পারিবারিক কলহের জেরে পাবনার চাটমোহরে শাপলা খাতুন (৩০) নামে অন্তঃসত্ত্বা এক গৃহবধূকে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে শাশুড়ি ও সৎছেলেকে আটক করা হয়েছে।
শুক্রবার (২৯ আগস্ট) সকাল ১১টার দিকে চাটমোহর উপজেলার আটলঙ্কা বউ বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত শাপলা খাতুন ওই গ্রামের সৌদি প্রবাসী মনজিল হোসেনের স্ত্রী। তিনি নয়মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন।
এ ঘটনায় আটকরা হলেন- নিহতের শাশুড়ি মনোয়ারা খাতুন (৬৫) ও সৎ ছেলে শিপন হোসেন (২০)।
মুলগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন জানান, প্রায় তিন বছর আগে কুযাবাসী গ্রামের সাইদুল ইসলামের মেয়ে শাপলাকে বিয়ে করেন মনজিল। তার আগে আরও তিনজন স্ত্রী ছিল। মনজিল সর্বশেষ ১০ মাস আগে বাড়ি এসেছিল। স্বামী মনজিল সৌদি প্রবাসী হলেও স্ত্রী শাপলাকে ঠিকমতো ভরণপোষণ দিতেন না। বিয়ের পর তাকে মেনে নিতে পারেননি প্রথম স্ত্রীর ছেলে শিপন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে পারিবারিক কলহ দেখা দেয়৷ তিন মাস আগে শাপলাকে বাড়ি থেকে বের করে দেয় সৎ ছেলে শিপন ও তার দাদী মনোয়ারা খাতুন। কয়েকদিন আগে স্থানীয়রা মিলে শাপলাকে তার স্বামীর বাড়িতে তুলে দেন। তখনই তাকে মেরে ফেলার হুমকি দেন সৎ ছেলে শিপন। সবশেষ শুক্রবার সকালে তার মরদেহ বাড়িতে দেখতে পায় এলাকাবাসী। এ সময় সৎছেলে শিপন ও তার দাদি মনোয়ারা খাতুন বাড়িতে উপস্থিত ছিলেন। নিহত শাপলার গলায় আঘাতের চিহ্ন ছিল।
স্থানীয়দের অভিযোগ, তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করার পর বিদ্যুতায়িত হয়ে মারা গেছে বলে প্রচার চালায় তারা। একপর্যায়ে সৎ ছেলে ও তার দাদি পালানোর সময় স্থানীয়রা তাদের আটক করে পুলিশে খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনারস্থল থেকে নিহতের মরদেহ উদ্ধার ও তাদের দুজনকে আটক করে।
নিহতের স্বজন নাজমা খাতুন বলেন, মেয়েটা ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিল। কয়েকদিন আগে ডাক্তার দেখাইছে, আলট্রসনোগ্রাম করছে৷ ডাক্তার বলছে আর ৮-১০ দিন পর ডেলিভারি হবে। কিন্তু তার আগেই মেয়েটাকে ওরা এভাবে শেষ করে দিলো৷ আমরা ওদের কঠিন বিচার চাই।
এ বিষয়ে চাটমোহর থানার ওসি মঞ্জুরুল আলম বলেন, নিহতের মরদেহ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য পাবনা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। আটক দুজনকে থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে। মামলার পর তাদের গ্রেফতার দেখিয়ে শনিবার সকালে আদালতে সোপর্দ করা হবে। পারিবারিক কলহের জেরে এ ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
আলমগীর হোসাইন নাবিল/এমএন/এমএস