নিউইয়র্কে কনস্যুলেটের ঘটনায় ব্যবস্থা নিতে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরে চিঠি

3 hours ago 3

নিউইয়র্কে বাংলাদেশ কনস্যুলেট অফিসে হামলার ঘটনায় ব্যবস্থা নিতে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরে চিঠি দেওয়া হয়েছে। গত রোববার জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বছরপূর্তি উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে নিউইয়র্ক কনস্যুলেট অফিস। এ সময় অফিসে হামলা ও ভাঙচুর করে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।

মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) সকালে দূতাবাসের ফেসবুক পেজে এত পোস্টে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, দুষ্কৃতকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ জানিয়ে কনস্যুলেট জেনারেল এরই মধ্যে স্থানীয় পুলিশ, মেয়র এবং মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের স্থানীয় অফিসে পত্র প্রেরণ করেছে।

মিশন জানিয়েছে, জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান দিবসের প্রথম বার্ষিকী উপলক্ষে গতকাল স্থানীয় সময় রোববার বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল, নিউইয়র্কে একটি মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই অনুষ্ঠানে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়াও বাংলাদেশি শিক্ষার্থীসহ বাংলাদেশ কমিউনিটির দেড় শতাধিক অতিথি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। সার্বিক প্রস্তুতি ও নিরাপত্তার স্বার্থে বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেলের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে অনুষ্ঠানের আগেই নিউইয়র্ক সিটি পুলিশ কনস্যুলেটের আশপাশে পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ সদস্য মোতায়েন করে।

ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেলে আয়োজিত মতবিনিময় সভাটি পণ্ড করার উদ্দেশ্যে এবং অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথিকে সরাসরি আক্রমণ করার হিংস্র মনোভাব নিয়ে বিকেল ৫টা থেকেই যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেলের সামনে অবস্থান নেন। তারা বাংলাদেশ সরকারবিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দেন এবং অশ্লীল-অশ্রাব্য ভাষায় গালাগাল করতে থাকেন। একপর্যায়ে তারা অনুষ্ঠানে আগত আমন্ত্রিত অতিথিদের ধাওয়া করে অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণে বাধা প্রদান করেন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তারা নানাবিধ অপকৌশল অবলম্বন করেন, যার অংশ হিসেবে তারা অতিথিদের উদ্দেশ্যে ডিম নিক্ষেপ এবং অত্যন্ত ন্যক্কারজনকভাবে বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেলের প্রবেশপথের পার্শ্ববর্তী অন্য একটি অফিসের (একই ভবনের) কাচের দরজায় আঘাত করে। এতে ওই দরজায় ফাটল ধরে (ভিডিও সংযুক্ত)।

এতে বলা হয়েছে, এ সময় পুলিশ দুষ্কৃতকারীদের এ ধরনের ধ্বংসাত্মক কাজে বাধা দেয় এবং কয়েকজনকে আটক করে। দুষ্কৃতকারীদের এই ন্যক্কারজনক ধ্বংসাত্মক কার্যক্রমের স্থিরচিত্র ও ভিডিও ফুটেজ প্রমাণ হিসেবে এরই মধ্যে পুলিশের হস্তগত হয়েছে এবং তারা এ ব্যাপারে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে মর্মে আশ্বস্ত করেছে।

পোস্টে বলা হয়েছে, পতিত সরকারের দোসররা প্রধান অতিথিকে হেনস্তা ও জীবননাশের উদ্দেশ্যে আওয়ামী লীগের দলীয় পতাকাসহ কনস্যুলেট জেনারেলের চতুর্দিকে মধ্যরাত অবধি অবস্থান করেন। তবে পুরো সময় নিরাপত্তার স্বার্থে পুলিশের উপস্থিতি লক্ষণীয় ছিল।

উল্লেখ্য, অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের উদ্দেশ্যে প্রধান অতিথি যথাসময়ে কনস্যুলেট জেনারেলে গাড়িযোগে প্রবেশের জন্য নির্ধারিত পথে নির্বিঘ্নে অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছান। প্রাণবন্ত মতবিনিময়, আগত অতিথিবৃন্দের সঙ্গে কুশল বিনিময় এবং রাতের খাবার শেষে প্রধান অতিথি কোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ব্যতিরেকে নির্ধারিত গাড়িতে তার গন্তব্যে পৌঁছান। প্রধান অতিথি প্রস্থান করার পরে পুলিশ অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করে। দুষ্কৃতকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ জানিয়ে কনস্যুলেট জেনারেল এরই মধ্যে স্থানীয় পুলিশ, মেয়র এবং মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের স্থানীয় অফিসে পত্র প্রেরণ করেছে।

এখানে আরও উল্লেখ্য, প্রধান অতিথির অনুষ্ঠানে আগমন কিংবা প্রস্থানের সময় দুষ্কৃতকারীদের সঙ্গে উপদেষ্টা মহোদয়ের কোনো ধরনের সাক্ষাৎ বা দূরতম কোনো সংযোগ কিংবা সংশ্লেষও ঘটেনি। পতিত ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসররা শতচেষ্টা সত্ত্বেও তাদের অসাধু উদ্দেশ্য সাধন করতে পারেনি এবং এহেন কার্যে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে নানাবিধ অপতথ্য এবং প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে। এ ধরনের মিথ্যে তথ্য এবং প্রোপাগান্ডায় বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য সবাইকে অনুরোধ জানানো যাচ্ছে।

Read Entire Article