ন্যাটোর হুমকির পর সামরিক পোশাকে যুদ্ধের ময়দানে পুতিন!

6 hours ago 3

ন্যাটোর সঙ্গে সম্পর্ক চরম উত্তেজনার মধ্যে রাশিয়া-বেলারুশের যৌথ সামরিক মহড়া ‘জাপাদ-২০২৫’-এ হাজির হলেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) তিনি সামরিক পোশাক পরে মহড়াস্থলে উপস্থিত হন। রাশিয়ার নিঝনি নভগোরোদ অঞ্চলের মুলিনো প্রশিক্ষণ মাঠে এদিন মহড়ার শেষ দিনের অনুশীলন চলছিল।

মহড়াটি শুরু হয় ১২ সেপ্টেম্বর থেকে। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এতে অংশ নেয় প্রায় এক লাখ সেনা। ব্যবহৃত হয়েছে ১০ হাজারের বেশি অস্ত্র ও ২৪৭টি নৌযান। মহড়ার স্থান শুধু মুলিনোতেই সীমাবদ্ধ ছিল না—রাশিয়া ও বেলারুশ মিলিয়ে ৪১টি প্রশিক্ষণক্ষেত্রে একযোগে এটি অনুষ্ঠিত হয়।

রাশিয়ার ছোড়া ড্রোন প্রথমবারের মতো ন্যাটোভুক্ত একটি দেশ কর্তৃক ভূপাতিত এবং আরেকটি ন্যাটো দেশে ঢুকে পড়ার ঘটনায় উত্তেজনা তুঙ্গে ওঠে। তার পরপরই ঘনিষ্ঠ মিত্র বেলারুশকে সঙ্গে নিয়ে এই মহড়ার আয়োজন করে রাশিয়া। তাই মহড়াটিকে ঘিরে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে।

পুতিন মহড়ায় অংশ নিয়ে বলেন, ইউক্রেন যুদ্ধ থেকে পাওয়া অভিজ্ঞতাই এই অনুশীলনের ভিত্তি। তার দাবি, মহড়ার মূল লক্ষ্য হলো রাশিয়া-বেলারুশ যৌথভাবে তাদের রাষ্ট্রকে যেকোনো আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষা সক্ষমতায় আরও শক্তিশালী করে তোলা।

কিন্তু ন্যাটোর প্রতিবেশী দেশগুলো—বিশেষ করে পোল্যান্ড, লিথুয়ানিয়া ও লাটভিয়া—এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। পোল্যান্ড সব সীমান্ত ক্রসিংই বন্ধ করে দিয়েছে। তাদের আশঙ্কা, এটি নিছক প্রতিরক্ষামূলক মহড়া নয়, বরং পূর্ব ইউরোপে চাপ সৃষ্টি করার কৌশল।

মুলিনো প্রশিক্ষণ মাঠে পুতিন ঘুরে দেখেন নানা আধুনিক সামরিক প্রযুক্তি। প্রদর্শিত সরঞ্জামের মধ্যে ছিল মোটরসাইকেল, কোয়াড বাইক, উন্নত রাডার ব্যবস্থা ও ড্রোন প্রতিরোধী অস্ত্র। রুশ গণমাধ্যম জানিয়েছে, এ মহড়ায় প্রদর্শিত ৪০০-র বেশি সরঞ্জামের অনেকগুলো ইতোমধ্যেই ইউক্রেন যুদ্ধে ব্যবহার হচ্ছে।

প্রতিরক্ষা মন্ত্রী আন্দ্রেই বেলুসভ সরাসরি প্রেসিডেন্টকে মহড়ার অগ্রগতি জানিয়ে রিপোর্ট দেন। সেনাদের উদ্দেশে শুভকামনা জানাতে গিয়ে পুতিন বলেন, চূড়ান্ত পর্যায়ের জন্য সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিতে হবে এবং তাদের ওপর তার পূর্ণ আস্থা রয়েছে।

এদিকে, বেলারুশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মহড়ায় যুক্তরাষ্ট্র, তুরস্ক ও হাঙ্গেরির সামরিক পর্যবেক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন। মিনস্কের বারিসাউ অঞ্চলে আয়োজিত মহড়ার একাংশ সরাসরি পর্যবেক্ষণ করেছেন তারা।

উল্লেখ্য, প্রতি চার বছর অন্তর রাশিয়া-বেলারুশ এই ‘জাপাদ’ মহড়ার আয়োজন করে থাকে। যদিও রাশিয়ার ভাষ্য অনুযায়ী এটি নিছক প্রতিরক্ষামূলক অনুশীলন, কিন্তু ন্যাটো দেশগুলো একে দেখে শক্তি প্রদর্শনের এক ধরনের বার্তা হিসেবে।
 

Read Entire Article