সম্প্রতি মৃত্যু হওয়া মার্কিন গ্র্যান্ডমাস্টার ড্যানিয়েল নারোডস্কি অনলাইনে হওয়া দাবা খেলার মধ্যে প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছেন বলে বহু বার প্রকাশ্যে অভিযোগ করা হয়েছিল। প্রমাণ ছাড়া জনসম্মুখে এমন নিন্দনীয় মন্তব্য করায় সাবেক বিশ্ব দাবা চ্যাম্পিয়ন ভ্লাদিমির ক্রামনিকের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে আন্তর্জাতিক দাবা ফেডারেশন (ফিদে)।
ফিদে প্রেসিডেন্ট আর্কাদি দ্ভোরকোভিচ বুধবার (২২ অক্টোবর) জানিয়েছেন, নারোডস্কিকে নিয়ে ক্রামনিকের প্রকাশ্য মন্তব্যগুলো সংস্থার নৈতিকতা ও শৃঙ্খলা কমিশনে পাঠানো হয়েছে। যদি প্রমাণ পাওয়া যায় যে তিনি জনসম্মুখে নারোডস্কির প্রতি হয়রানি বা মানহানিকর আচরণ করেছেন তবে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নারোডস্কির স্মৃতিতে একটি বিশেষ পুরস্কার চালু করবে ফিদে।
রুশ নাগরিক ভ্লাদিমির ক্রামনিক ২০০০ সালের শুরুর দিকে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ছিলেন। গত বছর অক্টোবর থেকে তিনি অনলাইনে নারোডস্কির বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ তোলেন। তবে এ অভিযোগের পক্ষে ক্রামনিক কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ দিতে পারেননি।
নারোডস্কি মৃত্যুর আগে তার শেষ লাইভস্ট্রিমে বলেছিলেন, ক্রামনিকের এসব অভিযোগ মানসিকভাবে তার বড় ধরনের ক্ষতি করেছে। ক্রামনিকের এমন অভিযোগের পর থেকে আমি ভালো খেললেই মানুষ খারাপ কিছু ধরে নেয়। বিষয়টি আমার মনে একটা স্থায়ী দাগ রেখে গেছে।
রুশ গ্র্যান্ডমাস্টার ক্রামনিকের এমন আচরণকে ভয়াবহ বলে উল্লেখ করেছেন পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ম্যাগনাস কার্লসেন। এদিকে হিকারু নাকামুরা ও নিহাল সারিন অভিযোগ করেছেন, ক্রামনিক ইচ্ছাকৃতভাবে নারোডস্কির সুনাম ধ্বংস করতে চেয়েছিলেন।
এর আগেও ক্রামনিক বহু শীর্ষ দাবাড়ুকে প্রতারণার অভিযোগে অভিযুক্ত করেছিলেন। এর ফলে ২০২৩ সালে চেস.কম তার ব্লগ বন্ধ করে দিয়েছিল।
ক্রামনিকের এমন অভিযোগের শিকার হয়েছিলেন চেক প্রজাতন্ত্রের গ্র্যান্ডমাস্টার ডেভিড নাভারা। তিনি জানান, ক্রামনিকের এমন অভিযোগে তিনি আত্মহত্যা করার চিন্তা করেছিলেন। পরে ক্রামনিক উল্টো নাভারার বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেন।
ড্যানিয়েল নারোডস্কি ২০০৭ সালে অনূর্ধ্ব-১২ বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হন এবং ২০১৩ সালে মাত্র ১৮ বছর বয়সে গ্র্যান্ডমাস্টার খেতাব পান। তিনি স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০১৯ সালে ইতিহাসে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। এই দাবাড়ু বিশ্বের শীর্ষ ২০০ খেলোয়াড়ের মধ্যে ছিলেন এবং দ্রুতগতির ব্লিটজ দাবায় শীর্ষ ২৫-এর মধ্যে স্থান ধরে রেখেছিলেন।
কেএম