দুর্যোগের সময় মানুষ ও গবাদিপশুর আশ্রয়ের জন্য ভোলায় ‘মুজিব কিল্লা’ নামে নির্মাণ করা হচ্ছে একটি আশ্রয়কেন্দ্র। কিন্তু কাজ শেষ না হতেই ভবনে বড় বড় ফাটলের দেখা দিয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ছে ভবনটি।
ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার বিচ্ছিন্ন ঢালচর ইউনিয়নের চর নাজিম উদ্দিনে আশ্রয়কেন্দ্রটি নির্মাণ করা হচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে, নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করায় এমন অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে।
সরেজমিন জানা গেছে, প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে বিচ্ছিন্ন চরাঞ্চলের মানুষ ও গবাদিপশুর নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার বিচ্ছিন্ন ঢালচর ইউনিয়নের চর নাজিম উদ্দিন বা পূর্ব ঢালচরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে অধীনে প্রায় দুই কোটি টাকা ব্যয়ে একটি মুজিব কিল্লার স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া। ২০২১-২২ অর্থবছরে এটির টেন্ডার প্রক্রিয়া হয়।
ওই সময় মুজিব কিল্লাটির টেন্ডার পান মেসার্স উপকূল কনস্ট্রাকশন নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। তবে ওই প্রতিষ্ঠানের কাজটি কিনে ঠিকাদার হিসেবে কাজটি শুরু করেন ঢালচর ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের দাপটে সাবেক সভাপতি আবুল কালাম।
চর নাজিম উদ্দিনের স্থানীয় বাসিন্দা লোকমান হোসেন ও মো. মোজাহিদ জাগো নিউজকে জানান, দুর্যোগের সময় মানুষ ও গবাদিপশুর নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য তাদের চরে মুজিব কিল্লাটি স্থাপনের কাজ শুরু হলে তারা খুবই খুশি হয়েছিলেন। কিন্তু শুরু থেকেই ঠিকাদার ধীরগতিতে কাজ করছেন। এরইমধ্যে একাধিক জায়গায় ফাটল দেখা দিয়েছে।
চরের বাসিন্দা সেলিম পাটওয়ারী ও মো. ফারুক বলেন, ‘মুজিব কিল্লাটির নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার আগেই ৩-৪টি পয়েন্টে বড় বড় ফাটল দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় যদি এটি হস্তান্তর করা হয়, তাহলে বড় ঝুঁকি থাকবে।’
ঠিকাদার আবুল কালাম কিল্লাটি নির্মাণের সময় নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করেছেন বলে অভিযোগ করেন স্থানীয় বাসিন্দা জসিম উদ্দিন, আক্তার মাঝি ও মো. ইব্রাহিম।
তারা জাগো নিউজকে বলেন, ‘বড় বড় ফাটল দেখা দিয়েছে। রড, ইট না দিয়েই শেষ করা হয়েছে ফ্লোর ঢালাইয়ের কাজ। ১৪ ফুট শর্ট পিলারের মাঝখানে টাই বিম দেওয়ার কথা থাকলেও দেওয়া হয়নি। এমনকী সেপটিক ট্যাংকে ১০ ইঞ্চি গাঁথুনি করার কথা থাকলেও সেখানে নিম্নমানের লোকাল ইট দিয়ে পাঁচ ইঞ্চি গাঁথুনি দেওয়া হয়েছে।’
এ বিষয়ে সাব ঠিকাদার ও ঢালচর ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আবুল কালাম বলেন, ফাটলের বিষয়টি সাধারণ। মাটির কারণে ফাটল ধরেছে। ফাটলের স্থানে বালু ও সিমেন্ট দিয়ে আটকে দ্রুত ভবনটি হস্তান্তর করা হবে।
তবে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে কোনো অনিয়মের অভিযোগ প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন ভোলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. হাতেম আলী।
তিনি আরও জানান, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে অধীনে ভোলায় ৩৭টি মুজিব কিল্লা স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে। এরমধ্যে কাজ শেষ হয়েছে ১৪টির। বর্তমানে চারটির কাজ চলছে।
জুয়েল সাহা বিকাশ/এসআর/জেআইএম