দ্রুত বিচার ও সংস্কারের রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি নাহিদের
সরকারকে দ্রুত বিচার ও সংস্কারের রোডম্যাপ ঘোষণা করার দাবি জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
সোমবার (১০ মার্চ) রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শহীদ পরিবার এবং আহতদের নিয়ে এনসিপির ইফতার মাহফিলে এ দাবি জানান তিনি।
নাহিদ ইসলাম বলেন, সরকারকে বলব দ্রুত বিচার ও সংস্কারের রোডম্যাপ ঘোষণা করতে হবে। কতদিনের মধ্যে কোন প্রক্রিয়ায় আমরা দৃশ্যমান বিচার কার্যক্রম দেখতে পারব এবং দৃশ্যমান সংস্কার আমরা বাস্তবায়ন করতে পারব, সেটার সুস্পষ্ট রোডম্যাপ অবিলম্বে ঘোষণা করতে হবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে আমাদের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস। তাকে আমরা আমন্ত্রণ-আহ্বান জানিয়ে সরকারের প্রধান উপদেষ্টা করেছিলাম, অন্যান্য উপদেষ্টাবৃন্দ রয়েছেন, সেনাপ্রধান রয়েছেন। তারা প্রত্যেকে কিন্তু কমিটমেন্ট দিয়েছিলেন মানুষের জানমালের নিরাপত্তা এবং বিচারের দায়িত্ব তারা নিচ্ছেন। ফলে এই কমিটমেন্ট থেকে কিন্তু তারা দূরে সরে যেতে পারবেন না, জনগণের সামনে কিন্তু দাঁড়াতে হবে। ফলে আমরা কিন্তু ‘কড়ায় গণ্ডায়’ জবাবদিহিতা নেবো আমাদের বিচার কতটুকু আদায় হলো, সংস্কার কতটুকু আদায় হলো।
নির্বাচনের বিষয় উল্লেখ করে নাহিদ ইসলাম বলেন, আমাদের বলা হচ্ছে, আমরা নাকি নির্বাচন পেছানোর রাজনীতি করছি। খুব পরিষ্কারভাবে পাল্টা আপনাদের বলতে চাই, আপনারা বিচার ও সংস্কার পেছানোর রাজনীতি করবেন না। বিচার ও সংস্কারের প্রতি ঐক্যমত পোষণ করুন, নির্বাচন আমরা আপনাদের করে দিতে সহায়তা করব।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো যদি নির্বাচনের জন্য এত তাড়াহুড়ো করে, ভোট চাইতে গেলে কিন্তু সেই জবাবদিহিতা তাদের দিতে হবে। আমরা বলব, বাংলাদেশে যে ঐক্যমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে আমরা সেই ঐক্যমত্য ধরে রাখতে চাই।
নাহিদ বলেন, আমরা নির্বাচনের বিরুদ্ধে না, বরং নির্বাচনে অংশগ্রহণ করব বলেই নিজেরা একটি রাজনৈতিক দল গঠন করেছি। কিন্তু আমরা বলছি বিচার সংস্কার এবং নির্বাচনের ক্ষেত্রে বলেছি গণপরিষদ নির্বাচন, কারণ এই জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে এই সংবিধান অকার্যকর ব্যর্থ প্রমাণিত হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা আপনাদের কাতারে নেমে এসেছি। আমরা নতুন একটি রাজনৈতিক দল গঠন করেছি। কারণ আমরা মনে করি জুলাই গণঅভ্যুত্থানের যে আকাঙ্ক্ষা সে আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের জন্য আমরা কারো ওপর নির্ভর করতে চাই না, আমরা নিজেরাই মাঠে নেমে দাবি বাস্তবায়ন করতে চাই। শহীদ পরিবার এবং আহতসহ আমাদের সবার এই মুহূর্তে জরুরি দাবি- আমরা সবাই বিচার এবং সংস্কারের কথা বলছি। পাঁচ আগস্ট পরবর্তী এই নতুন বাংলাদেশে যে সরকার গঠিত হয়েছে এবং সামনে যারা রাজনীতি করতে চাচ্ছে- সবার ন্যায্যতা হচ্ছে শহীদ পরিবার এবং আহত যোদ্ধারা। ফলে তাদের মনের আকাঙ্ক্ষা আমাদের বুঝতে হবে।
নাহিদ বলেন, শহীদ পরিবার শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের খুনিদের আসামি করে শত শত মামলা করেছে। যদি এর বিচার ছাড়া আরেকটি সরকার চলে আসে তাহলে কী নিশ্চয়তা আছে, আওয়ামী লীগকে আবার এই বাংলাদেশে পুনর্বাসিত করা হবে না? অবশ্যই রাজনৈতিক দলগুলোকে এবং সরকারকে পরিষ্কার করতে হবে আওয়ামী লীগের ফয়সালা কী হবে।
তিনি বলেন, আমরা মনে করি পাঁচ আগস্ট বাংলাদেশের জনগণ আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে রায় দিয়ে দিয়েছে। বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ ফ্যাসিস্ট রাজনীতির আর কোনো জায়গা হবে না, হবে না, হবে না।
দ্রুতই রাজপথে নামার ঘোষণা দিয়ে নাহিদ বলেন, আমরা সম্মিলিতভাবে বিচার সংস্কার এবং গণপরিষদ নির্বাচন আদায়ে খুব দ্রুতই আবার রাজপথে নামব। জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে একটি সাংবিধানিক স্বীকৃতি দিয়ে একটি নতুন সংবিধান জাতিকে উপহার দিয়ে যাব ইনশাআল্লাহ।