নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কারের জন্য যৌক্তিক সময় দিতে হবে: বদিউল আলম

2 months ago 35

নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান ও সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, আগে অনেক সংস্কার কমিটি ছিল, কিন্ত তারা কোনো কিছুই সংস্কার কিংবা পরিবর্তন করতে পারেনি। তারা সংস্কার করলে ৫ আগস্ট সৃষ্টি হতো না। এজন্য এবার সংস্কার খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তার জন্য কিছু সময় দিতে হবে।

তিনি বলেন, যেন অতীতের তিক্ত অভিজ্ঞতা ফিরে না আসে। এজন্য যৌক্তিক সময় দিতে হবে। আমাদের সুপারিশ নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে বসবে। এরপর সংস্কারের একটি রোডম্যাপ তৈরি হবে। নির্বাচনের রোডম্যাপটা ঐক্যমতের ভিত্তিতে হবে। তারা কত সময় দেবে। এতে সময়টা খুব জরুরি।

শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) এফডিসিতে ‘সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নির্বাচন, প্রার্থী ও নাগরিকের ভূমিকা’ শীর্ষক ছায়া সংসদে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, আমরা সংস্কারের সুপারিশ আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মাঝে সরকারের কাছে জমা দেবো। এরপর কীভাবে বাস্তবায়ন হবে তার রোডম্যাপ শুরু হবে।

নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কারের প্রধান বলেন, নির্বাচনে অনেক অংশীজন থাকে তার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশীজন হলো নির্বাচন কমিশন, এটা সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। নির্বাচন একদিনের বিষয় না। এটা একটা প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়া নিরপেক্ষ ও সঠিক হতে হবে। ভোটাররা যেন কোনো প্রকার চাপ প্রয়োগ ছাড়া স্বাধীন ভাবে ভোট দিতে পারে। সঠিক ভোটার তালিকা তৈরি থেকে শুরু করে নির্বাচন সম্পন্ন হওয়া পর্যন্ত সব দায়িত্ব কমিশনের।

নির্বাচনের আরও অন্যতম অংশীজন হলো আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও রাজনৈতিক দল। তাদেরকে সৎ থাকতে হবে। তারা নিরপেক্ষ না থাকলে কমিশনের পক্ষেও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব না। একই সঙ্গে গণমাধ্যম ও নাগরিক সমাজের প্রয়োজনীয়তা জরুরি। এসবের সমন্বয়ে নির্বাচনে নিরপেক্ষ পরিবেশ বিরাজ করবে।

তিনি বলেন, যারা গত ৩টা নির্বাচনে কমিশনের দায়িত্ব পালন করেছেন, এদের প্রত্যেককে বিচারের আওতায় আনা উচিত বলে আমি মনে করি।

বর্তমাম নির্বাচন কমিশন নিয়ে তিনি বলেন, বৃক্ষের ফলেই বৃক্ষের পরিচয় হবে। আশা করবো সুষ্ঠ নির্বাচন হবে। তবে আমি মনে করি এ নির্বাচন কমিশনের তেমন কোনো ঝুঁকি নেই। বিগত ৩ বছরের মতো এককভাবে নির্বাচনের কোনো চাপ থাকবে না। আগের নির্বাচনে ফ্যাসিস্টদের যে প্রভাব ছিল এবার সেটি থাকবে না বললেই চলে। তবে কিছু চ্যালেঞ্জ হলো ভোটার হালনাগাদ, বিশেষ করে প্রবাসী রয়েছে দেড় কোটির মতো। এদের ভোট প্রদানের ব্যবস্থা করা।

বদিউল আলম বলেন, আমরা তরুণদের সুপারিশ নেবো। আমাদের ওয়েবসাইট, ফেসবুক, ইমেইল আছে, সেখান থেকে আপনাদের সুপারিশ নেবো। সব মিলিয়ে আমরা সুপারিশ সরকারের কাছে উপস্থাপন করবো।

সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, যত দ্রুত সম্ভব প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে নির্বাচন আয়োজন করা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান দায়িত্ব। যদিও অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধান জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণে বলেছেন, নির্বাচনের ট্রেন যাত্রা শুরু করেছে, এটা আর থামবে না। কিন্তু এই ট্রেন শেষ স্টেশনে কখন পৌঁছাবে তা জনগণ জানতে পারলে ভালো হয়। বর্তমান সরকারের বিবেচনায় নেওয়া উচিত নির্বাচন বিলম্বিত হলে ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসররা দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার শঙ্কা রয়েছে। এজন্য নির্বাচনী ট্রেনের যাত্রা শুরু হওয়ার পাশাপাশি সরকারকে নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা করে যৌক্তিক সময়ের মধ্যে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রক্রিয়া শুরু করা উচিত।

আরএএস/এসএনআর/এমএস

Read Entire Article