সত্যজিৎ রায়ের অন্যতম একটি মাস্টারপিস ‘অরণ্যের দিনরাত্রি’। ১৯৭০ সালে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় রচিত ‘অরণ্যের দিনরাত্রি’ উপন্যাস অবলম্বনে ছবিটি নির্মাণ করেন সত্যজিত। দারুণ খবর হলো, ছবিটি জায়গা করে নিয়েছে কান চলচ্চিত্র উৎসবের ক্লাসিক বিভাগে।
ছয় বছর ধরে চলা এক রিস্টোরেশন প্রজেক্টের পর সিনেমাটি এবার প্রদর্শিত হতে যাচ্ছে বিশ্বমঞ্চে। এ বিভাগের নেতৃত্ব দিয়েছেন হলিউড পরিচালক ওয়েস অ্যান্ডারসন। তাদের হাত ধরেই সত্যজিতের এই সিনেমা দর্শকদের জন্য নতুন করে পর্দায় আসছে।
২০১৯ সালে মার্টিন স্করসেসের ‘দ্য ফিল্ম ফাউন্ডেশন’-এর মাধ্যমে অ্যান্ডারসন ছবিটি সংরক্ষণের প্রস্তাব দেন। পরে ফিল্ম হেরিটেজ ফাউন্ডেশন, জানুস ফিল্মস ও ক্রিটেরিওন কালেকশন মিলে এটি রিস্টোরেশনের দায়িত্ব নেয়।
করোনা লকডাউনের মধ্যেই ফাউন্ডেশনের পরিচালক শিবেন্দ্র সিং দুংগারপুর কলকাতায় গিয়ে ছবির ক্যামেরা ও সাউন্ড নেগেটিভ উদ্ধার করেন। এসব প্রযোজক পূর্ণিমা দত্তের বাড়িতে কয়েক যুগ ধরে সংরক্ষিত ছিল।
মূল নেগেটিভ পাঠানো হয় ইতালির ল্যাব ‘এল’ইমাজিন রিট্রোভাটা’-তে। সেখানে দাগ, ফ্লিকার, মলিনতা দূর করে ছবিটি নতুন করে প্রাণ পায়। শব্দ রিস্টোরেশনেও ছিল জটিলতা। যার কিছু অংশ উদ্ধার করা হয়েছে। ছবিতে সাবটাইটেল করেছেন ইন্দ্রাণী মজুমদার। এই ইন্দ্রাণী জীবিত অবস্থায় সত্যজিৎ রায়ের একমাত্র স্বীকৃত অনুবাদক ছিলেন।

রিস্টোরেশনে সক্রিয় ছিলেন রায়ের ছেলে সন্দিপ রায়ও। তিনি বলেন, ‘ছবিটি যেভাবে সতর্কভাবে পুনরুদ্ধার
করা হয়েছে আমি তাতে খুবই মুগ্ধ। ওয়েস অ্যান্ডারসন ও স্করসেসের ফাউন্ডেশনকে ধন্যবাদ।’
ছবির অভিনেত্রী শর্মিলা ঠাকুর, সিমি গারেওয়ালসহ অভিনেতারাও স্মৃতিচারণ করেছেন ছবিটি নিয়ে।
জানুস ফিল্মস ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে ছবির প্রদর্শনের অনুমতি নিয়েছে। এখন বিশ্বজুড়ে নতুন প্রজন্মের দর্শকরাও দেখতে পাবেন সত্যজিৎ রায়ের এই কালজয়ী সিনেমাটি।
প্রসঙ্গত, ১৯৭০ সালের ১৬ জানুয়ারি ভারতজুড়ে মুক্তি পায় ‘অরণ্যের দিনরাত্রি’ ছবিটি। সত্যজিত রায় এই ছবির জন্য বিভিন্ন চরিত্রে বেছে নিয়েছিলেন সৌমিত্র চ্যাটার্জি, শর্মিলা ঠাকুর, কাবেরি বসু, শুভেন্দু চট্টোপাধ্যায়, রবি ঘোষ, সমিত ভঞ্জ, পাহাড়ী সান্যালদের মতো তারকাদের।
এলআইএ/এমএস

3 months ago
30









English (US) ·