দেশের উন্নয়ন সহ্য করতে না পেরে ষড়যন্ত্র করছে বিএনপি

3 months ago 50

দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতি সহ্য হচ্ছে না, তাই বিএনপি নানান ষড়যন্ত্রে লিপ্ত বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।

তিনি বলেন, ‘ক্ষমতার হালুয়া-রুটির ভাগ-বাঁটোয়ারার জন্য মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ যারা বিএনপি গঠন করেছিলেন, ওয়ান-ইলেভেন পরবর্তী ২ বছর ও একাধারে নির্বাচিত আওয়ামী লীগ সরকারের চার মেয়াদসহ ২২ বছর (বর্তমান সরকারের মেয়াদসহ) ধরে ক্ষমতার বাইরে থাকা তাদের পক্ষে এখন আর সহ্য হচ্ছে না। এমনকি তারা সরকারের কোনো উন্নয়ন-অগ্রগতিও সহ্য করতে পারছে না। সে কারণে তারা এখন নানান ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।’

শুক্রবার (৭ জুন) চট্টগ্রাম থিয়েটার ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে আয়োজিত আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি। ঐতিহাসিক ৬ দফা দিবস স্মরণে আলোচনা সভার আয়োজন করে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ।

আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বৃহস্পতিবার সংসদে ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণা হয়েছে। গত ১৫ বছরে বাজেটের অংক সাড়ে ১১ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। কোনো একটা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের টার্নওভার বৃদ্ধি পাওয়া মানে সেই ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভালো চলছে। দেশের বাজেটের আকার যখন বৃদ্ধি পায় তখন বুঝতে হবে দেশ উন্নতি ও সমৃদ্ধির দিকে যাচ্ছে। বিএনপি-জামায়াত বাজেট ঘোষণার আগেই বিবৃতি রেডি করে রাখে। গত ১৫বছরের তাদের বিবৃতি-বক্তব্য যদি দেখেন তখন হুবহু মিল খুঁজে পাবেন।’

ঐতিহাসিক ৬ দফা প্রসঙ্গে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘পূর্ব বাংলার (বাংলাদেশ) মানুষের মধ্যে স্বাধীনতার পক্ষে মনন তৈরি করার জন্যই বঙ্গবন্ধু ছয় দফা ঘোষণা করেছিলেন। ছয় দফার পক্ষে মানুষ ব্যাপক সাড়া দেয়। বঙ্গবন্ধু ছয় দফা নিয়ে সারাদেশ ঘুরে বেড়ান, যেখানেই বক্তব্য দেন সেখান থেকে গ্রেফতার করা হতো। উনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু মুক্তিলাভ করেন। মুক্তি পাবার পর আইয়ুব খান পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার প্রস্তাব দেন বঙ্গবন্ধুকে। বঙ্গবন্ধু সে প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন।’

আওয়ামী লীগের এ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিশ্বের ২৭ দেশকে পেছনে ফেলে বর্তমানে বাংলাদেশ পৃথিবীর ৩৩তম অর্থনীতির দেশ। ১৫ বছর আগে ছিল পৃথিবীর ৬০তম অর্থনীতির দেশ। এই ২৭ দেশের মধ্যে মালয়েশিয়া এবং সিঙ্গাপুরও আছে। জিডিপির আকারে আমরা তাদেরকেও অতিক্রম করেছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্ব ও চিন্তা এবং কঠোর পরিশ্রমের কারণেই এগুলো সম্ভব হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘আপনরা জানেন ২০১৪ ও ২০১৮ সালে সংকট তৈরি করা হয়েছে। ২০২৪ সালেও সংকট তৈরির অপচেষ্টা ছিল। কিন্তু সব ষড়যন্ত্রকে মোকাবিলা করে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার দৃঢ়তার কারণে আওয়ামী লীগ আজকে পরপর চারবার রাষ্ট্র ক্ষমতায়। বিরোধী রাজনৈতিক শক্তি শেখ হাসিনাকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হয়েছে। সে কারণে তারা ষড়যন্ত্রের পথ বেচে নিয়েছে।’

দেশে বুদ্ধিজীবী কয়েক প্রকার উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘একটা হচ্ছে সত্যিকারের বিশেষজ্ঞ, আরেকটা হচ্ছে বিশেষ কারণে অজ্ঞ- বিশেষজ্ঞ, আরেকটা সব বিষয়ে বিজ্ঞ- বিশেষজ্ঞ। কেউ পড়েছেন আইন বিষয়ে, তিনি অর্থনীতি কিংবা পরিবেশ বিশেষজ্ঞ, কেউ পড়েছেন অর্থনীতি- উনি আবার তেল গ্যাসের বিশেষজ্ঞ। এই কদিন দেখবেন এই বিশেষজ্ঞদের বক্তব্যে টেলিভিশনের পর্দা গরম হয়ে যাচ্ছে। তারা এবং বিএনপি-জামায়াত বলতে শুরু করেছে এই বাজেট জনগণের কোনো কল্যাণে আসবে না।’

তিনি বলেন, ‘বাজেট জনগণের কল্যাণে যদি না আসে, তাহলে গত ১৫ বছরে দারিদ্র্যতা ৪০ শতাংশ থেকে নেমে ১৮ দশমিক ৭ শতাংশে আসলো কীভাবে? যেখানে অতিদরিদ্র ছিল ২২ শতাংশ, সেখান থেকে ৫ দশমিক ৭ শতাংশে আসলো কীভাবে? এটি সম্ভব হয়েছে বাজেট বাস্তবায়নের কারণেই। এরা আসলে চোখ থাকতেও অন্ধ, কান থাকতেও বধির। ওদের চোখ এবং কান যেন মহান আল্লাহ ঠিক করে দেন সেই প্রার্থনা করি।’

আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহাতাব উদ্দিন চৌধুরী। চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সাবেক মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন, সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট ইব্রাহীম হোসেন চৌধুরী বাবুল, জাতীয় শ্রমিকলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সফর আলী, সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক সংসদ সদস্য নোমান আল মাহমুদ, কাউন্সিলর ড. নিছার উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু প্রমুখ।

এমডিআইএইচ/কেএসআর/এমএস

Read Entire Article