নেপালে ২ দিনেই ২০ হাজার কোটি রুপির ক্ষয়ক্ষতি

2 hours ago 6

নেপালে চলমান জেন জি বিক্ষোভে ধ্বংসযজ্ঞের পরিমাণ ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। সরকারি কর্মকর্তাদের হিসাব অনুযায়ী, দুই দিনের সহিংসতায় সরকারি অবকাঠামোর ক্ষতির পরিমাণ ২০০ বিলিয়ন (২০ হাজার কোটি) রুপিরও বেশি।

গুরুত্বপূর্ণ ভবনের পাশাপাশি অমূল্য ঐতিহাসিক নথি ও দলিলপত্র পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। নগর উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সিংহ দরবার, পার্লামেন্ট ভবন ও সুপ্রিম কোর্টের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় অগ্নিকাণ্ডে ভয়াবহ ক্ষতি হয়েছে। প্রতিটি স্থাপনা নির্মাণে ব্যয় হয়েছিল কোটি কোটি রুপি।

মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, এসব ভবন কেবল সংস্কার বা রেট্রোফিটিং করে চালানো সম্ভব নয়। এগুলো পুনর্নির্মাণ করতে ২০০ বিলিয়ন রুপিরও বেশি খরচ হবে। এই হিসাব কেবল ভবনের, অফিস সেটআপ ও ব্যবস্থাপনার জন্য প্রয়োজনীয় অতিরিক্ত অর্থ এতে ধরা হয়নি।

ধ্বংসযজ্ঞ শুধু কাঠমান্ডুতেই সীমাবদ্ধ নয়। বিভিন্ন প্রদেশেও প্রাদেশিক পরিষদের ভবন, মুখ্যমন্ত্রীর কার্যালয়, কারাগার, থানা, ভূমি রাজস্ব দপ্তর ও ডজনখানেক পৌরসভা কার্যালয় পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে এক প্রকৌশলীর মন্তব্য, ‘কবে, কীভাবে আর কোন সম্পদ দিয়ে এসব পুনর্নির্মাণ করা হবে—তা ভেবে দম বন্ধ হয়ে আসে।’

সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে রাজধানীতে। তবে পোখারা, ইটাহারি, জনকপুর, ধানগড়ি ও বিরাটনগরের সরকারি অফিসগুলোতেও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে।

অভিযোগউঠেছে, মঙ্গলবারের (৯ সেপ্টেম্বর) বিক্ষোভে অনুপ্রবেশকারী অরাজক গোষ্ঠী কেবল রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান নয়, ব্যক্তিগত ও সামাজিক সম্পত্তিও টার্গেট করে। রাজনৈতিক নেতাদের বাড়িঘর, ব্যবসায়িক কমপ্লেক্স, পর্যটন অবকাঠামো, গাড়ির শোরুম, গণমাধ্যম কার্যালয়সহ বহু স্থাপনা ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের শিকার হয়েছে।

সোমবার পুলিশের গুলিতে ১৯ জন নিহত হওয়ার পর থেকেই বিক্ষোভ সহিংস হয়ে ওঠে। মঙ্গলবার সকাল থেকে বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে দুষ্কৃতকারীরা সরকারি ও সামাজিক স্থাপনায় অগ্নিসংযোগ চালায়। এ পর্যন্ত মোট নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩৪ জনে দাঁড়িয়েছে, আহত হয়েছেন কয়েক হাজার মানুষ।

এ অবস্থায় নেপালের রাষ্ট্রীয় কার্যক্রম কার্যত ভেঙে পড়েছে। সরকারের তিনটি অঙ্গই অচল অবস্থায় রয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট এখন তাঁবুতে বসে কার্যক্রম চালানোর চেষ্টা করছে। সিংহ দরবারে অধিকাংশ দপ্তর পুড়ে গেছে, আর নতুন বনেশ্বরের পার্লামেন্ট ভবন সম্পূর্ণ ধ্বংস হওয়ায় সংসদ অধিবেশন কোথায় বসবে, তা নিয়েও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।

এমনকি অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের আলোচনা চললেও মন্ত্রিসভার বৈঠক করার মতো অক্ষত কোনো স্থান নেই বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

নগর উন্নয়ন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০০ বিলিয়ন রুপির এই হিসাব প্রাথমিক, চূড়ান্ত পুনর্গঠন ব্যয় এর চেয়ে অনেক বেশি হতে পারে।

সূত্র: খবর হাব
কেএএ/

Read Entire Article