ধরাছোঁয়ার বাইরে বেশিরভাগ আসামি

6 hours ago 4

গাজীপুরের দাখিনখান গ্রামে সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের বাড়িতে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় প্রায় দুই সপ্তাহ পার হলেও এখনো অনেক আসামি গ্রেপ্তার হয়নি। 

হামলার ঘটনায় করা মামলায় ১৩৯ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতপরিচয় ২০০ থেকে ৩০০ জনকে আসামি করা হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্রের তথ্যানুযায়ী, এ পর্যন্ত ১৯৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যার মধ্যে মাত্র ৪০ থেকে ৪৫ জন এজাহারভুক্ত আসামি।

শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দাখিনখান গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি। অধিকাংশ বাড়ি তালাবদ্ধ, পুরুষরা প্রায় সবাই গা-ঢাকা দিয়েছে। স্থানীয় এক বৃদ্ধা বলেন, প্রতিদিনই পুলিশ আসামিদের ধরতে এলাকায় তল্লাশি চালাচ্ছে। তাই অনেকেই পলাতক।

গ্রামের একাধিক ব্যক্তি জানিয়েছেন, সাবেক মন্ত্রীর আত্মীয়স্বজন ও তাদের অনুসারীরা দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় দখলবাজি, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল। ক্ষমতার ছত্রছায়ায় তারা বেপরোয়া হয়ে উঠেছিল। 

হামলার ঘটনায় জড়িতদের মধ্যে কয়েকজন হলেন- মন্ত্রীর দুই ভাতিজা আমজাদ মোল্লা (৪০) ও মনির মোল্লা (৪৮), তাদের সহযোগী হিমেল সরকার (২৮), আরিফ চৌধুরী (৩০), স্থানীয় কাউন্সিলরের আত্মীয় শাওন মোল্লা (২৮) এবং ভাইয়া বাহিনীর তিন সদস্য আবু জাহিদ, আবু সাইদ ও হারুন অর রশিদ। এর মধ্যে দাখিনখান গ্রামের মৃত ওমর আলীর ছেলে আবু জাহিদ গাজীপুরের একটি স্বায়ত্তশাসিত সংস্থায় চাকরি করেন। সাবেক মন্ত্রীর প্রভাবেই তিনি এই চাকরি পান এবং ক্ষমতার অপব্যবহার করে ঘুষ, চাঁদাবাজি ও জমি দখলের মতো অপরাধ করতেন অবলীলায়।

স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, হামলায় জড়িত অনেকেই ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিভিন্ন দপ্তরে প্রভাব বিস্তার করত। এদের মধ্যে শুধু আমজাদ মোল্লাই গ্রেপ্তার হয়েছে। পুলিশ বেশির ভাগ আসামিকে ধরতে না পারায় এবং এদের কেউ কেউ মাঝে মাঝে এলাকায় আসায় স্থানীয়দের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জানান, এরই মধ্যে ১৯৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আদালত ৩২ জনের পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। জিজ্ঞাসাবাদে কয়েকজনের কাছে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। পর্যায়ক্রমে অন্যদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

উল্লেখ্য, গত ৭ ফেব্রুয়ারি রাতে সাবেক মন্ত্রী মোজাম্মেল হকের বাড়িতে লুটপাট চলছে- এমন সংবাদ ছড়িয়ে ছাত্র-জনতাকে সাহায্যের জন্য ডেকে আনা হয়। শিক্ষার্থীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছলে মসজিদের মাইকে ডাকাত এসেছে বলে ঘোষণা দিয়ে তাদের ওপর হামলা চালান স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। হামলায় ৫০ জনের বেশি আহত হন। এর মধ্যে শিক্ষার্থী আবুল কাশেম (১৭) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

Read Entire Article