নির্বাচনের রোডম্যাপ না দেওয়া রাজনৈতিক অনভিজ্ঞতা : মির্জা ফখরুল

2 days ago 13

নির্বাচনের রোডম্যাপ না দেওয়াটা ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের রাজনৈতিক অনভিজ্ঞতা’ হিসেবে দেখছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বোরবার (৩০ মার্চ) বিকেলে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপচারিতায় এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।

ঈদের প্রাক্কালে বিকেলে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বিএনপি মহাসচিব সাংবাদিকদের সঙ্গে অনানুষ্ঠিক মতবিনিময় করেন। এতে অন্তবর্তীকালীন সরকারের কার্যক্রম, সংস্কার-নির্বাচন, রাজনৈতিক পরিস্থিতিসহ বিভিন্ন বিষয়ে সাংবাদিকদের খোলামেলা প্রশ্নের জবাব দেন রাজনীতিতে ব্যাপক আলোচিত এই রাজনৈতিক।

এসময় তিনি বলেন, আমার কাছে যেটা মনে হয় ফ্র্যাংকিং স্পিকিং সুনির্দিষ্টভাবে রোডম্যাপ না দেওয়াটা এটা তাদের (অন্তবর্তীকালীন সরকার) কিছুটা … আই অ্যাম সরি টু সে… এটা অনেকটা রাজনৈতিক অনভিজ্ঞতা থেকে আসছে। কারণ, এই সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ দিলেই কিন্তু রাজনৈতিক সংকট যেগুলো আছে সেগুলো অনেককাংশে কমে যাবে। রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনের দিকে ঝুঁকে যাবে, অন্যান্য যেসব বিষয়গুলো তৈরি হচ্ছে সেগুলো কম তৈরি হবে। এগুলো হচ্ছে বাস্তবতা।

মির্জা ফখরুল বলেন, এতো বেশি কথা হচ্ছে কেন? কারণ আওয়ামী লীগ এখন ভিজিবল না, তাই না। বিএনপি ভিজিবল বড় দল হিসেবে, নেক্সট পরের দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামী আছে তারাও ভিজিবল। অন্যান্য দলগুলো- ছাত্রদের যে নতুন দল সেটা উঠে আসছে- ভালো হয় যদি ভালো। 

উগ্রপন্থার উত্থানের শঙ্কা : 
মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশের মানুষ লিভারেল ডেমোক্রেসির জন্য যুদ্ধ করা জাতি। বাংলাদেশের মানুষ উদার গণতন্ত্রের বিশ্বাস করে, বাংলাদেশের মানুষ ধর্ম মানে, ভীষণ ধর্মভীরু। কিন্তু ধর্মান্ধ নয়… তাকে দিয়ে ধর্মের নামে কিছু করাতে পারবেন না। আজ পর্যন্ত ৫৪ বছর হয়েছে এদেশের মানুষ ধর্মকে নিয়ে কোনো উন্মাদনা এখানে হয়নি।

তিনি বলেন, ছাপ লাগানোর চেষ্টা করেছে আওয়ামী লীগ তার নিজের স্বার্থে যে, জঙ্গিবাদ বাড়ছে, অমুক বাড়ছে, তমুক বাড়ছে। তবে হ্যাঁ ভয় আছে। আজকে যদি লিভারেল পার্টিগুলোকে যদি সুযোগ কম দেওয়া হয়, তাদেরকে যদি আটকে দেওয়া হয় তাহলে কিন্তু জঙ্গিবাদের উত্থানের যথেষ্ট সম্ভাবনা আছে।

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হবে কিনা জনগণ ঠিক করবে :
মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা রাজনীতি করি, আমাদের রাজনীতিতে নিশ্চয়ই কৌশল থাকবে, আমাদের রাজনীতি ও কথার মধ্যে ডিপ্লোমেসি থাকব এটা বাস্তবতা। আমরা সুস্পষ্টভাবে যেটা কথা বলার চেষ্টা করেছি যে, আওয়ামী লীগ রাজনীতি করবে কি করবে না এই সিদ্ধান্তটা নেবে জনগণ। কীভাবে নেবে, না নেবে সেই সিদ্ধান্ত পরের। কিন্তু আমি মনে করি যে, পিপলস হু উইল ডিসাইড যে, আওয়ামী লীগ রাজনীতি করবে কী করবে না। তবে এই ব্যাপারে আমাদের কোনো সন্দেহ নাই, আমাদের কোনো দ্বিমত নাই যে, যারা গণহত্যার সঙ্গে জড়িত তাদেরকে অবিলম্বে আরও দ্রুততার সঙ্গে বিচার হওয়া উচিত এবং শাস্তি হওয়া উচিত।  

জনগণ কীভাবে সিদ্ধান্ত নেবে জানতে চাইলে- ‘অনেক পথ আছে, এটা এখন সুস্পষ্টভাবে বলা যাবে না’ বলে মন্তব্য করেন বিএনপি মহাসচিব।

মির্জা ফখরুল বলেন, কাল আমি একটা অনুষ্ঠানে বলেছি যে, আমার কাছে গত কয়েকদিনের ঘটনা থেকে ফাস্ট টাইম হয়েছে যে, দেয়ার ইজ এ টেন্ডেন্সি। একটা প্রবণতা আছে যে, নির্বাচনকে পিছিয়ে দেওয়ার। এটা কনসাসলি কিছু কিছু মহল নির্বাচনকে পিছিয়ে দিতে চান। এতে তাদের নিজেদের স্বার্থ থাকতে পারে, বিভিন্ন সমস্যা থাকতে পারে সেজন্য তারা নির্বাচনকে কিছুটা পিছিয়ে দিতে চান। সংস্কারের কারণে পিছানোর আমি কোনো যৌক্তিক কারণ খুঁজে পাই না। সংস্কার সংস্কারের মতো চলবে, নির্বাচন নির্বাচনের মতো চলবে। তারপরও তো আমরা বলেছি যে, একটা অর্থবহ নির্বাচনের জন্য, গ্রহনযোগ্য নির্বাচনের জন্য যেটুকু ন্যুনতম সংস্কার করা দরকার বিশেষ করে নির্বাচন ব্যবস্থার, বিচার ব্যবস্থার, আইনশৃঙ্খলা ব্যাপার, এটা দ্রুত করতে হবে।

সেনাবাহিনীকে যারা বিতর্কিত করে তারা দেশের পক্ষে নয় :
মির্জা ফখরুল বলেন, আমি মনে করি যে, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত করা কোনো মতেই উচিত না। এটা দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী আমাদের। এটা শুধু আমাদের কাছে স্বীকৃত না, আন্তর্জাতিকভাবেও স্বীকৃত। আমি জাতিসংঘের মহাসচিব গুতেরাস সঙ্গে মিটিংয়ে নিজে উপস্থিত ছিলাম। তিনি যে উচ্ছসিত প্রশংসা করেছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর, এতে আমি নিজেকে খুব গর্বিত বোধ করেছি।

তিনি আরও বলেন, ৫ আগস্টের সময়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী যে ভূমিকা পালন করেছে তারা প্রমাণ করেছে যে, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী হচ্ছে দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী, জনগনের সঙ্গে সমসময় আছে। সুতরাং আমাদের সেনাবাহিনীকে নিয়ে যারা কথা-বার্তা বলে, তাদেরকে বিতর্কিত করতে চায়, আমি মনে করি না যে- তারা বাংলাদেশের স্বার্থের পক্ষে থাকে।

Read Entire Article