লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে খাবারের সঙ্গে চেতনানাশক (নেশাজাতীয় দ্রব্য) খাইয়ে শিশু, নারী ও পুরুষসহ এক বাড়ির তিন পরিবারের ১২ জনকে অচেতন করেছে দুর্বৃত্তরা।
মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) রাতে উপজেলার চরফলকন ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের শাহজাহান মৃধার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী সদস্যরা হলেন- ওই বাড়ির মো. শাহজাহান মৃধা (৭২), নুর ভানু (৬০), আকলিমা বেগম (২০), পলি আক্তার (১৬), পিংকি বেগম (২৫), মো. নিশান (২৮),পান্না আক্তার (২৭), আরমান হোসেন (১০), ইমরান হোসেন (৪), নুসরাত (৪) ও মরিয়ম (৪)।
স্থানীয়রা জানান, প্রতিবেশী এক বাড়িতে বিয়ের অনুষ্ঠান দেখতে গিয়েছিল নারীরা। এর কোনো এক ফাঁকে দুর্বৃত্তরা রান্না করা খাবারের সঙ্গে চেতনানাশক মিশিয়ে রাখে। পরে ওই খাবার খেয়ে বাড়ির তিন পরিবারের ১২ সদস্য অচেতন হয়ে পড়েন। এ সময় পরিবারের অপর সদস্যরা রাতে বাড়ি ফিরে একাধিকবার ডাকাডাকি করলেও কোনো শব্দ না পেয়ে দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে সবাইকে অচেতন অবস্থায় দেখতে পান। পরে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান তারা। তবে ঘরের কোনো জিনিসপত্র খোয়া যায়নি।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন পলি আক্তার বলেন, প্রতিদিনের মতো রান্না শেষ করে ঘরের দরজা বন্ধ করে পরিবারের সবাই মিলে প্রতিবেশী এক বাড়িতে বিয়ের অনুষ্ঠানে যাই। ফিরে এসে রান্না করা হাঁসের মাংস দিয়ে রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ি। এ সময় দুই শিশু বমি করলেও বিষয়টি অনুমান করতে পারিনি। পরে জ্ঞান ফিরে দেখি হাসপাতালে।
স্থানীয় আবুয়াল হোসেন কমিউনিটি ক্লিনিকের (সিএইচসিপি) হেলথকেয়ার প্রোভাইডার মো. কামরুল ইসলাম বলেন, বিয়ের বাড়িতে অনুষ্ঠান দেখতে যাওয়ার কোনো এক ফাঁকে দুর্বৃত্তরা রান্না করা খাবারের সঙ্গে চেতনানাশক মিশিয়ে রাখে। পরে ওই খাবার খেয়ে বাড়ির তিনটি পরিবারের ১২ সদস্য অচেতন হয়ে পড়েন।
কমলনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক সোহেল রানা বলেন, ধারণা করা হচ্ছে অসুস্থদের খাবারের সঙ্গে নেশা জাতীয় দ্রব্য খাওয়ানো হয়েছে। অচেতন অবস্থায় নিয়ে আসা শিশুসহ ৯ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তিনজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
কমলনগর থানার ওসি তহিদুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে হাসপাতালে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। ঘটনার বিষয়ে তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।