নির্বাচনে প্রার্থী হচ্ছেন জহির রায়হান-সুচন্দার ছেলে

9 hours ago 6

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হচ্ছেন কিংবদন্তিতুল্য চলচ্চিত্র নির্মাতা শহীদ জহির রায়হান ও অভিনেত্রী সুচন্দার ছেলে তপু রায়হান। আজ (৯ নভেম্বর) রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেন তিনি। এ সময় উপস্থিত ছিলেন তার মা, জনপ্রিয় অভিনেত্রী কোহিনূর আক্তার সুচন্দা।

ছেলের সিদ্ধান্তে সন্তোষ প্রকাশ করে সুচন্দা বলেন, ‘জয়-পরাজয় থাকবেই। আমার ছেলে যেন মানুষের জন্য, দেশের জন্য, সবার জন্য কাজ করে—এটাই আমার চাওয়া। পরিবারের সবাই খুব খুশি। হয়তো আজ ওর বাবা (জহির রায়হান) বেঁচে থাকলে তিনিও খুব আনন্দিত হতেন। আমার ছেলে বলে বলছি না, তপুর মধ্যে মানুষের প্রতি গভীর ভালোবাসা আছে।’

জহির রায়হান নিখোঁজের পর কী ভয়াবহ সময় পার করতে হয়েছে, সে স্মৃতিও ফিরে আসে সুচন্দার কথায়। তিনি বলেন, ‘এমনও দিন গেছে, সন্তানদের নিয়ে গাছের পাতা খেয়েছি। কারণ, তখন প্রায় সময়ই খাবার জুটত না। তারপরও হাল ছাড়িনি। সন্তানদের মানুষ করেছি। আমার বিশ্বাস ছিল, তারা তাদের বাবার মতোই মানবিক ও দেশপ্রেমিক হবে। রাজনীতি না করলেও রাজনৈতিক আদর্শ লালন করবে। আজ সেই বিশ্বাস সত্যি হয়েছে।’

স্বাধীনতার সময়কার সংগ্রামের কথা টেনে সুচন্দা আরও বলেন, ‘দেশ স্বাধীন করতে যখন মাঠে নেমেছিলাম, তখন পায়ে জুতা ছিল কি না, তা খেয়াল করিনি। আমাদের লক্ষ্য ছিল একটি স্বাধীন ও সমৃদ্ধ দেশ গড়া। তখন সংসদ কী, তা বুঝতাম না।’

স্বামী জহির রায়হানের স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, ‘জহির রায়হান রাজনীতি করতেন না, তবে রাজনীতি লালন করতেন সবসময়। তার লেখনী ও চলচ্চিত্রে দেশ ও মানুষের কথা থাকত। তিনি নিপীড়িত ও বঞ্চিত মানুষের পক্ষে কাজ করতেন।’

সন্তান প্রসঙ্গে সুচন্দা বলেন, ‘আমাদের ছোট ছেলে তপু রায়হান বাবাকে দেখেনি। কিন্তু তার মধ্যে জহির রায়হানের প্রতিচ্ছবি দেখি। সুযোগ পেলেই মানুষের কল্যাণে ছুটে যায়। তাই ঢাকা-১৭ আসনে তার প্রার্থী হওয়ার সিদ্ধান্তে আমি খুশি হয়েছি। হার-জিত থাকবেই, তবে আমি বিশ্বাস করি, মানুষ তার পাশে থাকবে।’

রাজধানীর গুলশান, বনানী, নিকেতন, মহাখালী, বারিধারা, শাহজাদপুর এবং ঢাকা সেনানিবাসের একাংশ নিয়ে গঠিত ঢাকা-১৭ আসন থেকে নির্বাচনে লড়বেন তপু রায়হান।

এ সময় সুচন্দা জানান, তিনি এই এলাকার সমস্যাগুলো ভালোভাবে জানেন। বলেন, ‘গুলশান, বনানী, ক্যান্টনমেন্ট, শাহজাদপুর, ভাসানটেক ও মহাখালী এলাকার উন্নয়ন নিয়ে আমি দীর্ঘদিন কাজ করেছি। বিশেষ করে নিম্ন আয়ের মানুষের সমস্যা চিহ্নিত করে সমাধানের পথ তৈরি করা গেলে তা সারাদেশের জন্য একটি কার্যকর মডেল হতে পারে।’

তপু রায়হান জানান, তিনি কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত নন, স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবেই লড়বেন নির্বাচনে। নিজের ঘোষিত নির্বাচনী ইশতেহারকে তিনি ‘ঐকমত্যের ইশতেহার’ হিসেবে উল্লেখ করেন।

আরও পড়ুন
ছোট পোশাক নিয়ে বিতর্কের মুখে দেশ ছাড়লেন পাকিস্তানি টিকটকার
শাকিবের প্রসঙ্গ আসতেই এড়িয়ে গেলেন বুবলী 

তিনি বলেন, ‘আমি কোনো প্রথাগত রাজনীতি করতে আসিনি, বরং সহযোগিতার রাজনীতি চালু করতে চাই। আমার বাবা জহির রায়হান রাজনৈতিক সচেতন হলেও কোনো দলের সক্রিয় সদস্য ছিলেন না। তার মানবতাবাদী সমাজ প্রতিষ্ঠার স্বপ্নকেই আমি ধারণ করেছি। বিশ্বাস করি, সংসদীয় গণতন্ত্রের মধ্যেই মানবকল্যাণমুখী রাজনীতি সম্ভব।’

এমএমএফ/জিকেএস

Read Entire Article