দৈনন্দিন যে ৫ ভুলে নীরবে বেড়ে যাচ্ছে টাকের ঝুঁকি

5 hours ago 3
সকালবেলা আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে হঠাৎ লক্ষ্য করলেন—চুল পাতলা হয়ে যাচ্ছে? স্ক্যাল্পটা একটু বেশিই যেন চোখে পড়ছে? এমন অভিজ্ঞতা আজকাল অনেক পুরুষেরই। চুল পড়া একটা স্বাভাবিক প্রক্রিয়া হলেও, যখন পড়ার হার চুল গজানোর চেয়ে বেশি হয়ে যায়, তখনই শুরু হয় প্রকৃত সমস্যা। আরও পড়ুন : মাথায় টাক পড়ছে? ৫ অসুখের লক্ষণ হতে পারে চুল পড়া আরও পড়ুন : হাত-পায়ের ৫ লক্ষণে বুঝে নিন লিভারে সমস্যা ভুগছেন কি না বেশিরভাগ নারী চুলের যত্নে যতটা সচেতন, অনেক পুরুষই কিন্তু সে পথে হাঁটেন না। তার ওপর কিছু দৈনন্দিন ভুল অভ্যাস ধীরে ধীরে চুলের শত্রুতে পরিণত হয়। আসুন জেনে নিই এমন ৫টি সাধারণ অভ্যাস যা চুল পড়া বাড়িয়ে দিতে পারে কয়েকগুণ। অতিরিক্ত চুলের পণ্য ব্যবহার চুলের পণ্য ব্যবহার করা যাবে না এমন নয়। কিন্তু অবশ্যই ভালো মানের পণ্য সীমিত পরিমাণে ব্যবহার করা উচিত, যা চুলকে পুষ্টি দেয়। যেমন ব্লিচ বা কালার চুলের প্রয়োজনীয় তেল এবং পুষ্টি নষ্ট করে, যার ফলে চুল ভেঙে যায় এবং চুলের ফোলিকল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ড্রাই শ্যাম্পু জরুরি সময় কাজে লাগতে পারে, তবে বেশি বেশি ব্যবহার করলে তা চুলের ফোলিকল বন্ধ করে দিতে পারে। নিয়মিত শ্যাম্পু করলে চুল পরিষ্কার হয়, স্কাল্পের মৃত চামড়া দূর হয় এবং পড়ে যাওয়া চুলের জায়গায় নতুন চুল জন্ম নিতে পারে। খাদ্যাভ্যাস পুষ্টি আপনার শরীরের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ, এবং চুলও এর বাইরে নয়। চুলের ফোলিকলের ভালো বৃদ্ধির জন্য প্রোটিন (কেরাটিন), ভিটামিন, খনিজ ও পানি দরকার। যখন আপনার শরীরে এই পুষ্টির অভাব হয়, তখন শরীর জরুরি কাজগুলোকেই অগ্রাধিকার দেয়, আর চুলের উন্নতি পিছিয়ে যায়। ফলে চুল  ম্লান, ফিকে হয়ে যায় বা নতুন চুল জন্মাতে পারে না। চুলে অতিরিক্ত তাপমাত্রার ব্যবহার চুলকে সোজা থেকে কার্লি বা কার্লি থেকে সোজা করার জন্য হিটিং টুলস যেমন ফ্ল্যাট আয়রন, ব্লো ড্রায়ার, কার্লিং আয়রন ব্যবহার করা যায়। তবে খুব বেশি ব্যবহার করলে চুল ভেঙে যায় এবং ঝরার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। বিশেষ করে যখন তাপমাত্রা ৩৪৭ ডিগ্রি ফারেনহাইটের উপরে চলে যায়, চুল অনেক বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ভালো খবর হলো, সাধারণত চুলের ফোলিকল ক্ষতিগ্রস্ত হয় না, তাই সময়ের সাথে নতুন চুল জন্ম নেয়। মদপান মদ্যপান চুলের জন্য মোটেই ভালো নয়, এটা আপনার শরীরের সব জায়গায় প্রভাব ফেলে, চুলসহ। মদ ডিহাইড্রেশন (পানি কমে যাওয়া) ঘটায়, যার ফলে চুল শুষ্ক ও ভঙ্গুর হয়। চুলের ফোলিকলে পর্যাপ্ত পানি না গেলে ক্ষতি হয়, নতুন চুল জন্মানো কঠিন হয়। কেরাটিন হলো চুলের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রোটিন। মদ শরীরে অ্যাসিডিটি বাড়ায়, তাই শরীর কেরাটিন ব্যবহার করে সেটা কমানোর চেষ্টা করে, যার ফলে চুলের জন্য প্রয়োজনীয় কেরাটিন কমে যায়। মদ সুতরাং ভালো ঘুমে বাধা দেয়, আর ঘুম কম হলে চুল ভালো হয় না। ধূমপান মদ্যপানের মতোই ধূমপানও চুলের ক্ষতি করে। সিগারেটে থাকা নিকোটিন চুল পড়ার হার বাড়ায় কারণ এটি চুলের ফোলিকলে রক্ত চলাচল কমিয়ে দেয়। রক্ত সঠিক পরিমাণে না গেলে চুল ভালোমতো বেড়ে ওঠে না। এছাড়াও ধূমপান অ্যান্ড্রোজেন নামক হরমোনের উৎপাদন বাড়ায়, যা চুলের ফোলিকলকে ছোট করে দেয়, ফলে চুল পাতলা হয়ে পড়ে এবং ঝরে যায়। টাইট বা আঁটসাঁট চুলের স্টাইল যেমন টাইট পনিটেইল, কর্নরো, বান, ব্রেইড, পিগটেইল—এগুলো চুলের ওপর টান সৃষ্টি করে। এই টান ‘ট্র্যাকশন অ্যালোপেসিয়া’ নামে একটি চুল ঝরার কারণ হতে পারে, যেখানে চুল ভেঙে যায় এবং চুলের ফোলিকল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর ফলে চুল আবার জন্ম নেয় না এবং চুল পড়া স্থায়ী হতে পারে। চুল পড়া রোধে দামি প্রোডাক্ট বা চিকিৎসার আগে দরকার নিজের অভ্যাসগুলো ঠিক করা। আপনি হয়তো প্রতিদিনই অজান্তে এমন কিছু করছেন, যা চুলের ক্ষতি বাড়িয়ে দিচ্ছে। উপরের ৫টি অভ্যাসে পরিবর্তন আনলেই আপনি দেখতে পাবেন উল্লেখযোগ্য পার্থক্য। আরও পড়ুন : স্বামী-স্ত্রীর রক্তের গ্রুপ এক হলে কী সমস্যা হয়? যা বলছেন চিকিৎসক আরও পড়ুন : খালি পেটে দুধ চা খাচ্ছেন? জেনে নিন পুষ্টিবিদের সতর্কবার্তা চুলের যত্ন নিন—নিজের আত্মবিশ্বাসের জন্য, নিজের পরিচয়ের জন্য। সূত্র : হেয়ার কেয়ার
Read Entire Article