গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্রের বিভিন্ন সংস্থার মধ্যে গন্ডগোল লাগানোর চেষ্টা করেছেন বলে জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রাষ্ট্রপক্ষের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। তিনি বলেছেন, ‘শেখ হাসিনা রাষ্ট্রের মধ্যে একটি সিভিল ওয়ার (গৃহযুদ্ধ) বাঁধানোর চেষ্টা করেছেন। সেনাবাহিনীকে বলার চেষ্টা করেছেন, তোমাদের অফিসারদের বিচার হয়, তোমরা কেন রুখে দাঁড়াচ্ছ না?’
রাষ্ট্রপক্ষের শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে হওয়া মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার রায় ঘোষণার জন্য আগামী ১৩ নভেম্বর দিন ঠিক করেন। পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তাজুল ইসলাম। এরআগে শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে মামলায় যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়েছে। মামলার অপর দুই আসামি হলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। এর মধ্যে মামুন নিজের দোষ স্বীকার করে ‘অ্যাপ্রুভার’ (রাজসাক্ষী) হয়েছেন।
ট্রাইব্যুনালে তাজুল ইসলাম বলেন, ‘যারা এখানে আসামি হয়েছেন, তাদের (শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান) মধ্যে কোনো অনুশোচনা নেই। দুনিয়ার সবাই জানে অপরাধ সংঘটিত হয়েছে, তিনিও (শেখ হাসিনা) জানেন, কিন্তু কখনোই তার মধ্যে কোনো ধরনের অনুশোচনা নেই। উল্টো যারা তার বিরুদ্ধে মামলা করেছেন, সাক্ষ্য দিচ্ছেন, তাদের হত্যা করার হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন। তাদের বাড়িঘর জালিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন।’
চিফ প্রসিকিউটর বলেন, ‘সর্বশেষে তিনি (শেখ হাসিনা) রাষ্ট্রের বিভিন্ন সংস্থার মধ্যে গন্ডগোল লাগানোর চেষ্টা করেছেন। তিনি সেনাবাহিনীকে উসকে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। সেনাবাহিনীকে বলার চেষ্টা করেছেন, তোমাদের অফিসারদের বিচার হয়, তোমরা কেন রুখে দাঁড়াচ্ছ না? রাষ্ট্রের মধ্যে একটা সিভিল ওয়ার (গৃহযুদ্ধ) লাগানোর চেষ্টা করেছেন। কিন্তু বাংলাদেশের দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী সেই পাতা ফাঁদে পা দেয়নি। দেশের জনগণ সেই ফাঁদে পা দেয়নি।’
তাজুল ইসলাম আরও বলেন, এরকম নিষ্ঠুর হত্যাযজ্ঞ, পুরো প্রজন্মকে হত্যার চেষ্টা, ৩৫ হাজার মানুষকে আহত করা, অঙ্গহানি করা—এরপরও সামান্যতম অনুশোচনা না থাকা। এখানে শিশু ছিল, নারী ছিল, মজুর ছিল, ছাত্র ছিল, তাদের হত্যা করতে তার (হাসিনা) বুক কাঁপেনি। এখন পর্যন্ত তার মধ্যে কোনো অনুশোচনা নেই। সুতরাং সর্বোচ্চ শাস্তিটা তার অবশ্যই প্রাপ্য।
এফএইচ/এমএমকে/জেআইএম