কাশ্মীরের পেহেলগাম হামলার পর শুরু হওয়া ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষে পাকিস্তানের অন্তত ১৫০ সেনা নিহত হয়েছেন বলে খবর প্রকাশ করেছে দেশটির জনপ্রিয় গণমাধ্যম সামা টিভি। তবে রহস্যজনকভাবে মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ওয়েবসাইট থেকে প্রতিবেদনটি সরিয়ে ফেলা হয়। এরই মধ্যে ওই সংবাদ নিয়ে ভারতের গণমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
চলতি বছরের ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর জঙ্গি হামলায় ২৬ জন নিহত হয়। ভারত দাবি করে, হামলার পেছেনে পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তাইয়েবা জড়িত। প্রতিশোধ নিতে ভারত ৭ মে শুরু করে সামরিক অভিযান ‘অপারেশন সিঁদুর’। এ অভিযানে পাকিস্তান ও পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরে থাকা ৯টি স্থানে হামলা চালায় ভারতীয় সেনারা।
এর পাল্টা জবাবে পাকিস্তান শুরু করে ‘অপারেশন বুনিয়ান-উন-মারসুস’। ড্রোন ও যুদ্ধবিমান দিয়ে ভারতীয় একাধিক সামরিক ঘাঁটিতে হামলা চালায় তারা। ইসলামাবাদের দাবি, এতে ভারতের পাঁচ থেকে ৬টি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করা হয়। তবে দিল্লি এসব দাবি নাকচ করেছে।
দুই মাসের বেশি সময় পর সামা টিভি এক প্রতিবেদনে পাকিস্তানি সেনাদের নিহত হওয়ার প্রমাণ হাজির করে। প্রতিবেদনে বলা হয়, পাকিস্তানের প্রেসিডেন্টের পক্ষ থেকে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর কর্মকর্তাদের বিভিন্ন সাহসিকতার পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ‘ইমতিয়াজি সনদ’ ও ‘তমঘা-ই-বাসালাত’ পাওয়া দেড় শতাধিক সৈন্যের নামের পাশে লেখা ছিল ‘শহীদ’ শব্দটি। এতে স্পষ্ট হয়, সংঘর্ষে পাকিস্তান বড় ধরনের ক্ষতির শিকার হয়েছে।
প্রতিবেদনটি প্রকাশের পরপরই তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই ওয়েবসাইট থেকে সংবাদটি মুছে ফেলা হয়। বিশ্লেষকদের মতে, এ ধরনের গোপন তথ্য প্রকাশে পাকিস্তান সরকার ও সেনাবাহিনী ক্ষুব্ধ হয় এবং চাপ প্রয়োগের মুখেই সামা টিভিকে প্রতিবেদন সরাতে বাধ্য করা হয়।
এদিকে রোববার লাহোরে এক সেমিনারে পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহসিন নাকভি দাবি করেন, সাম্প্রতিক সংঘর্ষে ভারতের অন্তত ৬টি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে পাকিস্তান। তার দাবি, এ ঘটনার ভিডিও প্রমাণও তাদের হাতে রয়েছে।
তবে আন্তর্জাতিক মহল ও ভারতীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, পাকিস্তানের ক্ষয়ক্ষতি লুকাতে এবং নিজেদের সাফল্য তুলে ধরতে ইসলামাবাদ একতরফা তথ্য প্রচার করছে।