নীলফামারী জেলার উত্তরা ইপিজেডে এক শ্রমিক নিহত এবং অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। একই সঙ্গে ওই ঘটনায় তদন্তের মাধ্যমে অতিদ্রুত জড়িতদের শনাক্ত করে শাস্তি নিশ্চিত করারও আহ্বান জানিয়েছে তারা।
মঙ্গলবার (০২ সেপ্টেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে কেন্দ্রীয় সভাপতি রিফাত রশিদ ও সাধারণ সম্পাদক হাসান ইনাম এই নিন্দা ও প্রতিক্রিয়া জানান।
বিজ্ঞপ্তিতে তারা বলেন, ‘আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করেছি মঙ্গলবার নীলফামারী জেলার উত্তরা ইপিজেডে কারখানা বন্ধ ও ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে শ্রমিকদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গুলিতে এক শ্রমিক নিহত এবং অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এই ন্যক্কারজনক ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে এবং একই সঙ্গে ওই ঘটনায় তদন্তের মাধ্যমে অতিদ্রুত জড়িতদের শনাক্ত করে শাস্তি নিশ্চিত করারও আহ্বান জানাচ্ছে।’
তারা আরও বলেন, ‘আমরা গণমাধ্যম সূত্রে জানতে পেরেছি উত্তরা ইপিজেডে অবস্থিত এভার গ্রিন কোম্পানিতে শ্রমিক ছাঁটাই ও কারখানা বন্ধসহ বিভিন্ন দাবিতে গত দুদিন ধরেই শ্রমিকরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করে আসছেন। মনে রাখতে হবে, ছাত্র-শ্রমিক-জনতা, প্রত্যেকেরই তাদের দাবি-দাওয়া নিয়ে সভা-সমাবেশ করার পূর্ণ সাংবিধানিক অধিকার রয়েছে, যা তাদের মৌলিক অধিকার। তবে, শ্রমিকদের বিভিন্ন দাবি-দাওয়া আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সুষ্ঠু সমাধান না করে অতীতের ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ শাসনামলের ন্যায় শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বলপ্রয়োগের ঘটনা সম্পূর্ণ মানবাধিকার লঙ্ঘন; জুলাই ছাত্র-শ্রমিক-জনতার অভ্যুত্থান-পরবর্তী নতুন বাংলাদেশে যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন মনে করে, এ ঘটনার দায় হাজারো শহীদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে থাকা অন্তর্বর্তী সরকার এড়িয়ে যেতে পারে না’।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা বলেন, ‘মনে রাখতে হবে, ’২৪-এর জুলাই ছাত্র-শ্রমিক-জনতার রক্তক্ষয়ী অভ্যুত্থানে শ্রমিকরা ছিল অন্যতম সহযোগী। এই জুলাই অভ্যুত্থানই শ্রমিকদের বিভিন্ন দাবি-দাওয়া আদায়ে সাহস ও অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে। কিন্তু উদ্বেগের বিষয়, অভ্যুত্থান-পরবর্তী নতুন বাংলাদেশে নানা সময় শ্রমিকদের বেতন-ভাতা ও অন্য দাবি নিয়ে আমরা বারবার রাস্তায় নামতে দেখেছি। চলমান আন্দোলন তারই ধারাবাহিকতা। অভ্যুত্থানোত্তর নতুন বাংলাদেশে শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার এখনও নিশ্চিত না হওয়া অত্যন্ত উদ্বেগজনক। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি বকেয়া বেতন, ছাঁটাই বন্ধসহ সব দাবি-দাওয়া দ্রুত বাস্তবায়নে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়ার পাশাপাশি, এই ঘটনায় নিহত শ্রমিকের পরিবারের জন্য ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা এবং আহত শ্রমিকদের যথাযথ চিকিৎসা নিশ্চিত করার আহ্বান জানাচ্ছে।’