নারায়ণগঞ্জে রাতের আঁধারে স্কুলের মালপত্র বিক্রির অভিযোগ

1 hour ago 4

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে পঞ্চমীঘাট উচ্চ বিদ্যালয়ের পুরাতন মালপত্র রাতের আঁধারে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে বিদ্যালয়টির প্রধানশিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির বিরুদ্ধে।

শনিবার (৮ নভেম্বর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার সাদিপুর ইউনিয়নে মালপত্র বিক্রির সময়ে শিক্ষকসহ দুজনকে হাতেনাতে আটক এলাকাবাসী। এসময় মালামাল উদ্ধার হলেও অভিযুক্তরা কৌশলে পালিয়ে যান।

জানা গেছে, বিদ্যালয়টির স্কুলের সহকারী শিক্ষক আব্দুল বাতেন ও অফিস সহায়ক সুমন দুইটি পিকআপ ভ্যান ভর্তি করে শতাধিক বেঞ্চ, ফ্যান ও রড বিক্রির উদ্দেশে নিয়ে যাচ্ছিলেন। এসময় এলাকাবাসী এই খবর পেয়ে তাদের হাতেনাতে ধরে আটকে দেন। তবে অভিযুক্তরা কৌশলে পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। পরে উদ্ধারকৃত মালপত্র স্থানীয় ইউপি সদস্যের তত্ত্বাবধানে রাখা হয়।

স্থানীয়দের অভিযোগ, পঞ্চমীঘাট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মনিরুজ্জামান ভুঁইয়ার যোগসাজসে প্রায় ১০ লাখ টাকার মালপত্র মাত্র ৩ লাখ মূল্যে রাতের আধারে বিক্রি করা হয় এবং সেই মালামাল স্কুল থেকে বের করার সময় সহকারি শিক্ষক আব্দুল বাতেন ও অফিস সহায়ক সুমনকে আটকে দেওয়া হয়েছে। তবে ওই সময় কৌশলে শিক্ষক আব্দুল বাতেন ও সুমন মালপত্র ফেলেই পালিয়ে যান। পরবর্তীতে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মালপত্রগুলো জব্দ করে।

এ বিষয়ে পঞ্চমীঘাট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী মো. তকির আহম্মেদ বলেন, শনিবার বন্ধের দিন থাকায় রাতের আধারে স্কুলের পুরাতন বেঞ্চ, ফ্যান, রড ট্রাক ভর্তি করে গোপনে বিক্রি করে দেন। মালপত্রগুলো পিকআপভ্যানে ভর্তি করে নেওয়ার সময় শিক্ষকসহ দুইজনকে আটকে দেওয়া হয়। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে ওই মালপত্রের কোনো কাগজ পত্র দেখাতে পারেননি।

স্থানীয় ইউপি সদস্য হাবিবুর রহমান মাসুদ বলেন, স্কুলের বেঞ্চ, ফ্যান কোনো দরপত্র না দিয়েই বিক্রি করা হয়েছে। বৈধভাবে বিক্রি করা হলে রাতে আধারে কেন? সেগুলো এলাকাবাসী আটক করে আমাকে খবর দিয়েছেন। পরে ঘটনাস্থলে গিয়ে জানতে পারি প্রায় ১০ লাখ টাকার মালপত্র চুরি করে বিক্রি করেছেন। প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি কমিশন নিয়ে মাত্র ৩ লাখ টাকায় বিক্রি করেন। আমরা এর সঠিক তদন্ত চাই।

পঞ্চমীঘাট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ম্যানিজিং কমিটি ও শিক্ষক প্রতিনিধিদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রেজুলেশন করে মালপত্র বিক্রি করা হয়েছে। মালামাল বিক্রির টাকা স্কুলের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা হবে। তবে দরপত্র ছাড়াই বিক্রি করা সঠিক হয়নি।

পঞ্চমীঘাট উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মনিরুজ্জামান ভূঁইয়া জানান, নতুন ভবন নির্মাণের পর পুরোনো বেঞ্চ ও ফ্যান বিক্রির জন্য পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। স্থানীয় একটি মহল আমাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করছেন। বিক্রির আগে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে জানানো হয়নি।

সোনারগাঁ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. দেলোয়ার হোসেন জানান, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর আমরা ঘটনাস্থলে গিয়েছি। প্রাথমিকভাবে দেখা যায়, বিক্রির প্রক্রিয়ায় নিয়ম ভঙ্গ হয়েছে। প্রয়োজনীয় নথি পর্যালোচনা করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে।

মো.আকাশ/এনএইচআর/জিকেএস

Read Entire Article