দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) নিজ ঘরে দুর্নীতি প্রতিরোধে কাজ করছে বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মোমেন। তিনি বলেন, ‘দুদক যদি দুর্নীতিমুক্ত না হয়, তবে অন্য প্রতিষ্ঠানকে বলার নৈতিক অধিকার থাকে না।’
বুধবার (২৯ সেপ্টেম্বর) দুদক ও টিআইবি নতুন করে পাঁচ বছর মেয়াদি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই অনুষ্ঠানে আবদুল মোমেন এসব কথা বলেন। সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে এই চুক্তি সই হয়।
অভ্যন্তরীণ দুর্নীতি প্রসঙ্গে চেয়ারম্যান বলেন, নিজেদের ঘরে দুর্নীতি রোধে আমরা কাজ করছি এবং এ ক্ষেত্রে গণমাধ্যম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
এসময় আন্তর্জাতিক দুর্নীতি ধারণা সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান প্রসঙ্গে দুদক চেয়ারম্যান উল্লেখ করেন, এবারই প্রথম সরকার প্রতিবাদ না করে সূচকের ফল মেনে নিয়েছে। তার ভাষ্য, ‘এটি সত্যের কাছাকাছি, তাই আমরা গ্রহণ করেছি।’
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, দুদক ও টিআইবির সহযোগিতা শুধু প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতাই বাড়াবে না, জনগণের সম্পৃক্ততাও নিশ্চিত করবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা যৌথভাবে গবেষণা, প্রশিক্ষণ, গণসচেতনতা সৃষ্টি ও নৈতিকতার চর্চা জোরদারে কাজ করবো।
তিনি আরও বলেন, আমরা দুদকের ওয়াচডগ, আবার সহযোগীও। ঘাটতি চিহ্নিত করে আমরা পরামর্শ দিই এবং দুদকের সক্ষমতা বৃদ্ধিতেও কাজ করি।
দুদক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন প্রসঙ্গে তিনি জানান, এর ৪৭টি সুপারিশের প্রায় সবকটিই রাজনৈতিক দলগুলো মেনে নিয়েছে। কিছু সুপারিশ বাস্তবায়নের দায়িত্ব সরকারের হাতে রয়েছে। তার প্রত্যাশা, সুপারিশগুলো বাস্তবায়িত হলে দুদক একটি আদর্শ দুর্নীতি দমন কমিশনে পরিণত হবে।
দুদক–টিআইবির এ সমঝোতার আওতায় দুর্নীতি প্রতিরোধে গণসচেতনতা বৃদ্ধি, পদ্ধতিগত উৎকর্ষ সাধন, অধিপরামর্শ কার্যক্রম, প্রচারাভিযান এবং যৌথ গবেষণা ও প্রশিক্ষণ চালানোর কথা বলা হয়েছে। উভয় পক্ষের বিশ্বাস, এই উদ্যোগ দেশের প্রশাসনিক ও সামাজিক অঙ্গনে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বাড়াতে ভূমিকা রাখবে।
এর আগে ২০১৫ সালের মে মাসে প্রথমবারের মতো দুদক ও টিআইবির মধ্যে দুই বছর মেয়াদি সমঝোতা সই হয়। এরপর ২০১৭ সালের জুনে দ্বিতীয় দফায় দুই বছর চার মাস, ২০১৯ সালের অক্টোবরে তৃতীয় দফায় তিন বছর এবং ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে চতুর্থ দফায় তিন বছর মেয়াদি চুক্তি সম্পাদিত হয়েছিল। এবারের পঞ্চম দফায় নতুন চুক্তির মেয়াদ আগামী ১ অক্টোবর ২০২৫ থেকে শুরু হয়ে ৩০ সেপ্টেম্বর ২০৩০ পর্যন্ত কার্যকর থাকবে।
অনুষ্ঠানে দুদকের কমিশনার (অনুসন্ধান) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) হাফিজ আহসান ফরিদ, সচিব মোহাম্মদ খালেদ রহীমসহ দুদক ও টিআইবির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এসএম/এমআইএইচএস/জেআইএম