন বাজারে রাস্তার পাশে বসে মানুষের কাছে হাতে পেতে ৪০০-৫০০ টাকা পায়, এতে কোনো রকম সংসার চলে। বাবা জীবিত থাকতে ৩০ বছর বয়সে বিয়ে করিয়ে দেন।আমার দুই ছেলের মধ্যে বড় ছেলে স্থানীয় মাধ্যমিক বিদ্যালয় ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ে ছোট ছেলে একটি হাফিজিয়া মাদ্রাসা হেফজ বিভাগে আছে।

তিনি বলেন, পরিবার-পরিজনের ভরণপোষণ মেটাতে অক্লান্ত পরিশ্রম করতে হয়। সকাল বেলায় বাড়ি থেকে বের হয়ে রাত পর্যন্ত রাস্তার পাশে ঝড় বৃষ্টি মাথায় নিয়ে বসে থাকতে হয়। প্রতিদিন গভীর রাতে যখন বাসায় ফিরি তখন ঘুমিয়ে থাকা ছেলেদের মুখের ওপর হাত বুলিয়ে আমিও আবার ঘুমিয়ে পড়ি। অনেক সময় ছেলেরা ঘুমিয়ে থাকাকালীন আমি বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়।

হাবিব বলেন, অনেক কষ্ট করে আমার সংসার জীবন চলছে, কেউ খবর নেয় না। একটি চেইন চালিত অথবা মোটরচালিত হুইল চেয়ার কেউ দিলে চলতে সুবিধা হতো।

একই গ্রামের রুহুল আমিন মিয়া বলেন, হাবিব কষ্ট করে হাতের ওপর ভর দিয়ে চলাফেরা করে। বিত্তবানরা যদি তাকে একটি চেইনচালিত রিকশা কিনে দিত তাহলে উপকার হতো।

চৌদ্দগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রহমত উল্লাহ কালবেলাকে বলেন, সাংবাদিকদের মাধ্যমে বিষয়টি জেনেছি। মোটরচালিত রিকশার জন্য প্রতিবন্ধী হাবিব দরখাস্তের মাধ্যমে আবেদন করলে বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।

Read Entire Article