দেশবাসীকে বিশেষ দোয়ার আহ্বান জামায়াত আমিরের

2 months ago 26
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান আগামীকাল ২৮ মে বুধবার দেশে ও প্রবাসের সবাইকে বিশেষভাবে দোয়া করার অনুরোধ জানিয়েছেন। মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় খালাস পাওয়া জামায়াত নেতা এ টি এম আজহারুল ইসলামের বিষয়ে এ দোয়া চান তিনি। মঙ্গলবার (২৭ মে) জোহর নামাজের পর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে সংগঠনের নেতাকর্মী ও মুসল্লিদের সঙ্গে নিয়ে শোকরানা নামাজ আদায় শেষে দেওয়া বক্তব্যে এ অনুরোধ জানান তিনি। জামায়াত আমির বলেন, আপনারা দোয়া করবেন, আমাদের ভাই (এ টিএম আজহার) যেন মুক্তি পেয়ে আমাদের মাঝে ফিরে আসেন। দোয়া করবেন আল্লাহ যেন তাকে দীর্ঘ হায়াত দান করেন। দোয়া করবেন আল্লাহ তাআলা যেন তাকে শেফায়ে কামেলা দান করেন। দোয়া করবেন তিনি যেন ফিরে এসে তার রূহানি শক্তি দিয়ে মজবুতভাবে দ্বীনের কাজ করতে পারেন। আল্লাহ তায়ালা যেন তার দ্বারা এ দেশের মানুষের কল্যাণ সাধন করান। দেশবাসী ও প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, দেশে ও বিদেশে যারা আছেন, তাদের অনুরোধ করি তাসবিহ ও ইস্তেকফার মাধ্যমে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করবেন। আল্লাহর শুকরিয়া আদায় স্বরূপ অভাবী মানুষের মুখে খাবার তুলে দিন। আল্লাহর শুকরিয়া আদায়ের এটা একটা বিশাল মাধ্যম। নিজ নিজ তাওফিক অনুযায়ী এতিম ও মিছকিনদের মুখে খাবার তুলে দেওয়ার চেষ্টা করি। ডা. শফিকুর রহমান বলেন, এ রায়কে কেন্দ্র করে আমরা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করব না। এখানে যারা হাজির আছেন, সবার প্রতি এটাই আমার অনুরোধ। আমরা মহান আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করব। এ কাজ করতে গিয়ে আমাদের যেসব ভুলভ্রান্তি হয়েছে, আমরা তার জন্য আল্লাহর দরবারে পানাহ চাই। কৃতজ্ঞ জানিয়ে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আমরা যেন সবাই হাতে হাত রেখে ইমানদার মুসলমান হিসেবে আমাদের এই ভাইয়ের জন্য যারা দোয়া করেছেন, বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করেছেন౼আইনজীবী, সাংবাদিকসহ সবার কাছে আমরা কৃতজ্ঞ। বিশেষভাবে কৃতজ্ঞ জানাই জুলাই বিপ্লবে আত্মদানকারীদের, আহত ও পঙ্গুত্ববরণকারীদের; যাদের কারণে আজ বিচারটা সহজ হয়ে গেছে। আমরা তাদের সবার কাছে কৃতজ্ঞ। যারা নিহত হয়েছেন আল্লাহ তাআলা তাদের শহীদ হিসেবে কবুল করুন। আর যারা পঙ্গুত্ববরণ করেছেন, আহত হয়েছেন, আল্লাহ তাআলা সবাইকে ক্ষমা করে দিন। তিনি আরও বলেন, সম্মানিত মুসল্লিয়ানে কেরাম, আমরা মহান আল্লাহর দরবারে অসংখ্য শুকরিয়া আদায় করছি। আমাদের একজন ভাই সুদীর্ঘ ১৪ বছর কারাগারের ভেতরে আছেন। মাথার ওপরে মৃত্যুর পরওয়ানা। আল্লাহর এই বান্দা সব সময় আল্লাহর ওপর তাওয়াক্কুল ছিলেন। তিনি কখনো আল্লাহর ওপর থেকে তাওয়াক্কুল হারাননি। এই বয়সে তিনি চরম ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছেন। তিনি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল ছিলেন। তাকে পায়ে বেড়ি পরিয়ে ও হাতে হ্যান্ডকাফ দিয়ে কারাগার থেকে আদালতে নেওয়া হয়েছে। তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা সত্ত্বেও তিনি সব সময় হাসিমুখে থাকেন। সব জুলুম-নির্যাতন তিনি সন্তুষ্টচিত্তে কবুল করেছেন। তিনি জানতেন তার বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো ষোলআনা মিথ্যা। তার মতো দ্বীনের একজন খাদেমকে মানবতার কল্যাণ থেকে বিরত রাখার মানবতাবিরোধী মিথ্যা অপরাধের দায়ে বন্দি করে রাখা হয়েছে। তিনি বলেন, আমাদের শীর্ষস্থানীয় ১১ জন দায়িত্বশীলের কয়েকজনকে ফাঁসি দিয়ে এবং কয়েকজনকে কারাগারে কষ্ট দিয়ে ঠান্ডা মাথায় খুন করা হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বিশেষ মেহেরবানি করে প্রিয় ভাই এ টি এম আজহারুল ইসলামকে বাঁচিয়ে রেখেছেন। এটি আল্লাহ তাআলার কুদরত। এভাবে জুলুমের শিকার হয়ে জেলখানায় আমাদের নেতারা, সহকর্মী, সাধারণ জনতা, আলেম-ওলামাসহ যাদেরই হত্যা করা হয়েছে, সবার জন্য আল্লাহর দরবারে দোয়া করি, তাদের পরিবারের জন্যও দোয়া করি।
Read Entire Article