‘ধর্ষকের বিচার করতে ব্যর্থ হলে জনগণের হাতে ছেড়ে দিন’

2 hours ago 4

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেত্রকোনা জেলা কমিটির সংগঠক সাবাবা হক বলেছেন, ধর্ষকদের বিচার করতে পুলিশ প্রশাসন ব্যর্থ হলে আমাদের জনগণের হাতে সেই বিচার ছেড়ে দিন। আমরা যতটুকু পারি ধর্ষকদের বিচার করব। পুলিশ ব্যর্থ হলে সামরিক বাহিনীর হাতে দায়িত্ব দেন। তারপরও যদি আইনের প্রয়োগ করতে না পারেন তাহলে এ দেশের জনগণ ধর্ষকের বিচারের জন্য উঠেপড়ে লাগবে। 

সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জেলা প্রেস ক্লাবের সামনে সারা দেশে সংগঠিত ধর্ষণের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলে এসব কথা বলেন তিনি।

সাবাবা বলেন, শিক্ষার্থীরা যদি স্বৈরাচারী শেখ হাসিনাকে এ দেশ থেকে হটাতে পারে, তাহলে ছাত্রসমাজ ধর্ষকদেরও উপযুক্ত বিচার করতে পারবে ইনশাআল্লাহ। পুলিশ প্রশাসনকে বার্তা দিতে চাই, আপনারা আইনের যথপোযুক্ত প্রয়োগ নিশ্চিত করেন। না হয় আপনাদের আখের গোছানো বাহিনী বিলুপ্ত করে দেওয়ার জন্য বলছি। আমরা ধর্ষকদের ক্রসফায়ার চাই না, তাদের জনগণের সম্মুখে রাজপথে বিচার করতে হবে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেত্রকোনা জেলা কমিটির মুখপাত্র সাবা সরকার তৌওশী বলেন, ২৪-এর আন্দোলনে আমরা ছেলেমেয়ে সবাই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আন্দোলন-সংগ্রাম করেছি। সমান অধিকার নিয়ে দেশ স্বাধীন করেছি। তাহলে আজকে আমরা আমাদের দেশে কেন নিরাপদ নই? এই প্রশ্নটা প্রশাসনের কাছে। আমরা কেন আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারছি না? আজকে আমরা কেন রাস্তায় বের হতে পারছি না? প্রতিদিন মেয়েরা ধর্ষণের শিকার হচ্ছে।

জাতীয় নাগরিক কমিটি নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার প্রতিনিধি রাফায়েল হোসেন সৌরভ বলেন, ইসলামে নারীদের সর্বোচ্চ সম্মাননা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বর্তমানে ধর্ষণ একটি মহামারি আকার ধারণ করেছে। তার বিচার সঠিকভাবে হচ্ছে না। অপরাধীরা পার পেয়ে যাচ্ছে। আমরা চাই এর সমাধান হোক। আর কেউ যেন ধর্ষিত না হয়। প্রশাসন যেন এ বিষয়ে সঠিক পদক্ষেপ নেয়। 

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা কমিটির যুগ্ম সদস্য সচিব নাফিউর রহমান বলেন, অনেকেই ভাবছে সরকার পতনের ফলে ধর্ষণ বেড়েছে। কিন্তু আমরা জন্মের পর থেকে দেখছি ধর্ষণ দিনকে দিন বাড়ছেই। এর মূল কারণ একজন ধর্ষকের বিচার না হওয়া। ধর্ষণের শিকার পরিবারকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে টাকা দিয়ে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। বিচার করা হয় না। টাকার বিনিময়ে একজন বোনের ইজ্জত কি ফিরিয়ে দিতে পারে? আমাদের দাবি, একজন ধর্ষকের সঠিক বিচার হোক এবং সেই বিচার যেন হয় মৃত্যুদণ্ড। এই দায়িত্ব প্রশাসনসহ সব নাগরিককে পালন করতে হবে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সংগঠক অনন্যা শেখ বলেন, আমি কি পরব না পরব এটা আমাদের স্বাধীনতা। কখনই এটার জন্য একটা নারী ধর্ষণের শিকার হতে পারে না। তাহলে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা ধর্ষণের শিকার হতো না। অথবা ছোট বাচ্চারাও নির্যাতনের শিকার হতো না। তাই আমাদের অবশ্যই নিজেদের দৃষ্টিভঙ্গি বদলানো উচিত।

এ সময় জেলার সামাজিক সংগঠন উজ্জীবন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মী, জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্যরা ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা ধর্ষণের বিরুদ্ধে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেন।

Read Entire Article