দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ উপদেষ্টা ফারুক ই আজম (বীর প্রতীক) বলেছেন, বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশ। বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, ভূমিকম্প, অগ্নিকাণ্ড ও স্বাস্থ্যঝুঁকিসহ বহুমাত্রিক চ্যালেঞ্জ আমাদের মোকাবেলা করতে হয়। বিগত পাঁচ দশকে বাংলাদেশ প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করেছে।
রোববার (৩১ আগস্ট) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় কর্তৃক আয়োজিত সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
সেমিনারের বিষয়বস্তু ছিল ‘দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার সক্ষমতা যাচাইকরণ’। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কে এম আব্দুল ওয়াদুদ।
ফারুক ই আজম বলেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আমাদের জাতীয় সক্ষমতা মূল্যায়নের এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এটি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, জলবায়ু পরিবর্তন এবং উচ্চ শিক্ষা ও গবেষণার মধ্যে একটি সেতুবন্ধন রচনা করবে।
জলবায়ু পরিবর্তন এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিষয় নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা শিক্ষা কার্যক্রম শেষে যেনো ভবিষ্যতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে নিয়োজিত হতে পারে এ বিষয়ের ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
উপদেষ্টা বলেন, দুর্যোগ মোকাবিলায় মানুষের সচেতনতা যেমন বৃদ্ধি পেয়েছে, ঠিক তেমনিভাবে দুর্যোগ মোকাবিলার অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও দুর্যোগ প্রস্তুতির তথ্য দ্রুত সবার কাছে পৌঁছে যাচ্ছে, যা বাংলাদেশের জন্য একটি বড় সাফল্য। এছাড়া ঘূর্ণিঝড় এবং বন্যা মোকাবিলায় সক্ষমতা অর্জন করায় বিশ্বে বাংলাদেশ প্রশংসিত হয়েছে।
তিনি বলেন, প্রকৃতি তার নিজের গতিতে চলে। তাই প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রতিরোধ করার শক্তি যেমন মানুষের হাতে নেই, তেমনি আত্মরক্ষার কৌশলও জানা নেই। তবে দুর্যোগ মোকাবিলা করার প্রস্তুতি ও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করলে অনেক ক্ষতি থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। এজন্য গণসচেতনতা যেমন দরকার, তেমনি দরকার ঝড়-জলোচ্ছ্বাস ও বন্যা থেকে রক্ষা পাওয়ার মতো অবকাঠামো নির্মাণ, উঁচু বাঁধ তৈরি, প্রয়োজনীয় আশ্রয়কেন্দ্র এবং সবুজবেষ্টনী তৈরি করা।
- আরও পড়ুন
- প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরকে আরও গতিশীল করতে চান নতুন সচিব
- অতিরিক্ত ডিআইজি মোজাম্মেলসহ তার স্ত্রীর সম্পদ বিবরণী চেয়েছে দুদক
ফারুক ই আজম বলেন, দুর্যোগ মোকাবেলায় ৭৬ হাজারের বেশি প্রশিক্ষিত স্বেচ্ছাসেবক কমিউনিটি পর্যায়ে কাজ করছে।
সেমিনারে আলোচকরা স্কুল পর্যায়ে থেকেই পাঠ্যক্রমে দুর্যোগ মোকাবেলার সম্পর্কে সম্যক ধারণা অন্তর্ভুক্তির জন্য মত প্রকাশ করেন এবং ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতিরোধে ভবন নির্মাণ কোড এবং প্রচলিত আইন কঠোরভাবে প্রয়োগের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
উপদেষ্টা বলেন, আজকের এই সেমিনারের সুপারিশসমূহ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনাকে আরও বাস্তবমুখী, সমন্বিত এবং যুগোপযোগী করে তুলবে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে সেমিনারে দুর্যোগ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. রেজওয়ানুর রহমানসহ অন্যান্য কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষকরা বক্তৃতা দেন।
আরএমএম/এনএইচআর/জিকেএস