দুদিন ধরে সূর্যের দেখা নেই বরিশালে
গত দুদিন ধরে বরিশালে সূর্যের দেখা নেই। ফলে মেঘলা আকাশ এবং ঘনকুয়াশায় শীতের তাপমাত্রাও বৃদ্ধে পেয়েছে। আগামী ২-৩ দিনে বরিশাল অঞ্চলে শীতের তীব্রতা আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। এদিকে বুধবার (০১ জানুয়ারি) দুপুরের পর আকাশ মেঘাচ্ছন্ন কেটে গেলেও বৃহস্পতিবার (০২ জানুয়ারি) সকাল থেকে সূর্যের দেখা মেলেনি।
ফলে সকাল থেকেই ভোগান্তির চিত্র ফুটে ওঠে জনজীবনে। ঘনকুয়াশার কারণে সড়ক ও নৌপথে বিঘ্নিত হচ্ছে যানবাহন চলাচল। অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের হতে দেখা যায়নি মানুষদের। রাস্তাঘাট ফাঁকা থাকায় ব্যবসা-বাণিজ্যে নেমে আসে অস্থিরতা। তবে দুপুরের পর ভিড় দেখা যায় ফুটপাতের গরম পোশাকের দোকানে।
বরিশাল আবহাওয়া অফিসের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক মাজহারুল ইসলাম জানিয়েছেন, গত দুদিন ধরেই বরিশালে সূর্যের দেখা নেই। বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত বরিশালে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৪ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ ছাড়া বিকেল ৩টায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ১৮ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
তিনি জানান, বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপ রয়েছে। এ কারণে আকাশ মেঘলা। তার ওপর এখন শীতকাল হওয়ায় ঘনকুয়াকাশা রয়েছে। এসব কারণে শীতের তীব্রতা কিছুটা বেশি। এ মৌসুমে এখন পর্যন্ত সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে চলতি মৌসুমে এখনো সৈত্যপ্রবাহ বয়ে যায়নি বরিশালে। ৮ ডিগ্রি সেলসিয়ানের নিচে তাপমাত্রাকে শৈত্যপ্রবাহ হিসেবে ধরা হয়। তবে সূর্যের আলো না থাকায় দিনের তাপমাত্রা আরও হ্রাস পেতে পারে। আগামী তিনদিনে তাপমাত্রা আরও কমে কমবে বলে জানান তিনি।
সরেজমিনে বৃহস্পতিবার দুপুর ২টার দিকে বরিশাল নদীবন্দরে দেখা যায়, মেঘাচ্ছন্ন আকাশ এবং ঘনকুয়াশার কারণে অভ্যন্তরীণ রুটে যাত্রীদের চাপ কমে গেছে। তাছাড়া নির্ধারিত সময়ে নৌ-যান ছেড়ে গেলেও ঘনকুয়াশাকার কারণে গন্তব্যে পৌঁছতে এক থেকে দুই ঘণ্টা বেশি সময় লেগে যাচ্ছে।
অপরদিকে, আকাশ মেঘলা ও ঘনকুয়াশার কারণে বিমান ও সড়ক পথেও কিছুটা ব্যাহত হচ্ছে যানবাহন চলাচল।
পরিবহন চালক এবং যাত্রীরা বলছেন, বরিশালের গৌরনদী, ভুরঘাটা, মাদারীপুর, ভাঙা এলাকার মহাসড়ক দিনের বেলাতেও কুয়াশায় ঢাকা ছিল। বেলা ১২টার পর আকাশ কিছুটা পরিষ্কার হলে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
এদিকে, শীতে শুধু এবং বয়স্ক মানুষের বাড়তি যত্নের পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কনসালটেন্ট ডা. মোস্তফা কামাল বলেন, ‘শীতে মানুষ এলার্জি এবং সর্দি-কাশিসহ নানা ধরনের রোগাক্রান্ত হতে পারে। এজন্য সবসময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন এবং মোটা পোশাক পড়তে হবে।’
বিশেষ করে শিশু এবং বয়স্কদের যত্নের প্রতি বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। শিশুদের ভেজা জায়গায় যেমন রাখা যাবে না, তেমনি সবসময় মোটা কাপড় পরিয়ে রাখতে হবে। বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের ক্ষেত্রে একই দৃষ্টি রাখা জরুরি। প্রয়োজনে তাদের ফুটানো পানি পান করানোর পরামর্শ দেন এই চিকিৎসক।