পঞ্চগড়ে শীতজনিত রোগে শিশুর মৃত্যু

2 weeks ago 5

উত্তর হিমালয় থেকে বয়ে আসা হিমশীতল ঠান্ডা বাতাসে পঞ্চগড়ে বেড়েছে শীতের তীব্রতা। সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে শীতজনিত রোগে আক্রান্তের সংখ্যা। পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে শীতজনিত রোগে ভর্তি হয়েছে ২২০ জন।

রোববার (৫ জানুয়ারি) ভোরে শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি অবস্থায় মোস্তাকিম নামে এক ৯ মাসের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। শিশুটি স্বর্দি, জ্বর, কাশি ও ডায়েরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল।

নিহত শিশু মোস্তাকিম পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার ঝলই শালশিরি ইউনিয়নের রংপুরিয়াবস্তির আব্দুল লতিফের ছেলে।

স্থানীয়রা জানান, শিশুটির মা বাবলি আক্তার কিছুটা বুদ্ধি প্রতিবন্ধী। তার স্বামী অন্যত্র বিয়ে করলে বাবলির জায়গা হয় বাবার বাড়ির এলাকা পঞ্চগড় সদর উপজেলার মাগুরা প্রধানপাড়া স্কুলের মাঠে। সেখানে একটি ঝুপড়ি ঘর তুলে সন্তান নিয়ে খেয়ে না খেয়ে দিন পার করতেন তিনি। প্রচণ্ড শীতে গত শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) তার ছেলে সর্দি, জ্বর, কাশি ও ডায়েরিয়ায় আক্রান্ত হলে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। এদিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোববার ভোরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিশুটি মারা যায়।

জানা যায়, পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ১০০ শয্যার এই সদর হাসপাতালটিতে রোগী ভর্তি রয়েছেন ২২০  জন। এর মধ্যে পুরুষ ৬১ জন, নারী ৯২ জন এবং নবজাতক ও শিশু রয়েছে প্রায় শতাধিক ভর্তি থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি থাকা ৭৭ জনের মধ্যে বেশিরভাগই ঠান্ডাজনিত জ্বর, সর্দি-কাশি, ডায়রিয়া এবং নিউমেনিয়ায় আক্রান্ত। আর নবজাতক পরিচর্যা কেন্দ্রটিতে (স্ক্যানু) ভর্তি ১১টি নবজাতক প্রায় একই ধরণের সমস্যা নিয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে। হাসপাতালটিতে শয্যা সংকুলান না হওয়ায় শিশু, মহিলা ও পুরুষ রোগীদের মেঝেতে বিছানা দেওয়ার পাশাপাশি বারান্দায় রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া হাসপাতালের বহিঃবিভাগে ২০০ থেকে ৩০০ জন শিশু রোগী চিকিৎসা সেবা নিয়ে চলে চলে যায়।

বোদা উপজেলার ময়দানদিঘী এলাকার রশিদুল বলেন, তার মেয়ের (শিশু) ডায়রিয়া হয়েছে রোববার হাসপাতালে নিয়ে এসেছি। চিকিৎসা চলছে এখনো। হাসপাতালে বেট না থাকায় মেঝেতে মেয়েকে নিয়ে থাকতে হচ্ছে।

পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে শিশু বিশেষজ্ঞ ডাক্তার আবু সায়েম বলেন, প্রতিদিনই আউটডোর ইনডোরে চিকিৎসা নিচ্ছে দুই থেকে ৩ শতাধিক শিশু। এখানে ডাক্তার কম থাকলেও যথাযথ চিকিৎসা সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি। যদিও আমাদের কষ্ট হচ্ছে এবং অভিভাবকদের পরামর্শ দিচ্ছি শিশুদের যত্ন নেওয়ার ব্যাপারে। যে সমস্ত শিশু বেশি অসুস্থ তাদেরকে হাসপাতালে ভর্তি করার পরামর্শ দিচ্ছি।

পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডাক্তার মনোয়ার হোসেন কালবেলাকে বলেন, বর্তমানে পঞ্চগড়ে প্রচণ্ড শীত। শীতের কারণে বিশেষ করে শিশুদের ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, জ্বর, সর্দি, কাশি হচ্ছে। রোববার হাসপাতালে একজন শিশু ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। শীতে শিশুদের বেশি পরিচর্যা করতে হবে। ঠান্ডা লাগানো যাবে না, বাসি খাবার খাওয়ানো যাবে না, সবসময়ের জন্য গরম খাবার খেতে হবে। ঠান্ডা এবং বাসি জাতীয় কোনো খাবারেই শিশুদেরকে দেওয়া যাবে না।

Read Entire Article