নেত্রকোনার মদনে ‘প্রতিশ্রুতি’ রক্ষার নামে বিয়ে করে বাসরঘরের বন্ধুকে পাঠালেন বর। এ ঘটনায় আপত্তি জানিয়ে বাবার বাড়িতে অবস্থান করছেন নববধূ। পরে এ নিয়ে সালিশ বৈঠকও হয়েছে। এমন ঘটনা ঘটেছে উপজেলার নায়েকপুর ইউনিয়নের নোয়াগাঁও গ্রামে।
নববধূ ও বরের পরিবার সূত্রে জানা যায়, নোয়াগাঁও গ্রামের মৃত আবু ঢানের ছেলে কেনতু মিয়ার সঙ্গে পারিবারিকভাবে ২৫ সেপ্টেম্বর পাশের ইউনিয়নের এক মেয়ের বিয়ে হয়। কেনতু মিয়া নববধূ বাড়িতে এনে বন্ধুকে দেওয়া ‘প্রতিশ্রুতি’ রাখতে গিয়ে নিজে বাসর না করে বন্ধু শরিফকে পাঠান। এতে বাধা হয়ে দাঁড়ান তার নববধূ। বিষয়টি প্রথমে পারিবারিকভাবে গড়ালেও বর্তমানে এ নিয়ে এলাকায় কৌতূহলের সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমানে ওই নববধূ লোকলজ্জায় তার বাবার বাড়িতে অবস্থান করছেন।
এলাকাবাসী ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত কোরবানির ঈদে পারিবারিকভাবে নায়েকপুর ইউনিয়নে বিয়ে করেন শরিফ। দুই বন্ধুর দেওয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কেনতু মিয়াকে নববধূর সঙ্গে বাসর করতে দেন শরিফ। তবে কেনতু মিয়ার স্ত্রী বাসর করতে বাধা দেওয়ায় শরিফ আর বাসর করতে পারেননি। শরিফ বাসর করতে না পারায় দুই বন্ধুর মধ্যে দেখা দিয়েছে বিপত্তি।
এমন সংবাদের পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) নোয়াগাঁও কেনতু মিয়ার গ্রামের বাড়ি ও শরিফ মিয়ার গ্রামের বাড়িতে গেলে তাদের বৃদ্ধ দুই মাকে পাওয়া যায়।
শরিফ মিয়ার মা মানেদা আক্তার বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। তবে তারা দুজনেই ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিল। তারা বিয়ের আগে একসঙ্গে সময় কাটাতো। আমার ছেলে বিয়ে করার পর কেনতু মিয়াকে বাড়িতে আসতে নিষেধ করেছি।’
এ বিষয়ে কেনতু মিয়া মোবাইলফোনে জানান, বিষয়টি মীমাংসা হয়েছে। তবে দুই বন্ধুর এমন প্রতিশ্রুতির বিষয়ে জানতে চাইলে সঙ্গে সঙ্গে সংযোগ কেটে দেন।
সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্য সেলিম মিয়া বলেন, ‘ঘটনাটি সত্য। এ বিষয়ে গ্রাম্য বৈঠক হয়েছিল কিন্তু এখনো কোনো সুরাহা হয়নি।’
প্রতিবেশী চাচা আব্দুল গণি বলেন, ‘বাবা কিতা কইতাম। এমন সমাজবিরোধী ঘটনা জীবনেও শুনি নাই। বউটি এখন চলে গেছে। জানি না আর আসবে কি-না। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক।’
তবে কেনতু মিয়ার বড় ভাইয়ের স্ত্রী জাফরিন আক্তার বলেন, ‘শরিফ মিয়ার বউ যদি বাসর রাতে বাধা দিতো, তাহলে এমন ঘটনা ঘটতো না। এখন তিন পরিবারকে সমাজের মানুষ ধিক্কার দিচ্ছে। আমরা খুবই লজ্জিত। মানুষের কাছে মুখ দেখাতে পারি না।’
এ বিষয়ে মদন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামসুল আলম শাহ বলেন, এমন ঘটনা আমার জানা নেই। তবে নববধূর পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ পেলে তদন্তসাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এইচ এম কামাল/এসআর/এএসএম