ধর্ষণের শিকার নারীর সঙ্গে অভিযুক্ত ধর্ষকের বিয়ে বন্ধে নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে একটি জনস্বার্থ রিট আবেদন অবশেষে দাখিল করা হয়েছে। খবরটি জানতে পেরে খুবই ভালো লাগলো। বহুবছর ধরেই ধর্ষণের শিকার নারীর সঙ্গে অভিযুক্ত ধর্ষকের বিয়ের ব্যাপারটা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে, লেখালেখি ও উদ্বেগ প্রকাশ করা হচ্ছে। কিন্তু এর বিরুদ্ধে বা একে বন্ধ করার জন্য কোনো আইনি উদ্যোগ নেয়া হয়নি।
সিরাজগঞ্জের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. রাকিবুল হাসান ২২ অক্টোবর, ২০২৫ এই রিটটি দায়ের করেন। রিট আবেদনে বিবাদী করা হয়েছে স্বরাষ্ট্র, আইন, নারী ও শিশু বিষয়ক এবং সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিবদের, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজি), কারা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবং সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে। রিটকারী গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি আসিফ হাসানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে শিগ্গিরই আবেদনটির ওপর শুনানি হতে পারে।
রিটে সাম্প্রতিক সময়ে প্রকাশিত কয়েকটি সংবাদ প্রতিবেদন সংযুক্ত করা হয়েছে, যার মধ্যে অন্যতম হলো কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে গায়ক মাইনুল আহসান নোবেল ও তার বিরুদ্ধে করা ধর্ষণ মামলার বাদীর বিয়ের ঘটনা। মামলাটি এখনো বিচারাধীন অবস্থায় থাকতেই কারা কর্তৃপক্ষের উপস্থিতিতে ওই বিয়ে হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। রিটে আরো বলা হয়েছে, আদালতের অনুমতির পর কারা কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে এই বিয়ের আয়োজন করা হয়েছে। এই ঘটনা সংবাদমাধ্যমে নোবেলের কোনো অর্জনের মতো করে প্রচার করা হয়েছে।
আবেদনে আরও বলা হয়, এটি কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়; অতীতেও একাধিকবার কারাগার বা আদালত প্রাঙ্গণে ধর্ষণের শিকার নারী বা কন্যাশিশুর সঙ্গে অভিযুক্ত ধর্ষকের বিয়ে দেওয়ার নজির রয়েছে। আবেদনকারীর প্রশ্ন,“এমন অমানবিক ও আইনি বিচ্যুতির উদাহরণ আর কতদিন দেখা হবে?” রিট আবেদনে যুক্তি দেওয়া হয়েছে, ধর্ষণের মামলায় বিয়ে ঘটিয়ে অপরাধীদের সামাজিক ও আইনগত বৈধতা দেওয়ার প্রবণতা বেড়ে চলেছে। বিয়ের মাধ্যমে আসামিরা সহজেই জামিন বা অব্যাহতি পেয়ে যায়, কখনও সালিশের মাধ্যমে, কখনও জোরজবরদস্তিতে বা টাকার বিনিময়ে বিষয়টি মীমাংসা করা হয়। ফলে আইনের শাসন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং অপরাধীরা উৎসাহ পাচ্ছে একই ধরনের অপরাধ পুনরাবৃত্তিতে।
শিশু ও নারীর অধিকার নিয়ে যাঁরা কাজ করছেন, তাঁরা সবসময় মানুষকে এই বলে সচেতন করেন যে ধর্ষণের ঘটনায় কোনো সালিশ হয় না। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে মানুষকে বুঝানো হয় তারা যেন ধর্ষণের ঘটনায় সালিশ না করে বিচারিক আদালতে যায়। আইনজীবী শারমিন আক্তার বলেছেন, বাংলাদেশের আইনে কিছু অপরাধ আছে, যেগুলোর কোনো আপস-মীমাংসার সুযোগ নেই। ধর্ষণের ঘটনা তেমনি একটা, যেখানে কোনো আপসের সুযোগ নেই। অথচ দেখতে পারছি, ধর্ষণের শিকার নারীর সঙ্গে ধর্ষকের বিয়ের ঘটনা বিচারিক আদালতে উঠে আসছে। এইরকম ঘটনার সংখ্যা দিনে দিনে বাড়ছে। ২০২০ সালে ফেনীতে এক কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে আটক এক ব্যক্তি ওই কিশোরীকে বিয়ে করতে চাইলে আদালত তাদের বিয়ের সিদ্ধান্ত দেন এবং পরে এই বিয়ের ছুতোয় ওই লোকের জামিনও হয়ে যায়।
যেখানে বাংলাদেশের আইনে বলা হয়েছে, ধর্ষণ বা ধর্ষণের পর হত্যা ঘটনায় কোনো আপস-মীমাংসার প্রশ্নই আসে না, সেখানে এ রকম মামলা ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে উঠছে এবং আপস-মীমাংসার উদ্যোগও নেয়া হচ্ছে। সবাই জানে, এ ক্ষেত্রে শুধু শাস্তির হাত থেকে বাঁচার জন্যই অপরাধী বিয়েকে ‘অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার’ করে। কারণ সে জানে বিয়েতে সম্মত করাতে পারলেই কেস থেকে খালাস বা জামিন পাওয়া যাবে।
আর তাইতো ১৪ বছরের একটি শিশু, ১২ বছর বয়সে ধর্ষণের শিকার হয়ে যখন একটি কন্যাসন্তানের জন্ম দিয়েছিল, তখন তাকে ও তার পরিবারকে নানারকম অপমান ও অসম্মানের মুখোমুখি হতে হয়েছিল। অথচ শিশুটি বুঝতেই পারছিল না এই মা হওয়ার জন্য তার কী দায়? বরং সে তো নির্যাতিত হয়েছিল। পাশবিক নির্যাতনের শিকার হয়ে গর্ভবতী হয়েছে, কিন্তু শিশুটির নিস্তার নাই।
সমাজ নারীর এই অমর্যাদাকে প্রতিহত করুক। ধর্ষকের সঙ্গে ধর্ষণের শিকার শিশু ও নারীর বিয়ের উদ্যোগ বন্ধ হোক। রিটে জোর দিয়ে বলা হয়েছে, “ধর্ষণের শিকার নারীর সঙ্গে অভিযুক্তের বিয়ে কোনোভাবেই ন্যায়বিচারের বিকল্প হতে পারে না। এমন বিয়ে অপরাধকে বৈধতা দেয় না, বরং তা আইনের প্রতি অবমাননা।”
এখন মেয়েটির জন্য অপেক্ষা করছে আরও বড় অসম্মান। এখন তাকে দাঁড় করানো হয়েছে তারই ধর্ষককে বিয়ে করার জন্য। এ কেমন বিচার হলো? এ মামলার আসামি পাড়ার বয়স্ক এক দোকানদার। এই দোকানদারের পরিবারে স্ত্রী ও সন্তান আছে। দুই বছর ধরে লোকটা কারাগারে। এ অবস্থায় দুই পক্ষই একটি আপস রফায় আসতে চাইছে বিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে। মেয়ের পরিবার চাইছে, মেয়েটিকে এই ধর্ষকের হাতে তুলে দিয়ে দায়মুক্ত হতে, আর অপরাধী চাইছে বিয়ে করে জামিন নিয়ে কারাগার থেকে বেরিয়ে আসতে। মাঝখান থেকে সবচাইতে ক্ষতিগ্রস্ত হলো শিশুটি ও শিশুটির সন্তান। তার পক্ষে কি কেউ নেই, পরিবার, সমাজ, বিচার ব্যবস্থা?
ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে এই মামলার যিনি বিচারক ছিলেন, তিনি দরদ দিয়ে বিষয়টি অনুধাবন করে কিশোরীকে বলেন, ‘ওই বয়স্ক লোকটাকে কি তুমি বিয়ে করবে?’ উত্তরে কোনো জবাব না দিয়ে তাকিয়ে ছিল কিশোরীটি। বিচারক খাঁচার ঘরে দাঁড়িয়ে থাকা চুলদাড়ি পাকা এক ব্যক্তির দিকে নির্দেশ করে কিশোরীকে আবার বলেন, ‘পেছনে তাকিয়ে দেখো, ওই চুলদাড়ি পাকা বয়স্ক লোকটাকে তুমি বিয়ে করতে চাও?’
কিশোরীকে বিচারক বলেন, ‘তুমি নিজে বলো। বাসায় গিয়ে ঠান্ডা মাথায় নিজে সিদ্ধান্ত নাও। তুমি কি চাও একটা আসামিকে বিয়ে করতে? তোমার সামনে ভবিষ্যৎ পড়ে আছে। তুমি ছোট একটা মানুষ।’ (২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪, প্রথম আলো) মাননীয় বিচারককে ধন্যবাদ। এ মামলায় তিনি শেষে যে কথাটি বলেছেন, তা অসাধারণ। একপর্যায়ে মেয়েটির বোন, আসামিপক্ষের আইনজীবী ও রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলিদের উদ্দেশে বিচারক বলেন, ‘মেয়েটার পুরো ভবিষ্যৎ সামনে পড়ে আছে। সবাই মিলে কীভাবে মেয়েটিকে প্রতিষ্ঠিত করা যায়, সেই চেষ্টা করুন। ধর্ষকের সঙ্গে বিয়ে দেবেন না। মেয়েটি প্রতিষ্ঠিত হলে অন্যদের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে দাঁড়াবে।’ ধর্ষকের সঙ্গে ধর্ষণের শিকার মেয়েটির বিয়ে কোনো সভ্য সমাজের রীতি হতে পারে না। অথচ সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আদালতের নির্দেশে ধর্ষকের সঙ্গে ভুক্তভোগীর বিয়ের বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে। বিশেষ করে কয়েদখানার গেটে সঙ্গীত শিল্পী নোবেলের বিয়ে ঘটনা বেশ শোরগোল ফেলেছিল। রিটে সেই কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
আমাদের সমাজে ধর্ষণ মামলার আপস-মীমাংসার নামে যেটা হয়, সেটা হলো বিভিন্ন মহল থেকে নানা চাপ দেওয়া ও টাকার লোভ দেখিয়ে মামলা তুলে নেওয়ার একটি উপায় বের করা। সে ক্ষেত্রে এ বিয়ের প্রস্তাবটাও একধরনের প্রলোভন। ধর্ষকের সঙ্গে ধর্ষণের শিকার মেয়েটির বিয়ে দেওয়া মানে মেয়েটিকে আগুনের মধ্যে ছুড়ে ফেলা। অবশ্য ধর্ষণের শিকার মেয়েটির পরিবার দরিদ্র হলে ভাবেন, বিয়ের মাধ্যমে মেয়েটির একটি হিল্লে হবে বা সমাজে টিকে থাকার একটা ব্যবস্থা হবে। তা না হলে ধর্ষণের শিকার মেয়েটিকে নিয়ে পালিয়ে বেড়াতে হবে। ধর্ষণের শিকার মেয়েটিকে ভবিষ্যতে কে বিয়ে করবে? বাদী ও বিবাদী এই ফয়সালা, ভয়ংকর একজন দানবের সঙ্গে মেয়েটিকে থাকতে বাধ্য করে।
২০১৪ সালে প্রকাশিত ‘ল্যান্ডমার্ক জাজমেন্টস অন ভায়োলেন্স অ্যাগেইনস্ট উইমেন অব বাংলাদেশ, ইন্ডিয়া অ্যান্ড পাকিস্তান’ শীর্ষক বইটিতে বিচারপতি গোলাম রাব্বানী মন্তব্য করেছিলেন, ধর্ষণ এমন একটি অপরাধ, যা শুধু ভুক্তভোগীকে নয়, পুরো সমাজকে আঘাত করে। কাজেই সে রকম একটি অপরাধ করে অপরাধী বিয়ে করে পার পেয়ে যায় কোন যুক্তিতে?
এ সমাজে নারীর অবস্থান এতটাই অসহায় যে ধর্ষণের দায়ে অভিযুক্ত ব্যক্তির স্ত্রীও চান যে তাঁর ধর্ষক স্বামী ধর্ষণের শিকার মেয়েকে বিয়ে করুক এবং জামিনে বেরিয়ে আসুক। এমনকী আসামির বড় বড় ছেলেমেয়েও বিয়ের মাধ্যমে আপস চাইছে। আরও দুর্ভাগ্যজনক হচ্ছে, ধর্ষকের সঙ্গে ভুক্তভোগীর বিয়ে নিয়ে অতীতে প্রকাশিত সংবাদের নিচে যে মন্তব্যগুলো ছাপা হয়েছে, এর মধ্যে অধিকাংশ মানুষই খুশির মনোভাব প্রকাশ করেছে। অনেকেই ভাবছে ধর্ষকের সঙ্গে বিয়ে না হলে ধর্ষণের শিকার নারীর কী গতি
হতো?
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শারমিন আক্তার ধর্ষকের সঙ্গে ভুক্তভোগীর বিয়ে প্রসঙ্গে গণমাধ্যমকে বলেছেন, বিয়েটাকে ‘জামিনের একটা গ্রাউন্ড’ হিসেবে ব্যবহার করে অপরাধীরা। বিচারকেরা যখন দেখেন যে বিয়ে হয়ে গেছে, কাজেই জামিন দিয়ে দেওয়া যায়। কিন্তু পরে এই মামলাগুলো আর এগিয়ে যায় না। কারণ, ওই আসামির প্রতি মামলা চালানোর ইচ্ছাটা বাদীর আর থাকে না, কিন্তু মামলা চালু থাকে।
তিনি মনে করেন, এর মাধ্যমে সমাজে একটা ভুল বার্তা যায়। কারণ, যারা ধর্ষক, তারা মনে করে, ‘আমি ধর্ষণ করলাম এবং যাকে ধর্ষণ করলাম, তাকে বিয়ে করার মাধ্যমে মুক্তি পেয়ে গেলাম।’ সেক্ষেত্রে ধর্ষণের জন্য যে বিচার ও শাস্তি সেটা তাকে আর পেতে হয় না, মামলার কোনো ফলো-আপ থাকে না।
অন্যদিকে প্রায়ই ধর্ষণের পর পারিপার্শ্বিক অবস্থার কারণে ঘটনাটি প্রায় ধামাচাপা পড়ে যায়। ঘটনা গোপন করার জন্য বা অপরাধীরা শক্তিশালী হলে পরিবেশ ও পরিস্থিতির কারণে বেশির ভাগ ভুক্তভোগীকে দীর্ঘ সময় আটকেও রাখা হয়। তাই ধর্ষণের শিকার ভুক্তভোগী সময়মতো মামলা বা অভিযোগ করতে পারেন না।
আবার অনেক ক্ষেত্রে মামলা থানা নিতে চায় না। অনেক ধর্ষণ মামলা বছরের পর বছর আদালতে চলতে থাকে। এরপর যখন মামলা চলতে চলতে একটা পর্যায়ে আসামি বিচারের মুখোমুখি হয়, তখনই শুরু হয় ‘দুই পক্ষের আপসের মাধ্যমে আসামির জামিন করানোর জন্য’ চেষ্টা। তবে এমনও দেখা গেছে, বিয়ে করার পর ধর্ষকের জামিন হয়ে গেলে মেয়েটিকে তিনি তালাক দিয়ে দেন। ব্যক্তি কিংবা পরিবারের দাবির কাছে কেন মাথা নত করবে আইন-আদালত। পরিস্থিতি যাই হোক না কেন, যে পক্ষেরই চাপ থাকুক না কেন, ধর্ষণের মতো একটি গুরুতর অভিযোগ তুলে নেওয়ার বিষয়টি আইনসম্মত হওয়া উচিত নয়। বাংলাদেশের আইনে বলা হয়েছে, ধর্ষণ বা ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় কোনো আপস-মীমাংসার প্রশ্নই আসে না। আদালতের নির্দেশে কারা কর্তৃপক্ষের আয়োজনে কারাগার প্রাঙ্গণে ধর্ষকের সঙ্গে ধর্ষণের শিকার নারীর বিয়ে দেওয়ার এ ধরনের ঘটনা খুবই অপ্রত্যাশিত।
এমনিতেই থামানো যাচ্ছে না ধর্ষণের মতো ঘটনাগুলো। ধর্ষণের ঘটনায় মাত্র ৩ শতাংশ আসামি সাজাপ্রাপ্ত হয়। এমন পরিস্থিতিতে আদালতে বিয়ের আদেশের মাধ্যমে ধর্ষণ মামলার আপস নিষ্পত্তির মতো ঘটনাগুলো নারী ও কন্যাশিশুর বিরুদ্ধে ঘটা অপরাধের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের নির্লিপ্ততাকে তুলে ধরে। এক্ষেত্রে ভিকটিম নারীর মতামতেরও তোয়াক্কা করে না পরিবার ও সমাজ, এমনকি বিচার ব্যবস্থাও।
এমনিতেই আমাদের সমাজে বিভিন্ন কারণে ধর্ষণ অপরাধ প্রমাণ করা কঠিন। ধর্ষণের শিকার মেয়েটির ট্রমা, পরিবারের ভয়, সংকোচ ও লজ্জা, মেডিক্যাল রিপোর্ট পাওয়ার ক্ষেত্রে নানা টালবাহানা, সাক্ষীর ও প্রমাণাদির অভাব, ভিকটিমের পরিবারের দারিদ্র্য, অপরাধীর পক্ষে ভয়ভীতি ছড়ানো ইত্যাদি। এরপর যখন অভিযুক্ত ও দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি বিয়ে করার ছুতোয় জেল থেকে বীরের মতো বেরিয়ে আসে, তখন আর করার কিছু থাকে না। ভিকটিম মেয়েটি ধর্ষকের সাথে থাকতে বাধ্য হয়, এই বিয়ে বেশিদিন টেকে না, সমাজ মেয়েটিকে বাঁকা চোখে দেখে, মামলা ঝুলে যায়, সবকিছু শেষ হয়ে যায়। ‘দুই পক্ষের আপসের মাধ্যমে আসামির জামিন করানোর জন্য এমন ব্যবস্থার বিরুদ্ধে’ আরও কঠোর অবস্থান নেয়ার কথা বারবার বলা হলেও কার্যত রিট হয়েছে এবারই।
আমরা চাই, সমাজ নারীর এই অমর্যাদাকে প্রতিহত করুক। ধর্ষকের সঙ্গে ধর্ষণের শিকার শিশু ও নারীর বিয়ের উদ্যোগ বন্ধ হোক। রিটে জোর দিয়ে বলা হয়েছে, “ধর্ষণের শিকার নারীর সঙ্গে অভিযুক্তের বিয়ে কোনোভাবেই ন্যায়বিচারের বিকল্প হতে পারে না। এমন বিয়ে অপরাধকে বৈধতা দেয় না, বরং তা আইনের প্রতি অবমাননা।”
লেখক : যোগাযোগ-বিশেষজ্ঞ ও কলাম লেখক।
এইচআর/জেআইএম

10 hours ago
7









English (US) ·